বুধবার, ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র দিন স্ত্রীর ছিন্ন মুন্ডু হাতে ঝুলিয়ে গ্রাম ঘুরে আতঙ্ক সৃষ্টি করল এক ব্যক্তি। ঘটনায় আতঙ্কে-ঘৃণায় দিশাহারা হলেন পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানার চিশতিপুর গ্রামের মানুষ। ২০২১ সালে আলিপুর চিড়িয়াখানায় সিংহের খাঁচায় ঢুকেছিল ওই ব্যাক্তি। যাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সকাল ১১টার দিকে গ্রামে এক হাতে মাথা এবং অন্য হাতে একটি চপার নিয়ে নাচতে দেখা যায় বছর পয়ত্রিশের গৌতমকে। গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়।
পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে ফুলরানী গুছাইতের (২৭) কাটা মাথাসহ প্রাণহীন লাশ উদ্ধারে ছুটে যায়। পূর্ব মেদিনীপুরের এসপি সৌম্যদ্বীপ ভট্টাচার্য 'টাইমস অফ ইন্ডিয়া'কে বলেন, "প্রধান সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মৃতদেহ ও কাটা মাথাটি পোস্টমর্টেমের জন্য উদ্ধার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।"
প্রত্যক্ষদর্শী ও বাসিন্দা রাখাল গুচ্ছাইত বলেন, "সকাল ১১টার দিকে গৌতমকে এক হাতে কাটা মাথা ও অন্য হাতে অস্ত্র নিয়ে নাচতে ও চিৎকার করতে দেখা যায়। এমন দৃশ্য দেখে সবাই হতবাক হয়ে যায়। সে প্রধান সড়কের দিকে ছুটে যাওয়ার সময়, লোকজনকে কাছে আসতে বারণ করছিল। ভয়ে এলাকার লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বুধবার অভিযুক্তের কোনও অনুশোচনার চিহ্ন দেখা যায়নি। তিন বছর আগে, ২০২১ সালের ১৯ মার্চ গৌতম আলিপুর চিড়িয়াখানায় সিংহের খাঁচায় ঢুকে গিয়েছিল। প্রবেশ করেছিলেন। একটি সিংহ তাকে আহত করলেও উদ্ধার করা হয় তাকে। নিরাপত্তা রক্ষীদের তৎপরতায় সিংহের হামলায় পায়ে চোট পেলেও পরে সুস্থ হয়েই বাড়ি ফিরেছিল সে। কাণ্ডটি করেছে তাদের গ্রামের গৌতম, জানতে পেরে শিহরিত হয়েছিলেন চিস্তিপুর গ্রামের মানুষ। সেই গৌতমই ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’-র সকালে স্ত্রীকে কাটারি দিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। স্ত্রীর কাটা মুন্ডু হাতে নিয়ে গ্রামের রাস্তাতেও ঘুরে বেড়ায় সে।
স্থানীয়রা জানান, গৌতম আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ছিল না। একটি ছোট কুঁড়েঘরে সে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে থাকত। গৌতমের বাবা-মা আলাদা থাকতেন। গৌতম একজন আলুর চিপস এবং স্ন্যাকস বিক্রেতা। বুধবার বিক্রির জন্য প্রস্তুত চিপসের পরিমাণ নিয়ে গৌতম ও তার স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে যা হিংসাত্মক লড়াইয়ে পরিণত হয় এবং গৌতম তার স্ত্রীকে একটি চপার দিয়ে আক্রমণ করে এবং মাথা কেটে ফেলে।