মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে ঐতিহাসিক পারফরম্যান্স করল বিজেপি। গত নির্বাচনে দেবেন্দ্র ফড়নবীশের দল জিতেছিল ১০৫ আসন। এবার ১৪৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ১২৫ টিরও বেশি আসনে তারা জিতবে বলে মনে করা হচ্ছে। একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা ৮১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ৫৫ আসনে জিতেছে। মহাযুতির দুই দলই একসঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেরিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যে প্রশ্নটি প্রধান সেটা হল কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী?
মহাযুতির এই বিরাট জয়ে বিজেপির ভূমিকা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মহাযুতিকে এই উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার পিছনে একনাথ শিন্ডের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি এমন কিছু জনমুখী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যার সুফল ভোটবাক্সে পড়েছে। ডেপুটি সিএম থাকাকালীন দেবেন্দ্র ফড়নবীস মহারাষ্ট্রের শিন্ডের সারথী হিসেবে কাজ করেছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী একজনই হবেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী পদে কার দাবি বেশি তা নির্ধারণ হতে চলেছে আগের মহাযুতি সরকার গঠনের প্রেক্ষাপট এবং এই নির্বাচনের ফলাফল দেখে।
প্রসঙ্গত, শিবসেনার একনাথ শিন্ডের বিদ্রোহের পরই মহারাষ্ট্রে মহাযুতি সরকার গঠিত হয়েছিল। কিন্তু, সেই সময়ে বিজেপির ১০৫ আসন ছিল। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, শিন্ডের নেতৃত্বাধীন নতুন দলকে সমর্থন করবে। শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রীর পদ পেয়েছিলেন। ফড়নবীসকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। কোনওরকম বিবাদ ছাড়াই সেই জোট সরকার টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয় তারা। তবে এবার পরিস্থিতি আলাদা। বিজেপি তাদের আসন সংখ্যা ১২৫-এ তুলে আনতে পেয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার একনাথ শিন্ডের উচিত বিজেপি-কে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেওয়া। কারণ তাদের আসন সংখ্যা বেশি।
যদি দেবেন্দ্র ফড়নবীস মুখ্যমন্ত্রী হন তাহলে কে হবে একনাথ শিন্ডের ভবিষ্যৎ?
দেবেন্দ্র ফড়নবিশের মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার ফলে একনাথ শিন্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফড়নবীসের উচিত হবে না আর উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়া। এই পরিস্থিতিতে আশা করা হচ্ছে, মোদী সরকারের মন্ত্রিসভায় শিন্ডেকে বড় মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
বর্তমানে, একনাথ শিন্ডে জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে মহাযুতিতে কোনও ফর্মুলা তৈরি হয়নি। শোনা যাচ্ছে, যে দল বেশি সিট পাবে সেই দল থেকেই মুখ্যমন্ত্রী হবে এমন কোনও নিয়মও স্থির করা হয়নি। মহাযুতির নেতারা বসে নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম। অন্যদিকে, এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের স্ত্রী সুনেত্রা তাঁর স্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি জানিয়েছেন। এখন দেখার কার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে।