Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: SIR আতঙ্কের জেরে নিউটাউনের ফাঁকা বস্তি দাবিতে ছড়াল দিল্লির অসম্পর্কিত ছবি

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, যদিও এটা ঠিক যে সম্প্রতি SIR প্রক্রিয়া শুরু হতেই নিউটাউনের বেশ কিছু বস্তিতে তালা মেরে বাসিন্দাদের রাতারাতি উধাও হয়ে যাওয়ার খবর সামনে এসেছে। তবে ভাইরাল নিউজ কার্ডে ব্যবহৃত ছবি দুটির একটিও নিউটাউন কিংবা পশ্চিমবঙ্গের নয়। এমনকি এর সঙ্গে SIR-এর কোনও সম্পর্ক নেই।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 11 Nov 2025,
  • अपडेटेड 10:34 AM IST

ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন শুরু হতেই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে কলকাতার গুলশান কলোনি ও নিউটাউন। অভিযোগ, SIR আতঙ্কে এই দুই এলাকার বহু সংখ্যক বাড়ি এবং অস্থায়ী ঝুপড়িতে তালাবন্ধ করে চলে গিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। আর এই আবহে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে দুটি ছবির সমন্বয়ে তৈরি একটি নিউজ কার্ড। 

কার্ডে ব্যবহৃত ছবি দুটির প্রথমটিতে একটি টিনের ছাউনিযুক্ত বেডরুমে ফাঁকা একটি খাট পড়ে থাকতে এবং অপর ছবিতে কোনও বস্তি জাতীয় এলাকার একটি ফাঁকা গলি দেখা যাচ্ছে। নিউজ কার্ডটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, SIR আতঙ্কের জেরে কলকাতার নিউটাউনে রাতারাতি বাড়ি তালা বন্ধ করে পালিয়েছে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল নিউজ কার্ডটি শেয়ার করে সেটির উপরে লিখেছেন, “SIR আতঙ্কে ফাঁকা নিউটাউন! রাতারাতি উধাও বাংলাদেশি পরিবার, তালাবন্ধ বস্তি জুড়ে চাঞ্চল্য।” (সব বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল নিউজ কার্ডে ব্যবহৃত ছবি দুটির একটিও নিউটাউন কিংবা পশ্চিমবঙ্গের নয়। এমনকি এর সঙ্গে SIR-এর কোনও সম্পর্ক নেই। বরং এগুলি নতুন দিল্লির আরকে পুরামের সেক্টর-৭ এলকায় তৈরি অবৈধ বস্তির ছবি। তবে SIR প্রক্রিয়া শুরু হতে নিউটাউনের বেশকিছু বস্তিতে তালা মেরে বাসিন্দাদের রাতারাতি উধাও হয়ে যাওয়ার খবর সামনে এসেছে।

আরও পড়ুন

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল ছবি সত্যতা জানতে গুগল লেন্সের মাধ্যমে এগুলি সার্চ করলে ২০২৫ সালের ১৯ জুলাই দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে এই দুটি ছবি-সহ একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। যা থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, ভাইরাল নিউজ কার্ডে ব্যবহৃত ছবি দুটি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এই প্রতিবেদন থেকেই নেওয়া হয়েছে এবং এগুলির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের SIR-র প্রক্রিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ নির্বাচন কমিশন গত ২৭ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যান্য ১২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে SIR ঘোষণা করেছিল। অন্যদিকে ভাইরাল ছবি দুটি তার বেশ কয়েক মাস আগেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে ব্যবহৃত হয়েছে। 

Advertisement

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভাইরাল ছবি দুটি নতুন দিল্লির আরকে পুরামের সেক্টর ৭-এর টাইপ ১ কোয়ার্টারের আশেপাশে অবৈধভাবে তৈরি করা বস্তিতে তোলা হয়েছিল। মূলত, আরকে পুরাম এলাকার ওই কোয়ার্টারগুলির অবস্থা জরাজীর্ণ হওয়ার কারণে সেগুলি যে কোনও মূহুর্তে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এই কারণে গত ১১ জুলাই কেন্দ্রীয় গণপূর্ত বিভাগের (সিপিডব্লিউডি) তরফে কোয়ার্টার সংলগ্ন অবৈধ বস্তিগুলি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নির্দেশের পরেও বস্তির বাসিন্দারা বস্তি না খালি করে সেখানেই বসবাস করতে থাকেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিনিধিরা গত ১৯ জুলাই ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তির বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অবস্থা জানার চেষ্টা করেন।  

এখানে উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর জি ২৪ ঘন্টার ফেসবুক পেজ থেকেও ভাইরাল ছবি দুটিকে নিউটাউনের দৃশ্য দাবি করে একটি নিউজ কার্ড শেয়ার করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে ‘খবরটির ছবি ও তথ্য সম্পূর্ণ ভুল ছিল’, একথা স্বীকার করে চ্যানেলের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ক্ষমা চাওয়া হয় এবং কার্ডটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। সেখানে লেখা হয়, “'নিউটাউনে SIR আতঙ্কে ঘরছাড়া হচ্ছেন অনেকেই...' এই সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশিত হয়েছিল আজ Zee 24 Ghanta Digital-এ। এই সংক্রান্ত খবরটির ছবি ও তথ্য সম্পূর্ণ ভুল ছিল। এর জন্য আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে Zee 24 Ghanta digital এই ধরনের কোনও খবর প্রকাশে আরও অনেক বেশি সতর্ক থাকবে।”
 

এর থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, SIR আতঙ্কের জেরে ফাঁকা নিউটাউনের বস্তি দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে দিল্লির ভিন্ন ঘটনার পুরনো ছবি।

Fact Check

Claim

নিউজ কার্ডটিতে ব্যবহৃত ছবি দুটিতে দেখা যাচ্ছে, SIR আতঙ্কের জেরে কলকাতার নিউটাউনে রাতারাতি বাড়িতে তালা বন্ধ করে পালিয়েছে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা। 

Conclusion

ভাইরাল নিউজ কার্ডে ব্যবহৃত ছবি দুটির একটিও নিউটাউন কিংবা পশ্চিমবঙ্গের নয়। এমনকি এর সঙ্গে SIR-এর কোনও সম্পর্ক নেই। বরং এগুলি নতুন দিল্লির আরকে পুরামের সেক্টর-৭ এলকায় তৈরি অবৈধ বস্তির ছবি।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement