খুন তো অনেকই হয়। কিন্তু মালদার রশিলাদহ এলাকায় যেমন দৃশ্য দেখা গেল, তা দেখে শিউরে উঠেছেন এলাকাবাসী।ঘটনার বীভৎসতায় অনেকেরই গা গুলিয়ে গিয়েছে বলে খবর। বিছানায় পড়ে রয়েছে রক্তমাখা দেহ৷ গলায় জড়ানো মশারির ফাঁস৷ মুখের উপরে চাপা বালিশ। নৃশংস হত্যাকাণ্ড মালদায়। জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনায় আতঙ্ক ও অবাক বাসিন্দারা। এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তেমনই আশপাশের বাসিন্দারা কেন বিষয়টি টের পেলেন না, তাও ভাবাচ্ছে অনেককে। সম্ভবত ঘুমের মধ্যে ঘটনা ঘটানোতে চিৎকার করার সময় পাননি ওই ব্যক্তি। পাশাপাশি মুখে বালিশ চাপা দেওয়া থাকায় আওয়াজ বাইরে আসেনি। যেভাবে ঘটনাটি ঘটেছে, ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম নেপাল মণ্ডল৷ পেশায় তিনি ছিলেন টোটো চালক৷ খেলনাও বিক্রি করতেন বলে জানাা গিয়েছে। রশিলাদহ এলাকায় নিজের বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি৷ নেপালের মদ্যপানের অভ্যাস ছিল। তা স্ত্রীর পছন্দ না হওয়ায়, তিন মেয়েকে নিয়ে আলাদা থাকতেন তাঁর স্ত্রী৷
মৃতের স্ত্রীর দাবি, গত বুধবার তাঁকে তাঁর স্বামী এ-ও জানিয়েছিলেন যে তাঁকে খুন করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। কিন্তু, কারা হুমকি দিচ্ছে এনিয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাননি তিনি। নেপালবাবু ভেবেছিলেন, হঠাৎ করে কেউ কেনই বা তাঁকে খুন করবে? এই ভেবে নেপাল বিষয়টায় বিশেষ আমল দেননি বলে দাবি তাঁর স্ত্রীর৷
বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়িতে এসে স্বামীকে ডাকাডাকিও করেন ওই মহিলা৷ কিন্তু সেই সময় কেউ সাড়াশব্দ দেয়নি। প্রায়ই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকায় নেশা করে ঘুমিয়ে আছে বলে মনে করে তিনি ফিরে চলে যান। এরপর শুক্রবার সকালে খুনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ঘরের দরজাও খোলা অবস্থায় ছিল। মৃতদেহের গলায় জড়ানো ছিল মশারির ফাঁস। মুখের উপরে চাপা দেওয়া ছিল বালিশ। বালিশে এবং মুখে রক্তের চিহ্ন মিলেছে।
সপ্তাহখানেক আগে নেপালের ব্যক্তির বাড়িতে একটি চুরির ঘটনা ঘটে। সোনার গয়না, নগদ বেশ কয়েক হাজার টাকা, টিভি সহ মূল্যবান সামগ্রী চুরি যায়। চুরির ঘটনায় এলাকারই কিছু দুষ্কৃতীর নাম উঠে আসে। চুরি নিয়ে থানায় অভিযোগ জানান ওই টোটোচালক। এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় সালিশি বৈঠকও হয়। পাশাপাশি দু’দিন আগেই টোটো চালানো নিয়ে এলাকায় একটি গোলমালের ঘটনাও ঘটেছিল নেপালবাবুর সঙ্গে। কেউ বা কারা তাঁর টোটো আটকে রাখে বলেও অভিযোগ। এই খুনের ঘটনার পিছনে বাড়িতে চুরি বা টোটো আটকে রাখার ঘটনা কোনও ভাবে যুক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।