দলের অন্দরের দ্বন্দ্ব নিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের উপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিলেন, দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলে রেয়াত করা হবে না। লোকসভা ভোটে যাতে কোনও রকম অন্তর্ঘাত না হয়, তার জন্যও কড়া নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষের পরাজয়ের প্রসঙ্গ তোলেন মমতা। বৈঠকে তিনি বলেন, সায়নী ঘোষকে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসেরই একাংশ হারিয়েছে। না হলে সায়নী ঘোষের জয় নিশ্চিত ছিল।
বস্তুত, আজ অর্থাত্ মঙ্গলবার থেকে জঙ্গলমহল সফর শুরু তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর। সোমবার দুর্গাপুর পৌঁছন মমতা। সেখানেই পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। আজ থেকে জঙ্গলমহলের তিন জেলায় তিনদিনে ৩টি মিটিং করবেন তৃণমূলনেত্রী। আজ পুরুলিয়ায় সভা। বুধবার বাঁকুড়ার খাতড়া ও বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম শহরে হবে সভা। পশ্চিম বর্ধমানে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে সরব হন মমতা।
সূত্রের খবর, রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক, মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, দলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাসু, আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়-সহ জেলা নেতৃত্বকে গত বিধানসভা ভোটে সায়নী ঘোষের পরাজয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সরাসরি অভিযোগ করেন, আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে জেলা নেতৃত্বের একাংশের চক্রান্তে সায়নী ঘোষ হেরে গিয়েছিলেন বিজেপি-র অগ্নিমিত্রা পালের কাছে। ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, 'সায়নী হারেনি। দলের কিছু নেতা ওকে হারিয়েছে। আমার কাছে সব খবর থাকে।'
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে আসানসোল (দক্ষিণ) বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন সায়নী ঘোষ। হেরে গিয়েছিলেন। সে বার সায়নীও অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে দলেরই একাংশ হারিয়েছে। নেতৃত্ব ও কর্মীদের অন্তর্ঘাতের শিকার তিনি। বর্তমানে সায়নী ঘোষ যুব তৃণমূলের সভানেত্রী। মমতা পশ্চিম বর্ধমানের জেলা নেতৃত্বের বৈঠকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, দলের মধ্যে থেকে যারা বিজেপি-কে সাহায্য করছে, তাদের দল ছেড়ে দেব না। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।