scorecardresearch
 

'বেশ্যা শব্দটির মানে কী?' পরীমনি ঝড়ের মাঝেই এবার বিস্ফোরক তসলিমা

ঢাকাই চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী পরীমনিকে নিয়ে এখন সরগরম গোটা বাংলাদেশ। বাড়িতে মাদক পাওয়া যাওয়ায় বুধবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার চারদিনের হেফাজতের পরীমনিকে পেয়েছ ব়্যাব। পরীমনির স্বভাব-চরিত্র নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। আর এর মাঝেই গর্জে উঠলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। নিজের সোশ্যাল সাইটে একের পর এক বিস্ফোরক পোস্ট করতে দেখা গেল লেখিকাকে। পুরুষশাসিত সমাজের বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ হানলেন নির্বাসিত বাংলাদেশী লেখিকা।

Advertisement
পরীমনির পাশে দাঁড়িয়ে পোস্ট বিতর্কিত লেখিকার পরীমনির পাশে দাঁড়িয়ে পোস্ট বিতর্কিত লেখিকার
হাইলাইটস
  • পীরমনিকে নিয়ে উত্তাল বাংলাদেশ
  • এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুললেন তসলিমা
  • পরীমনির পাশে দাঁড়িয়ে পোস্ট বিতর্কিত লেখিকার


ঢাকাই চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী পরীমনিকে নিয়ে এখন সরগরম গোটা বাংলাদেশ। বাড়িতে মাদক পাওয়া যাওয়ায় বুধবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার চারদিনের হেফাজতের পরীমনিকে পেয়েছ ব়্যাব। পরীমনির স্বভাব-চরিত্র নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। আর এর মাঝেই গর্জে উঠলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। নিজের সোশ্যাল সাইটে একের পর এক বিস্ফোরক পোস্ট করতে দেখা গেল লেখিকাকে। পুরুষশাসিত সমাজের বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ হানলেন নির্বাসিত বাংলাদেশী লেখিকা।

তসলিমা বরাবরই নারীববাদি। তার প্রতিটি লেখায় থাকে পুরুষশাসিত সমাজের বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ। কিছুদিন আগে টলিউড অভিনেত্রী নুসরত জাহানের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছিল তসলিমাকে। এবার পরীমনির নাম না করলেও তাঁর সমর্থনে এগিয়ে এলেন লেখিকা। ট্যুইটারের দেওয়ালে তাঁর কটাক্ষ,'বাড়িতে মদ থাকার জন্য বাংলাদেশে মেয়েদের গ্রেফতার করা হচ্ছে'। বাংলাদেশের বিতর্কিক অভিনেত্রীর নাম না করলেও কোন প্রসঙ্গে এই ট্যুইট তা বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না। 

 

ফেসবুকেও পরীমনির সমর্থনে একের পর এক পোস্ট করেছেন তসলিমা নাসরিন।  যেখানে তিনি লেখেন, “বাংলাদেশের সুশীল সমাজ প্রায়ই এক একটি মেয়ের বিরুদ্ধে উন্মাদ হয়ে ওঠে। মেয়েগুলো সাধারণত ধনী এবং দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের শিকার। চতুর ব্যবসায়ীরা এই মেয়েদের ব্যবহার করে তাদের অবৈধ ব্যবসার কাজে, এই মেয়েদের হোটেলের বারে গিয়ে মদ খেতে শেখায়, ক্লাবে গিয়ে নাচতে শেখায়। এই মেয়েদের তারা তাদের হাতের পুতুল বানায়। এদের এক্সপ্লয়েট করাটা তাদের জন্য সহজ। কারণ মেয়েগুলো নিতান্তই নিরীহ। হয়তো গরিব পরিবারের মেয়ে, শিক্ষাগত যোগ্যতা খুব একটা নেই, হয়তো হন্যে হয়ে চাকরি খুঁজছে, ডিভোর্সি, পায়ের তলায় মাটি চাইছে। শিকারী পুরুষগুলোর পাতা ফাঁদে পড়ে যায় এরা, অথবা পড়তে এদের বাধ্য করা হয়। সুশীল সমাজ ধনী পুরুষদের বড় সমীহ করে চলে। বদনাম করার জন্য বেছে নেয় ওই নিরীহ মেয়েদের।”

Advertisement

 

আরেকটি পোস্টে তসলিমা লিখেছেন, 'বাংলাদেশের সংজ্ঞা। পুরুষেরা লোভ করলে? --অ্যামবিশাস। মেয়েরা লোভ করলে?--বেশ্যা। পুরুষেরা মদ খেলে? --স্মার্ট। মেয়েরা মদ খেলে? --বেশ্যা। পুরুষেরা নাচলে?–কালচার্ড। মেয়েরা নাচলে?– বেশ্যা। পুরুষেরা ক্লাবে গেলে? — রিচ। মেয়েরা ক্লাবে গেলে?– বেশ্যা।'

 

বেশ্যা' শব্দের আক্ষরিক অর্থ ব্যাখ্যা করেছেন বিতর্কিত লেখিকা। তাঁর কথায়, 'দরিদ্র নিপীড়িত মেয়ে, পুরুষ দ্বারা প্রতারিত হয়ে সমাজ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে, নানা জাতের নানা বয়সের নানা মেজাজের অচেনা অজানা পুরুষদের কাছে দেহ বিক্রি করে দু'পয়সা রোজগার করতে যারা বাধ্য হয়, তাদেরই বেশ্যা বলা হয়। কোনও মেয়ে বেশ্যা হয়না, পুরুষেরা তাদের বেশ্যা বানায়। তাই সভ্য মানুষেরা এই মেয়েদের 'প্রস্টিটিউট' বলে না, বলে প্রস্টিটিউটেড উইমেন।'

দিনের শেষে  তসমিলা নাসরিন সরাসরি পরীমনির ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন ফেবসুকের দেওয়ালে।  লেখেন- ‘র‍্যাবের ব্রিফিং দেখলাম পরীমণিকে নিয়ে। আমি শুধু শুনতে চাইছিলাম কত ভয়ংকর অপরাধ করেছে পরীমণি। অপরাধের মধ্যে যা বলা হয়েছে, তা হলো, ১ পিরোজপুর থেকে ঢাকায় এসে স্মৃতিমণি ওরফে পরীমণি সিনেমায় রাতারাতি চান্স পেয়ে গেছে। ২ তার বাড়িতে বিদেশি মদের বোতল পাওয়া গেছে। ৩ তার বাড়িতে একখানা মিনি বার আছে। ৪ পরীমণি মদ্যপান করে, এখন সে মদে আসক্ত। ৫ নজরুল ইসলাম নামের এক প্রযোজক, যে তাকে সাহায্য করেছিল সিনেমায় নামতে, মাঝে মধ্যে পরীমণির বাড়িতে আসে, মদ্যপান করে। ৬ ডিজে পার্টি হতো পরীমণির বাড়িতে। ৭ আইস সহ মাদকদ্রব্য পাওয়া গেছে ( এগুলোর চেহারা অবশ্য দেখানো হয়নি)। ৮ মদ খাওয়ার বা সংগ্রহ করার লাইসেন্স আছে পরীমণির, তবে তার মেয়াদ পার হয়ে গেছে, এখনও রিনিউ করেনি সে। তারপর আরো কিছু খবর দেখলাম, পরীমণি পর্নো ছবির সঙ্গে যুক্ত ছিল। না এটিরও প্রমাণ কিছু দেখানো হয়নি’। 

 

চিরাচরিত সামাজিক রীতির বিরুদ্ধে বরাবরই সরব হতে দেখা গিয়েছে তসলিমা নাসরিনকে। ধর্মীয় রীতির বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সরব হয়েছেন তিনি। যার কারণে নিজের দেশেই মৌলবাদীদের রোষানলের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। ত্যাগ করতে হয়েছে মাতৃভূমি। তবুও অবস্থানে অনড় থেকেছেন  দৃঢ়চেতা লেখিকা। তসলিমার প্রতিটি বইতেই থাকে নারীবাদের কথা। পরীমনিকে নিয়ে  ইতিমধ্যেই  তাসলিমার পোষ্ট ঘিরে শুরু হয়ে গেছে বিতর্ক। 

 

Advertisement