'লোন রিকভারি' নিয়ে একাধিকবার গ্রাহকদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ব্যাঙ্ক ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে। দুর্ব্যবহার তো বটেই, নানাভাবে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগও ওঠে হামেশাই। এনিয়ে এবার পদক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানালেন,সমস্ত বেসরকারী এবং সরকারি ব্যাঙ্ককে ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য কোনও ধরনের কঠোর পদক্ষেপ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঋণের টাকা পুনরুদ্ধারের জন্য় গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তিনিও পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'কয়েকটি ব্যাঙ্ক ঋণ পরিশোধের জন্য নির্মম আচরণ করছে। এই ধরনের অভিযোগ আমার কাছে এসেছে।' সংসদে একটি প্রশ্নের জবাবে সীতারমন বলেন,'সরকার সব সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দিয়েছে যে ঋণের টাকা পুনরুদ্ধারের জন্য কোনও প্রকার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। মানবতা ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত।'
গত বছরের অগাস্টে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উচ্চ সুদের হারে ঋণ পুনরুদ্ধার বন্ধ করতে পদক্ষেপ করেছিল। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঋণ দেওয়ার মানদণ্ড কড়া করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। চলতি বছরের শুরুতে ডিজিটাল মাধ্যমে ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলিকে তাদের তালিকাভুক্ত এজেন্টদের নাম প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ঋণ খেলাপির ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তাঁরাই অনুমোদিত। পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করার আগে গ্রাহকদের এজেন্টের ব্যাপারে জানাতে হবে।
RBI-র 'ডিজিটাল ঋণ নির্দেশিকা'নিয়ে প্রশ্নোত্তরের সময় জনৈক শিবসেনা সাংসদ জানতে চান,ঋণখেলাপিদের সঙ্গে কঠোর আচরণ করে ব্যাঙ্কগুলি। এ ব্যাপারে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে? এই প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভাগবত করাড, তখনই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানান,এটা স্পর্শকাতর বিষয়। যা সরকারের নজরে এসেছেন। ভাগবত করাড যোগ করেন, প্রতিটি ব্যাঙ্কের নিজস্ব বোর্ড রয়েছে। সরল সুদ এবং চক্রবৃদ্ধি সুদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ব্যাঙ্কের কর্মী এবং বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয়। এতে সরকার কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না।
গরিব মানুষ যাতে চড়া সুদের ফাঁদে না পড়েন সেজন্য প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি প্রকল্পের কথাও মনে করিয়ে দেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন,'এমন একাধিক প্রকল্প রয়েছে, যেখানে গরিব মানুষ ঋণ পেতে পারেন।' প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি যোজনা প্রকল্পের অধীনে সরকার কর্মসংস্থান শুরু করার জন্য কোনও গ্যারান্টি ছাড়াই ঋণ দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার পিএম স্বনিধি প্রকল্পের অধীনে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়। এই স্কিমের অধীনে প্রথমে ১০ হাজার টাকার ঋণ মেলে। ঋণ পরিশোধ করার পর দ্বিগুণ মেলে। তার পর ধাপে ধাপে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়।