scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: ইজরায়েল নয়, মৃত সন্তান হাতে হতভাগ্য বাবার ছবিটি ১১ বছর পুরনো এবং গাজার

একটি ছবিতে এক বাবাকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে তাঁর মৃত ছেলের কাপড়ে ঢাকা মরদেহ কোলে নিয়ে আর্তনাদ করতে। ছবিটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, এটি ইজরায়েলের এক বাবার ছবি যার ছেলেকে হামাসের জঙ্গিরা গলা কেটে হত্যা করেছে, ও একই ভাবে আরও ৪০ শিশুকে খুন করা হয়েছে। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: ইজরায়েল নয়, মৃত সন্তান হাতে হতভাগ্য বাবার ছবিটি ১১ বছর পুরনো এবং গাজার ফ্যাক্ট চেক: ইজরায়েল নয়, মৃত সন্তান হাতে হতভাগ্য বাবার ছবিটি ১১ বছর পুরনো এবং গাজার

ইজরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজার মধ্যে যুদ্ধের কোনও বিরাম আপাতত দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যে গাজার হাসপাতালে হামলার পর ৫০০ জনের মৃত্যুর খবরও এসেছে। দুই দেশ মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা প্রায় ৫০০০ ছুঁতে চলেছে। আর এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে একাধিক ছবি ও ভিডিয়ো, যা চলমান যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে শেয়ার করা হচ্ছে। 

তেমনই একটি ছবিতে এক বাবাকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে তাঁর মৃত ছেলের কাপড়ে ঢাকা মরদেহ কোলে নিয়ে আর্তনাদ করতে। ছবিটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, এটি ইজরায়েলের এক বাবার ছবি যার ছেলেকে হামাসের জঙ্গিরা গলা কেটে হত্যা করেছে, ও একই ভাবে আরও ৪০ শিশুকে খুন করা হয়েছে। 

ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "পিতার কোলে সন্তানের  মস্তক বিহীন লাস । হ্যাঁ এই ভাবে ৪০টি নিষ্পাপ শিশুর শিরচ্ছেদ করে হত্যা করেছে হামাস আ*ল্লাহ আক*বর ধ্বনি দিয়ে।  এই হামাসের পাসেই আবার  আমাদের দেশের কংগ্রেস ও বামপন্থিরা। চিনতে শিখুন এদের ..." (ক্যাপশনের বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ছবিটি প্রায় ১১ বছর পুরনো। সেই সঙ্গে এই ছবিটি গাজার। একটি রকেট হামলায় ওই শিশুটির মৃত্যু হয়েছিল। 

কীভাবে জানা গেল সত্যি 

ভাইরাল ছবিটিকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খোঁজার পর ওই একই ছবি দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের একটি রিপোর্টে দেখতে পাওয়া যায়। অন্য আরও দুটি ছবির সঙ্গে এই আলোচ্য ছবিটিও প্রকাশিত হয়েছিল ২০১২ সালের ১৬ নভেম্বরের একটি প্রতিবেদনে। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে ২০১২ সালে প্রকাশ পাওয়া এই ছবিটি কোনও ভাবেই চলমান যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে না। 

Advertisement

ওই ছবিটির ক্যাপশনে লেখা হয়, বিবিসি আরবির এক সাংবাদিক তাঁর ছেলের নিথর দেহ ধরে রয়েছেন। সেই সঙ্গে খবরে লেখা হয়, গাজায় বসবাসকারী ওই ওই সাংবাদিকের নাম জিহাদ মিশারাওয়ি এবং তাঁর ১১ মাসের সন্তান একটি রকেট হামলার দরুণ মারা যায়। 

এই বিষয়টিকে সূত্র ধরে এরপর আমরা আরও কিছু কিওয়ার্ড সার্চ করি ও ডেইলি মেলের একটি রিপোর্ট পাই। ২০১২ সালের ১৫ নভেম্বরের সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই শিশুটির নাম ওমর এবং হামাস জঙ্গিদের উদ্দেশে ইজরায়েলের ছোড়া মিসাইলে তার মৃত্যু হয়। গাজার শিফা হাসপাতালে এই ছবিটি তোলা হয়েছিল বলে প্রকাশ পায় সেই রিপোর্টে।

 

এই ঘটনার প্রায় পাঁচ মাস পর আবার সংযুক্ত রাষ্ট্রপুঞ্জ এই হামলার দায় চাপিয়ে দেয় গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হামাসের উপর। ২০১৩ সালের মার্চে প্রকাশিত সিবিএস নিউজের খবর অনুযায়ী, ইউনাইটেড নেশনের রিপোর্টে দাবি করা হয়, গাজা থেকে ছোড়া হামাসের রকেট ইজরায়েল পর্যন্ত পৌঁছনোর আগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে গাজার অভ্যন্তরেই আঘাত হানে। এই বক্তব্যের পর হামাস আপাতভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। অন্যদিকে, ইজরায়েলের এক সেনা মুখপাত্র বলেন যে, তাদের রকেট ওই বিবিসি-র সাংবাদিকের বাড়িতে আঘাত করেছিল কিনা এই বিষয়ে তারা নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারবেন না। 

ফলে এই বিষয়টি বুঝতে বাকি থাকে না যে গাজায় নিহত এক শিশুর ১১ বছর আগেকার ছবি মিথ্যে দাবি করে বর্তমান সময়ে প্রচার করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

 

 

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

ছবিতে ইজরায়েলের এক হতভাগ্য বাবাকে দেখা যাচ্ছে যার ছেলেকে হামাস গলা কেটে হত্যা করেছে। 

ফলাফল

ছবিটি ইজরায়েল নয়, বরং গাজার ও এটি ১১ বছর আগেকার। গাজায় এক রকেট হামলায় এই শিশুটির মৃত্যু হয়। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement