scorecardresearch
 

West Bengal Assembly 2021: স্বাস্থ্যসাথী থেকে দিদির দূত, পিকের হাত ধরে কতটা বদলেছে তৃণমূলের নির্বাচনী কৌশল!

ভোটের আগে যুগোপযোগী, প্রযুক্তি-নির্ভর, সরল পদ্ধতিতে সুকৌশলে রাজ্যের মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়াচ্ছে শাসকদল। এর নেপথ্যে প্রশান্ত কিশোরের গবেষণা বা কৌশল কতটা রয়েছে তা স্পষ্ট ভাবে জানা না গেলেও তাঁর সঙ্গ লাভের পর যে তৃণমূলের প্রচার কৌশলে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে, তা সকলেরই চোখে পড়েছে।

Advertisement
পিকের হাত ধরে কতটা বদলেছে তৃণমূলের নির্বাচনী কৌশল! পিকের হাত ধরে কতটা বদলেছে তৃণমূলের নির্বাচনী কৌশল!
হাইলাইটস
  • মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন ‘পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্ট’ প্রশান্ত কিশোর।
  • ভোটে শাসক দলের বিপর্যয় আটকে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত রুখে দেওয়ার রণনীতি তৈরির গুরুদায়িত্ব রয়েছে তাঁর কাঁধে।
  • শাসক-বিরোধী— উভয় পক্ষের শক্তি-দুর্বলতা বুঝে সেই অনুযায়ী ঘুঁটি সাজানোই পিকের কাজ।

২০১৯ থেকে তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন ‘পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্ট’ প্রশান্ত কিশোর। লোকসভা ভোটে শাসক দলের বিপর্যয় আটকে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত রুখে দেওয়ার রণনীতি তৈরির গুরুদায়িত্ব রয়েছে তাঁর কাঁধে। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে ক্ষমতায় ফিরতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোরকে।

পিকের লক্ষ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও একবার সাফল্যের স্বাদ পাইয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিজের বায়োডেটা আরও ধারালো করে তোলা। শাসক-বিরোধী— উভয় পক্ষের শক্তি-দুর্বলতা বুঝে সেই অনুযায়ী ঘুঁটি সাজানোই পিকের কাজ। বিভিন্ন রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে নির্বাচন ভিত্তিক নানা সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে, দলীয় খামতি দূর করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়ার পরিকল্পনায় তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের একসঙ্গে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন পিকে।

আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের ত্রিমুখী লড়াই, বাকযুদ্ধ, অভিযোগ-পালটা অভিযোগে ‘খেলা’ এখন জমে উঠেছে! পাশাপাশি নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হয়েছে মমতা সরকারের উদ্যোগ। ‘দুয়ারে সরকার’ আর ‘পাড়ায় সমাধান’ আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশ্বব্যাঙ্ক, ইউনিসেফ এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের উন্নয়ন কর্মসূচি বিষয়ক বিভাগের প্রশংসা পেয়েছে। অর্থাৎ, বাংলায় তো বটেই তৃণমূলের উন্নয়নমুখী নির্বাচনী কৌশল রাজ্যের মানুষের পাশাপাশি নজর কেড়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার। উন্নয়নের বাস্তবতা নিয়ে বিরোধীরা বার বার প্রশ্ন তুললেও প্রাথমিক ভাবে মমতা সরকারের (নেপথ্যে হয়তো প্রশান্ত কিশোরের গবেষণা) প্রচার কৌশল সাফল্যের মুখ দেখেছে।

Prashant Kishor

রাজ্যের মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়াতে ভোটের আগেই লঞ্চ করেছে Didir Doot নামের একটি স্মার্টফোন অ্যাপ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিভিন্ন কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগ করে দিচ্ছে এই স্মার্টফোন অ্যাপ। চাইলে এই Didir Doot অ্যাপের সাহায্যে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি ভিডিয়ো কনফারেন্সে যোগাযোগও করা যাবে! Didir Doot অ্যাপের সাহায্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার দেখা যাবে স্মার্টফোন থেকেই। রাজ্যের মানুষ নিজেদের নানা অভাব-অভিযোগও সহজেই সরাসরি জানাতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রীকে। যুগোপযোগী, প্রযুক্তি-নির্ভর, সরল পদ্ধতিতে সুকৌশলে রাজ্যের মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়াচ্ছে শাসকদল। এর নেপথ্যে প্রশান্ত কিশোরের গবেষণা বা কৌশল কতটা রয়েছে তা স্পষ্ট ভাবে জানা না গেলেও তাঁর সঙ্গ লাভের পর যে তৃণমূলের প্রচার কৌশলে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে, তা সকলেরই চোখে পড়েছে।

Advertisement

পিকে তৃণমূলের রাজনৈতিক কৌশলী হিসাবে যোগ দেওয়ার পর অস্বস্তি বেড়েছে দলেরই একাংশের নেতা, কর্মীদের। দলের নেতা-মন্ত্রীদের হাতে হাতে কাজের খতিয়ান, রিপোর্ট কার্ড পৌঁছে যাওয়ার ফলে দলের অন্দরেই ‘বিদ্রোহের আগুন’ লেগেছে। গণনা, গবেষণা আর কৌশলী বিশ্লেষণে দলের নেতা-মন্ত্রীদের বিষয়ে ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ করতে শুরু করেন প্রশান্ত কিশোর। একুশের নির্বাচনী প্রস্তুতির অনেক আগেই বেশ কিছু নেতার দল ছাড়ার বিষয়ে ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ করেন পিকে। শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে তৃণমূল থেকে ৬ জন বিধায়ক, একজন সাংসদ ও একজন প্রাক্তন সাংসদ-সহ অনেক নেতা-নেত্রী বেরিয়ে গিয়েছেন। পিকের ইঙ্গিত অনুযায়ী, ভাঙন আরও বাকি।

তবে তা সত্ত্বেও আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির আসন সংখ্যা যে ‘টু ডিজিট’ পেরোবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিত পিকে। পিকের দাবি, দলীয় ভাঙন, রাজ্যের বিরোধী শিবিরের শক্তি ইত্যাদি আরও নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনা করে, রীতিমতো অঙ্ক কষেই বিজেপির আসন সংখ্যা নিয়ে টুইট করেছেন তিনি। বিজেপির আসন সংখ্যা সম্পর্কে পিকের ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ ফলে কী না, তা তো ভবিষ্যতই বলবে। তবে রাজ্যে নির্বাচনী প্রচার কৌশলে শাসকদল যে বিরোধী শিবিরের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে, তার প্রমাণ মিলছে আন্তর্জাতিক প্রশংসায়, রাজ্যের মানুষের প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিক্রিয়ায়।
 

Advertisement