গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড মানেই তাঁরা ফোনে গল্প করবেন। নতুন-নতুন প্রেম হলে ফোনেই সারাদিন-সারারাত কেটে যায় প্রেমিক-প্রেমিকার। কিন্তু বহুদিন হয়ে যাওয়ার পরেও যদি কেউ সারাদিন বারবার ফোন করতে থাকে? যদি প্রেমিক বা প্রেমিকা সবসময়েই আপনার সামনে বসে থাকেন? সেক্ষেত্রে সেটা মানসিক রোগেরও লক্ষণ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি চিনের এক তরুণীর এমন একটি ঘটনাই প্রকাশ্যে এসেছে। দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের সিচুয়ান প্রদেশের বাসিন্দা জিয়াওয়ু। বয়স ১৮। এই জিয়াওয়ু তাঁর প্রেমিককে দিনে ১০০ বারের বেশি ফোন করতেন। উয়েনিউ নিউজের রিপোর্ট অনুসারে, এর ফলে তাঁর দৈনন্দিন কাজকর্মও ব্যাহত হত। কিন্তু নিজেকে কিছুতেই কনট্রোল করতে পারতেন না তিনি।
চেংডুর দ্য ফোর্থ পিপলস হাসপাতালের ডাক্তার ডু না বলেন, 'কলেজের মধ্যেও জিয়াওয়ুর উদ্বেগজনক আচরণ শুরু করেছিলেন। সবসময়েই বয়ফ্রেন্ডকে ফোন করতে থাকতেন।' ফোনে না পেয়ে বারান্দা থেকে লাফ দেওয়ার হুমকিও দেওয়া শুরু করেন। এরপরেই তাঁর প্রেমিক পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
মনোবিদদের মতে তাঁর বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার হয়েছে। তাঁর সমস্যার নাম 'লাভ ব্রেন'।
লাভ ব্রেন
'লাভ ব্রেন' হলে মস্তিষ্কের অতিরিক্ত ভালবাসার আকাঙ্ক্ষা বা প্রেমিক/প্রেমিকার প্রতি অস্বাভাবিক মোহ তৈরি হয়।
লক্ষণ:
কারণ: 'লাভ ব্রেন'-এর সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও অজানা। তবে, জিনগত প্রবণতা, মস্তিষ্কের গঠন, ব্যক্তিত্ব এবং পরিবেশগত কারণে হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। সাধারণত বড় হওয়ার সময়ে মা-বাবার থেকে মানসিক সাপোর্ট বা ভালবাসার অভাব, অবহেলা, পরিবারের থেকে দূরত্ব তৈরি হওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এমন ক্ষেত্রে কোনও প্রেমিক/প্রেমিকা পেলেই সেই ব্যক্তি তাঁর ভালবাসার প্রতি অস্বাভাবিকভাবে নির্ভর করতে শুরু করেন।
চিকিৎসা: 'লাভ ব্রেন'-এর জন্য কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবে, সাধারণত থেরাপি, ওষুধ এবং লাইফস্টাইলের পরিবর্তনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে আক্রান্তকে সুস্থ করা হয়।
মনে রাখবেন: 'লাভ ব্রেন' কোনও স্বীকৃত মানসিক স্বাস্থ্য রোগ নয়। তবে, এটি উল্লেখযোগ্য মানসিক সমস্যা এবং জীবনযাত্রার অবনতির কারণ হতে পারে।