ভারতে ব্যবসা জমছে না। তাই ঝাঁপ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গাড়ি নির্মাতা সংস্থা ফোর্ড। গুজরাটের সানন্দে সংস্থার কারখানাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে কর্ম হারিয়েছিলেন বহু শ্রমিক। সেই কারখানাই এবার টাটার হাতে যেতে চলেছে। ফোর্ডের কারখানা অধিগ্রহণের জন্য টাটাদের অনুমোদন দিয়েছে গুজরাটের মন্ত্রিসভা। সূত্রের খবর, দুই কোম্পানির মধ্যে হস্তান্তরের চুক্তিতে কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে সরকার।
২০০৮ সালে জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার কিনে ফোর্ডকে সহযোগিতা করেছিল টাটা মোটরস। আবারও ফোর্ড মোটর কোম্পানিকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে রতন টাটার সংস্থা। ফোর্ডের গুজরাট কারখানা চলতি বছরের এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে। গত বছর ভারতীয় বাজার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের পর সংস্থা সানন্দের কারখানা বিক্রি করার চেষ্টা করছিল। এরপর টাটা গোষ্ঠী এগিয়ে আসে। গুজরাট সরকারও টাটা মোটরসের এই কারখানা কেনার সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছে। টাটা মোটরসের ইতিমধ্যেই সানন্দে একটি গাড়ির কারখানা রয়েছে। টাটা ন্যানো তৈরি করতে পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুর থেকে এখানে কারখানা খুলেছিল তারা।
গুজরাট মন্ত্রিসভার অনুমতি দেওয়ার পর কারখানা নিয়ে দুই সংস্থার মধ্যে বহু বিষয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে রয়েছে টাকার অঙ্ক, শ্রমিকদের স্থানান্তরের মতো বিষয়গুলিও। দুই সংস্থা সোমবার মউ স্বাক্ষর করতে পারে বলে খবর।
সেই ১৯৯৯ সাল থেকে টাটা মোটরস এবং ফোর্ড মোটরের সম্পর্ক। রতন টাটা ভারতে তৈরি প্রথম সম্পূর্ণ দেশীয় গাড়ি টাটা ইন্ডিকা লঞ্চ করেছিলেন। কিন্তু গাড়িটি বাজারে সফল হতে পারেনি। এর পর ১৯৯৯ সালে গাড়ির ব্যবসা বিক্রি করার জন্য ফোর্ডের কাছে গিয়েছিলেন টাটা। সেই সময় ফোর্ড প্রধান বিল ফোর্ড রতন টাটাকে বলেছিলেন,'গাড়ি সম্পর্কে কিছুই জানেন না, তাহলে কেন হাত দিলেন?' ফোর্ডের অনুগ্রহ নিতে চাননি রতন টাটা। গাড়ির ব্যবসাও বিক্রি করেননি। এরপর ২০০৮ সালে বিশ্ব আরেকটি অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হয়। সেই সময়ে ফোর্ড দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিল। রতন টাটা ফোর্ডের কাছ থেকে জাগুয়ার ল্যান্ড রোভারের মতো বিলাসবহুল গাড়ি কিনেছিলেন। সফলও হয়েছেন। বিল ফোর্ড এই চুক্তির জন্য রতন টাটাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। মধুর বদলা নিলেন রতন টাটা।
আরও পড়ুন- মাত্র দু'মাসেই ১ লক্ষের বিনিয়োগ হল ৫ লক্ষ, এই পেনি স্টকে মালামাল