সন্দেশখালিতে RSS-এর ঘাঁটি আছে। সেখানে যারা মাস্ক পরে ঘুরছে তারা বিজেপি। চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী সন্দেশখালি নিয়ে কথা বলেন। শেখ শাহাজাহানের প্রসঙ্গও তোলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'যারা অনেকদিন ধরে নানা কথা বলে যাচ্ছে মিডিয়ার প্রশ্রয়ে, তাদের বলি, আসল না জেনে আপনারা বলছেন। আমি ইতিমধ্যেই স্টেট কমিশন, প্রশাসন পাঠিয়েছি, যারা মাস্ক পরেছে, বিজেপির কর্মী, ধরাও পড়েছে। তারা বিজেপির কর্মী। একটা এলাকাকে অশান্ত করা হচ্ছে। শেখ শাহাজাহানকে টার্গেট করে ওখানে ঢুকল ইডি। তারপর ওখানে আদিবাসীদের ভাইবোনদের মধ্যে ঝগড়া লাগিয়ে দিল। কারও কোনও ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকতেই পারে। তাহলে আমাদের মহিলা টিম আছে সেখানে। তারা যা রিপোর্ট দেবে তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগে তো জানতে হবে ব্যাপারটা কী। ওখানে আরএসএস এর বাসা আছে। ওখানে ৭-৮ বছর আগেও ঝামেলা হয়েছে। কতগুলো দাঙ্গা স্পটের মধ্যে ওটা একটা স্পট। সরস্বতী পুজোয় আমরা স্ট্রগলি হ্যান্ডেল করেছি।'
সন্দেশখালি নিয়ে ক্রমশ চড়ছে উত্তেজনার পারদ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দাবি করেছিল বিজেপি। এবার তার উত্তর দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্দেশখালি ইস্যুতে তিনি সাফ জানালেন, রাজ্য সরকার সেখানে তদন্তকারী দল পাঠিয়েছে। তারা ফিরে এসে যে রিপোর্ট দেবে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, আগে আসল ব্যাপারটা জানতে হবে। তারপরই কিছু কথা বলা দরকার।
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। তবে সেখানে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় ইডিজ-কে। তারপর থেকে শেখ শাহাজাহানকে একাধিকবার তলব করলেও তিনি হাজিরা দেননি। এরইমধ্যে সন্দেশখালির একাধিক মহিলা তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন। তাঁদের অভিযোগ, শেখ শাহাজাহান সহ একাধিক তৃণমূল নেতা তাঁদের উপর যৌন অত্যাচার চালিয়ে আসছে দিনের পর দিন। আদিবাসীদের জমিও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
সন্দেশখালি নিয়ে রাজ্যজুড়ে পথে নেমেছে বিজেপিও। তাদের তরফে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। বুধবার সেখানে যাওযার চেষ্টা করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তবে টাকিতেই তাঁকে আটকে দেয় পুলিশ। সেই সময় ধস্তাধস্তিতে সুকান্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। তিনি এখন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এরইমধ্যে সন্দেশখালিতে শুভেন্দু অধিকারী। সন্দেশখালি যাওয়ার পথে হুঙ্কার ছাড়েন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। বাসে করে সন্দেশখালি যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দু বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব তাড়াতাড়ি এক্স সিএম হয়ে যাবেন। অপেক্ষা করুন। দেখে যান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানা শেষ হতে চলেছে।' এদিন বাসন্তী হাইওয়েতে শুভেন্দু অধিকারীদের বাস আটকানো হয়। পরে অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ আটকালে শুভেন্দু জানান, তাঁদের চারজন আছেন মাত্র। ১৪৪ ধারা জারি আছে। তাই চারজন যাচ্ছেন। পুলিশ তাঁদের আটকাতে পারেন না। শুভেন্দুর সঙ্গে বাকি যে তিনজন বিধায়ক আছেন তাঁরা হলেন তাপসী মণ্ডল, চন্দনা বাউড়ি এবং শঙ্কর ঘোষ। তবে বিধানসভা থেকে বাসে ওঠার সময় শুভেন্দু সাফ জানান, যদি পুলিশ তাঁদের আটকে দেয় তাহলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন।