মণিপুরে হিংসা কবলিত এলাকায় রাহুলকে গান্ধীকে ঢুকতে দিল না পুলিশ। ইম্ফল বিমানবন্দরে নেমে তিনি হিংসা পীড়িতদের সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশে রওনা দেন। পথেই রাহুলের কনভয়কে বাধা দেয় পুলিশ। তারা জানিয়েছে,অশান্তির আবহে কনভয় থামিয়ে দেওয়া হয়েছে বিষ্ণুপুর জেলায়। রাহুল ইম্ফল থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার যেতে পেরেছেন।
বিষ্ণুপুরের এসপি জানিয়েছেন, রাহুল-সহ কাউকেই এগোতে দেওয়া যাবে না। তাঁদের নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার। অগ্নিসংযোগ হয়েছে। গত রাতেও পরিস্থিতি খারাপ ছিল। আজ থেকে দু'দিনের মণিপুর সফরে গিয়েছেন রাহুল। পুলিশ আধিকারিকরা রাহুলকে সড়কপথে না যাওয়ার পরামর্শ দেন। তাঁকে হেলিকপ্টার ব্যবহার করার কথা বলা হয়। পুলিশের আশঙ্কা,রাহুলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লি থেকে উড়ানে মণিপুরের উদ্দেশে রওনা হন রাহুল। ২৯ এবং ৩০ জুন মণিপুরেই থাকবেন। সেখানে তাঁর ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করার কথা। ক্ষতিগ্রস্তদের অবস্থা সরেজমিনে দেখতে চান। এছাড়া মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল ও চুরাচাঁদপুরে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা রাহুলের। বিকেলে তুইবংয়ের গ্রিনউড অ্যাকাডেমি এবং চুরাচাঁদপুরের সরকারি কলেজে পরিদর্শনও রয়েছে তাঁর কর্মসূচিতে। সেখান থেকে তাঁর যাওয়ার কথা কনজেংবামের কমিউনিটি হল এবং মইরাং কলেজে যান।
প্রসঙ্গত, গত ৫৮ দিন ধরে হিংসতার আগুনে পুড়ছে উত্তর-পূর্ব রাজ্য মণিপুর। এখানে হিংসায় ১২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুরে গিয়ে ত্রাণ শিবিরে থাকা ক্ষতিগ্রস্তদের কথা শুনেছিলেন। এক সপ্তাহ আগে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিল্লিতে মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে ১৮টি দলের সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকে এসপি এবং আরজেডি-র প্রতিনিধিরা মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের পদত্যাগ দাবি করেন। সেই সঙ্গে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার দাবিও ওঠে।
দিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠকের পরের দিন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের সঙ্গে দেখা করে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। তার পর বীরেন সিং টুইট করে জানিয়েছেন, হিংসা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। ১৩ জুন থেকে হিংসায় হতাহতের খবর নেই। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন যে মণিপুরে শান্তি বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ করবে।
তবে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে চিড়ে ভিজছে না। ৩ মে মণিপুরে প্রথমবার হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। তার পর থেকে বিরোধীরা রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন তুলছে। কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে নিশানা করছে বিরোধী দলগুলি। এই দলগুলি প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিদেশ সফরের আগে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলেন বিরোধী নেতানেত্রীরা। তা মেলেনি।