স্বাভাবিক হচ্ছে IndiGo-র পরিষেবাটানা ছ'দিন মারাত্মক যাত্রী দুর্ভোগের পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে IndiGo-র পরিষেবা। ফলে স্বস্তি পেতে পারেন যাত্রীরা। রবিবার ইন্ডিগোর তরফে জানানো হয়েছে, এদিন ১৫০০টি বিমান অপারেশনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ১৩৮টি গন্তব্যের মধ্যে ১৩৫টি গন্তব্যেই আজ বিমান চালানো হবে বলে জানিয়েছে এয়ারলাইন্সটি।
তীব্র রাজনৈতিক সমালোচনা এবং DGCA-র তদন্তের মধ্যেই পুনরায় ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছে ইন্ডিগো। কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা পি চিদাম্বরম এই বিশৃঙ্খলাকে ইন্ডিগো ম্যানেজমেন্ট ও বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের 'ব্যাপক ব্যর্থতা' বলে তোপ দেগেছেন।
অন্যদিকে, DGCA-র তরফে IndiGo-র সিইও পিটার এলবার্স এবং অ্যাকাউন্টেবল ম্যানেজার ইসিড্রো পোরকেরাসকে এমন বৃহৎ আকারে অপারেশনাল ত্রুটির জন্য দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এয়ার লাইন্সের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শনিবার মাত্র ৭০০টি ফ্লাইট চালানো হয়েছিল। এরফলে বিমানবন্দরগুলিতে হাজার হাজার যাত্রী আটকে পড়েন। কিন্তু যাত্রীদের কথা ভেবেই এই পরিকল্পিত "রিবুট" চালু করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে ইন্ডিগোর বিমান যাত্রীদের চরম নাজেহাল হতে হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এয়ারপোর্টে শত শত যাত্রীরা বিমান ধরার জন্য অপেক্ষা করছেন। এদের মধ্যে বহু যাত্রী রয়েছেন যাদের এমার্জেন্সি কারণে সফর করতে হচ্ছিল। কিন্তু বিমান বিভ্রাটের কারণে আটকে পড়তে হয়েছে অনেককেই। বৃহস্পতি, শুক্রবারের পর শনিবারও চলেছে ভোগান্তি। কিন্তু রবিতে পরিস্থিতি উন্নত হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতির জন্য অনেকেই দায়ী করছেন DGCA-র নয়া নিয়মকে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে পাইলট ও বিমানকর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় তাঁদের কাজের সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল DGCA। ‘ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশনস’ নামের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল-
১) পাইলট ও বিমানকর্মীদের ৪৮ ঘণ্টার সাপ্তাহিক বিশ্রাম দিতেই হবে। আগে এই সময় ছিল ৩৬ ঘণ্টা।
২) প্রতি সপ্তাহে রাতে মাত্র ২টি বিমান অবতরণ করতে পারবেন পাইলটরা। আগে এই সংখ্যা ছিল ৬টি।
৩) পাইলট ও বিমানকর্মীদের নাইট ডিউটি সপ্তাহে পরপর দু'দিন একবারই দেওয়া যাবে।
৪) পাইলটরা 'লিভ' বা 'ছুটি' নিলে তা সাপ্তাহিক বিশ্রামের আওতায় আসবে না। যদিও এই নিয়মটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, এই বিধি নির্দেশিকা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আনা হলেও, বিমান কোম্পানিগুলির বারংবারং অনুরোধে তা লাগু করা থেকে পিছিয়ে আসছিল DGCA। কিন্তু সম্প্রতি এই বিধি কার্যকর করার জন্য খোদ দিল্লি হাইকোর্ট DGCA-কে নির্দেশ দেয়। এরপরই জুন ও নভেম্বর মাসে দুই দফায় এই নির্দেশিকা কার্যকর করতে শুরু করে দেশের উড়ান নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
কেন IndiGo-ই সবচেয়ে বেশি সমস্যায়?
দেশীয় আভ্যন্তরীণ উড়ান পরিষেবার ক্ষেত্রে ইন্ডিগো তুলনামূলক অনেকটাই সস্তা। ফলে এই এয়ারলাইন্সটির উপরে এমনিতেই যাত্রীচাপ বেশি থাকে। পরিসংখ্যান বলে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও একাধিক এয়ারলাইন্সের থেকে এগিয়ে রয়েছে ইন্ডিগো। দেশের প্রায় ৯০টি এয়ারপোর্টে পরিষেবা রয়েছে এই সংস্থার। এছাড়াও, ইন্ডিগোর প্রচুর সংখ্যক বিমান রাতে চলাচল করে। নয়া বিধিনিষেধে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে রাতের বিমান চলাচলেই। যার জেরে ভুগতে হচ্ছে IndiGo-কে। কারণ নিয়ম মেনে পরিষেবা দিতে যে পরিমাণে পাইলটের প্রয়োজন, তা ইন্ডিগোর কাছে ছিল না। ফলে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের।