স্ট্র্যান্ড রোডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৯। দেহগুলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এসএসকেএম হাসপাতালে।
বহুতলে হাজির হল এনডিআরএফ দল। আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে সার্চ অপারেশন।
অগ্নিকাণ্ডে ঝলসে যাওয়া দেহগুলির দ্রুত ময়নাতদন্ত হবে, এসএসকেএম হাসপাতালে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
স্ট্র্যান্ড রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হয়। অগ্নিকাণ্ডের জেরে বাবুঘাট থেকে হাওড়া পর্যন্ত রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে উত্তর-পূর্ব ভারতে রেলের বুকিং ব্যবস্থা ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হয়েছে। প্রায় ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
স্ট্র্যান্ড রোডের বহুতল থেকে দেহগুলি বের করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও।
জানা যাচ্ছে আগুনে নেভানোর জন্য লিফটে করে ওই অভিশপ্ত বহুতলের ১২ তলায় গিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন দমকলকর্মী সহ আরপিএফ কর্মী। তারাই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার স্বীকার হন তাঁরা। এখনও ভেতরে কয়েকজনের আটকে থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনও নিখোঁজ রয়েছেন রেলের ডেপুটি সিসিএম পার্থসারথী মণ্ডল।
অগ্নিকাণ্ডে মৃতদের পরিবারের একজনকে চাকরির প্রতিশ্রুতি মুখ্যমন্ত্রীর। সেইসঙ্গে পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক অনুদান ঘোষণা।
"যেখানে আগুন লেগেছিল সেটা রেলের সম্পত্তি তবুও তাদের পক্ষের কাউকে ঘটনাস্থলে একবারের জন্য দেখা যায়নি l তাদের কারোর আসা উচিত ছিল, এমনকি আগুন নেভানোর জন্য রেলের কাছে এই বিল্ডিং এর ম্যাপ চেয়ে পাঠানো হয়েছিল সেটাও দেওয়া হয়নি, একটু সহযোগিতা করা হয়নি l এটা দূর্ভাগ্য দুর্ভাগ্যজনক l কিন্তু দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করতে চাইনা।" বললেন মুখ্যমন্ত্রী।
একে একে বার করা হচ্ছে দেহগুলি। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এসএসকেএম হাসপাতালে।
সোমবার সন্ধে ৬.১০ নাগাদ আগুন লাগে নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিং নামের ওই বহুতলে। এখানেই রয়েছে পূর্ব রেলের দফতর। অত উচ্চতায় আগুনের লেলিহান শিখাকে বাগে আনাই ছিল দমকলকর্মীদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। অত উঁচু বিল্ডিংয়ে আগুন নেভাতে আনা হয় অত্যন্ত অত্যাধুনিক হাইড্রলিক ল্যাডার ব্রন্টোস্কাইলিড এফ-৫৫। এই মুহূর্তে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ভেতরে কোনো পকেট ফায়ার রয়েছে কিনা তা দেখছেন দমকলকর্মীরা।
পূর্ব রেলের কার্যালয়ে কর্মরত রেলকর্মী বাবাকে খুঁজে না পেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চাইলেন এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে পেয়ে চিৎকার করে সাহায্য চান ওই ব্যক্তি l তাঁকে দেখে সামনে এগিয়ে আসেন মুখ্যমন্ত্রী, জানতে চান কী হয়েছে l তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, তার বাবা সন্ধ্যে থেকে নিখোঁজ, তিনি ওই বিল্ডিংয়েই রেলে কর্মরত একজন আধিকারিক l মুখ্যমন্ত্রী তাকে জানান মৃতদের মধ্যে তার বাবার নাম নেই তবে নিখোঁজদের মধ্যে তিনি আছেন l এখনো তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে চেষ্টা করছি তোমার বাবাকে খুঁজে বার করার l ওই ব্যক্তিকে শান্ত হতে বলে আশ্বস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় l যদিও বাবাকে খুঁজে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই ব্যক্তি।
স্ট্র্যান্ডরোডে বহুতলে বিধ্বংসী আগুনে এখনও ২ জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভেতরে উদ্ধার করতে গিয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে চারজন দমকলকর্মী, একজন আরপিএফ কর্মী, অপর একজন হেয়ার স্ট্রেট থানার এএসআই। আরেকটি মৃতদেহ এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। মৃতদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
অগ্নিকাণ্ডে এখনও ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ঘটনাস্থলে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ও দমকলমন্ত্রী।
এদিন বিকেলে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। পরে ঘটনাস্থলে আসেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। মুখ্যমন্ত্রী বার বার খোঁজ নিতে থাকেন। পরে নিজেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাজির হন ঘটনাস্থলে। মৃতদের পরিবারের এক জনকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।