একের পর একটা বগি গ্যাস কাটার দিয়ে কাটা হচ্ছে, আর মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। কান্না আর চাপা আর্তনাদে ভারি হচ্ছে এলাকা। তবে এরইমধ্যে অন্য একটি খবর অবাক করছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসেই ১১০ জনের একটি দল চিক্কামাগালুরু থেকে একসঙ্গে ট্রেনে চড়ে যাচ্ছিলেন। ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েও ওই ১১০ জন নিরাপদেই রয়েছেন। তাঁরা হাওড়া হয়ে ঝাড়খণ্ডের সামেদ শিখরজি যাচ্ছিলেন।
তবে করমণ্ডল-সহ তিনটি ট্রেন কী ভাবে দুর্ঘটনার কবলে পড়ল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটছে না। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রেলের পদস্থ অফিসারেরা জানাচ্ছেন, কী করে দুর্ঘটনার ঘটেছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তদন্ত হলে তবেই বোঝা যাবে যে কেন এবং কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সকালে সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি হেলিকপ্টারে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। শুক্রবার রাতে হাওড়া এবং শালিমার স্টেশনে ভিড় করেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের যাত্রীদের উদ্বিগ্ন পরিজনেরা। দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারবর্গকে এককালীন ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের ২ লক্ষ টাকা এবং অল্প আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ হাওড়ার অদূরে শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়েছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় চার ঘণ্টা পরে ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ কামরার ট্রেনটি।
তবে দুর্ঘটনা কী করে ঘটেছে, তার একাধিক বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেসই তীব্র গতিতে গিয়ে ধাক্কা মারে একই লাইনে আগে আগে চলতে-থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে। দুর্ঘটনার অভিঘাতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। ২৩টি কামরার মধ্যে ১৫টি কামরা লাইন থেকে ছিটকে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে ও নয়ানজুলিতে। সেই লাইন দিয়ে তখন আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরাগুলি গিয়ে পড়ে ডাউন লাইনের উপর। বেঙ্গালুরু-হাওড়া ডাউন ট্রেনটি সেই বেলাইন কামরাগুলির উপর এসে পড়ে। হাওড়াগামী সেই ট্রেনটিরও দু’টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। তবে শনিবার ভোর পর্যন্ত যে ৮৮ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছিল রেল, তাঁরা প্রত্যেকেই করমণ্ডলের যাত্রী বলেও জানানো হয়েছিল।