একসঙ্গে থাকতে পারেন। কিন্তু বিয়ে করা যাবে না। ৩-২ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ভারতে সমকামী বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দিল না সুপ্রিম কোর্ট। বিশেষ বিবাহ আইন(SMA)-এর নীতিতে পরিবর্তন করতেও অস্বীকার করেছে সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু এরই পাশাপাশি, সমকামী যুগলদের সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিয়েছে আদালত।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিচারপতিরা সকলে এই বিষয়ে সম্মত হয়েছেন যে, সমকামী দম্পতিদের বিয়ে করার কোনও মৌলিক অধিকার নেই। শুধু তাই নয়, বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে বলেছে, সমকামী বিবাহের বিষয়ে আইনসভার (সংসদ) সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
সুপ্রিম কোর্ট সমকামীদের বিয়েকে হয় তো স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু তার মানে এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই যে সমকামীতাই বেআইনি। বরং CJI কেন্দ্র এবং পুলিশের উদ্দেশে একাধিক নির্দেশিকা দিয়েছেন। তাতে আগামিদিনে সমকামী যুগলদের প্রতি বৈষম্যের অবসান ঘটানোর লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। সকলের মতো সমানাধিকার এবং ব্যবহার পাবেন তাঁরা।
প্রধান বিচারপতির নির্দেশিকা
- কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে সমকামীদের অধিকার নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
- কেন্দ্রীয় সরকারকে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে একটি কমিটি গঠন করতে হবে।
- এই কমিটি রেশন কার্ডে সমকামী যুগলদের পরিবার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে৷
- চিকিৎসার সিদ্ধান্ত, জেল পরিদর্শন, মরদেহ গ্রহণের অধিকার অনুযায়ী সমকামীদের পরিবার হিসাবে বিবেচনা করা যায় কি না, তাও পর্যালোচনা করবে এই কমিটি।
- এ ছাড়া জয়েন্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের জন্য নমিনেশন করা, আর্থিক সুবিধা সংক্রান্ত অধিকার নিশ্চিতকরণ, পেনশন, গ্র্যাচুইটি ইত্যাদি বিষয়গুলিও এই কমিটি বিবেচনা করবে।
- CJI কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারদের সমকামী সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, চিকিৎসা, একটি হেল্পলাইন ফোন নম্বরের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে। সামাজিক বৈষম্য বা পুলিশি হয়রানির শিকার হলে সেই হেল্পলাইনে ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে।
সন্তান দত্তক নেওয়ার অধিকার নেই
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি এসকে কৌল বলেছেন, সমকামী দম্পতিদের দত্তক নেওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু, বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাট, হিমা কোহলি এবং পিএস নরসিমা ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন CARA প্রতিবিধান অনুযায়ী, সমকামী এবং অবিবাহিত দম্পতিরা সন্তান দত্তক নিতে পারেন না।
জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার
প্রধান বিচারপতি বলেন, জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়া জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একজন সঙ্গী নির্বাচন করার এবং সেই সঙ্গীর সঙ্গে জীবনযাপন করা স্বাধীনতার অধিকারের মধ্যে পড়ে। জীবনের অধিকারের মধ্যে জীবনসঙ্গী নির্বাচনের অধিকার অন্তর্ভুক্ত। LGBT সম্প্রদায় সহ সকল ব্যক্তিরই তাঁদের সঙ্গী নির্বাচন করার অধিকার রয়েছে।