scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: সাম্প্রদায়িক রং মিশিয়ে ভাইরাল হল মির্জাপুরের একটি মারপিটের ভিডিও

রড হাতে এক যুবকের মারধর করার ছবি শেয়ার করে দাবি করা হল যে এক হিন্দু পরিবারের উপর হামলা করা হয়েছে।

Advertisement
সাম্প্রদায়িক দাবির সঙ্গে ভাইরাল মির্জাপুরে জানুয়ারি মাসে ঘটা একটি ঘটনার ভিডিও সাম্প্রদায়িক দাবির সঙ্গে ভাইরাল মির্জাপুরে জানুয়ারি মাসে ঘটা একটি ঘটনার ভিডিও

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বেশ শোরগোল ফেলে দিয়েছে। যেখানে কমলা রঙের টি-শার্ট পরিহিত এক যুবককে হাতে একটি রড তুলে এক পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, রড হাতে তুলে নেওয়া ওই সংখ্যালঘু যুবক নাকি এক হিন্দু পরিবারকে মারধর করেছে।

ভিডিওটি শেয়ার করে হিন্দিতে যা লেখা হয়েছে তার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, "এই ভিডিওটি মির্জাপুরের (উত্তর প্রদেশ) বলে জানা গিয়েছে। আব্দুলকে তার প্রতিবেশীরা (হিন্দু পরিবার) নতুন ঘরের সামনে জঞ্জাল ফেলতে মানা করেছিল। তার পর আব্দুল যা করল তা আপনাদের সামনে রয়েছে।" 

ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওর আর্কাইভ এখানেএখানে দেখা যাবে। 

ইন্ডিয়া টুডে-র অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম অনুসন্ধান করে পেয়েছে যে ভিডিওর সঙ্গে যে ধরনের দাবি করা হচ্ছে তা বিভ্রান্তিকর। এ ক্ষেত্রে যে সংঘর্ষের ভিডিও দুই পৃথক ধর্মের ব্যক্তিদের মধ্যে হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে তা সত্যি নয়। বরং, হামলাকারী ও আক্রান্ত, উভয়েরই সম্প্রদায় একই ছিল। 

আফয়া তদন্ত

ভাইরাল এই ভিডিওর সত্যতা খুঁজতে সবার প্রথম আমরা ভিডিওটি আলাদা আলাদা কি-ফ্রেমে ভেঙে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তখন আমাদের সামনে গত ১৭ জানুয়ারি, ২০২২ সালের প্রকাশিত ইটিভি ভারতের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই। সেই প্রতিবেদনে ওই ঘটনার ছবি-সহ তার সম্পর্কে লেখা হয়। যদিও তাতে ভিন্ন সম্প্রদায়ের কোনও বিষয়ের উল্লেখ করা হয়নি। 

সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি মির্জাপুরের কাটরা কোতোয়ালি এলাকায় ঘটে। সেখানে একটি পাড়ায় এক যুবক অন্য একটি পরিবারের মা ও মেয়েকে লোহার রড় দিয়ে বেধড়ক মারে যার পর তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এই ঘটনায় তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানানো হয় যে জঞ্জাল ফেলা নিয়েই গোটা বিবাদের সূত্রপাত ঘটে। যদিও সেখানে হামলাকারী বা আক্রান্তের নাম উল্লেখ করা হয়নি। 

Advertisement

অ্যাডভান্স কিওয়ার্ড সার্চের মারফৎ আমরা ওই একই সময়ে প্রকাশ পাওয়া দৈনিক ভাস্করের একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। সেখানে অবশ্য লেখা হয় যে আক্রান্ত মহিলার নাম নাসরিন বেগম। তিনি জানান যে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে তিনি বাড়ি তৈরি করছিলেন। সেই কারণে নিজের পাঁচ মেয়েকে নিয়ে মাদ্রাসায় আশ্রয় নেন। কিন্তু মাদ্রাসা থেকে নামার সময় এক মহিলাকে সরতে বললে তিনি রেগে গিয়ে চিৎকার করতে শুরু করেন। তখনই ওই যুবক এসে মারধর শুরু করে। 

এ বাদেও আমরা মির্জাপুর পুলিশের টুইট করা একটি ভিডিও পাই। সেখানে ওই ঘটনার কথা উল্লেখ করে লেখা হয় যে এটি চলতি বছর ১৬ জানুয়ারির ঘটনা। এবং এই ক্ষেত্রে একই সম্প্রদায়ের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডোগল হয়েছিল। যে ধরনের সাম্প্রদায়িক দাবি এখানে করা হচ্ছে তা সত্যি নয়। 

সুতরাং, এর থেকে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে ভাইরাল ভিডিওটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়ির দাবির সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে। 

 

ফ্যাক্ট চেক

social media user

দাবি

উত্তর প্রদেশের মির্জাপুরে দেখা যাচ্ছে যে কী ভাবে এক আব্দুল নামের এক যুবক তার হিন্দু প্রতিবেশীকে ধরে মারধর করছে।

ফলাফল

মির্জাপুরের এই ঘটনাটি চলতি বছর জানুয়ারি মাসের ১৬ তারিখ ঘটে। মির্জাপুর পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে এ ক্ষেত্রে হামলাকারী ও নির্যাতিতার পরিবার একই সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
social media user
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement