পটনায় রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা বাদাম ভাগ করে খাচ্ছেন। মুম্বইয়ে ভোটের আগে তৃণমূল নেত্রীর আসন সমঝোতার প্রস্তাবে সায় দিচ্ছেন সনিয়া-তনয়। ঠিক তখন বাংলায় ভিন্ন চিত্র। নিয়ম করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে চলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। পাল্টা অধীরকে আক্রমণ করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সবমিলিয়ে প্রশ্ন উঠছে, বাংলায় কি ইন্ডিয়া জোট আসন সমঝোতা করবে? এমন প্রেক্ষাপটেই বরিষ্ঠ সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ি দাবি করলেন,'সংসদে সনিয়া গান্ধীকে দেখে মমতা অধীর সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন।'
লল্লনটপের 'নেতানগরী' অনুষ্ঠানে বরিষ্ঠ সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ি জানান,'বাংলায় অধীর বনাম মমতা। ইন্ডিয়া জোটে এটা কাঁটার মতো। দুজনে কখনও এক মঞ্চে আসবেন না। কথাও হয় না। শুরু থেকেই দু'জনের প্রতিযোগিতা। মমতা যুব কংগ্রেস সভানেত্রী ছিলেন তখন অধীর বিধায়ক হন। অধীর সাতবারের সাংসদ। অন্যদিকে, মমতা আটবারের সাংসদ। মমতা দুদফায় রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন। অধীর রেল প্রতিমন্ত্রী হন। তার পর অধীর মমতার প্রকল্পগুলি আটকে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। দুজনেই জনপ্রিয়। তবে মমতার মতো গোটা বাংলায় অধীরের জনপ্রিয়তা নেই। ফলে তালমিল হওয়া মুশকিল।'
বাংলায় কংগ্রেসের জমিও আর বেঁচে নেই বলে জানিয়ে দেন গৌতম লাহিড়ি। তাঁর কথায়, '১৯৮৪ সালে বাংলা ১৬টি আসন পেয়েছিল কংগ্রেস। সেটা ইন্দিরার প্রয়াণের পর। বর্তমানে কংগ্রেস মূলত মালদহ ও মুর্শিদাবাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। দক্ষিণবঙ্গে কংগ্রেসের অস্তিত্ব প্রায় নেই। গতবার দুটি লোকসভার আসন পেয়েছিল তারা। বহরমপুরে জিতেছিলেন অধীর চৌধুরী। শোনা যাচ্ছে, তৃণমূল চায়, ৪০ আসন তৃণমূলকে ছেড়ে দেওয়া হোক। ২টি আসনে লড়াই করুক কংগ্রেস।'
বাংলায় কংগ্রেস ও তৃণমূল একসঙ্গে লড়াই করে তেমন ফায়দা নেই বলেও মত গৌতমের। তাঁর অভিমত, কংগ্রেস ও তৃণমূল একসঙ্গে লড়াই করলে সব ভোট চলে যাবে বিজেপির দিকে। ফলে কেরলের মতো বাংলাতেও ইন্ডিয়া জোটের আসন সমঝোতা না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। শুরুতে মমতা বলেছিলেন, আমরা একাই লড়ব। সাগরদিঘিতে সংখ্যালঘু ভোট ধাক্কা খেয়েছে। সেটা দেখেই কংগ্রেসকে সঙ্গে চান।' লল্লনটপের নেতানগরী অনুষ্ঠানেই অধীর চৌধুরী দাবি করেন,'সংসদের সেন্ট্রাল হলে বসেছিলেন মমতা। সেই সময় করিডর দিয়ে যাচ্ছিলেন সনিয়া গান্ধী। তাঁর কাছে গিয়ে মমতা সাফ বলেন, অধীরকে না রুখলে জীবনে আর কোনও সম্পর্ক রাখব না।'