New Parliament Building Inauguration Programme: রবিবার নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একটি জমকালো পুজো, দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন এবং একটি স্মারক মুদ্রা ও ডাকটিকিট প্রকাশ করা হবে। কংগ্রেস, দিল্লির ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস-সহ ২০টি বিরোধী দল বুধবার এই অনুষ্ঠান বয়কটের ঘোষণা করেছে। বিরোধীদের বিবৃতি অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন গণতন্ত্রের উপর একটি "গুরুতর অপমান" এবং "সরাসরি আক্রমণ"।
অনুষ্ঠানটি দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠান শুরু হবে যজ্ঞ ও পুজোর মাধ্যমে এবং শেষ হবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দিয়ে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিস্তারিত সময়সূচী
সকাল ৭.৩০ মিনিটে মহাত্মা গান্ধী মূর্তির কাছে যাগযজ্ঞের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হবে। উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান সহ অন্যান্যরা থাকবেন।
পুজোর পরে লোকসভার ভিতরে সেঙ্গোল স্থাপন করা হবে সকাল ৮.৩০টা থেকে সকাল ৯টার মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন সংসদ ভবনে স্পিকারের আসনের পাশে একটি কাঁচের কেসের মধ্যে ঐতিহাসিক রাজদণ্ড স্থাপন করবেন। 'অধিনামস' (তামিলনাড়ুর শৈব মট থেকে পুরোহিত), ভুম্মিদি বাঙ্গারু জুয়েলার্স, যাদেরকে ঐতিহাসিক সেঙ্গোল তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং যারা নতুন সংসদ ভবন তৈরি করেছেন তাদের সম্মানিত করা হবে।
সকাল ৯.৩০ টায় একটি প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে শঙ্করাচার্য, পণ্ডিত এবং সাধুরা উপস্থিত থাকবেন। দুপুর ১২টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে। এ উপলক্ষে দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে। স্বাগত ভাষণ দেবেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান। উপরাষ্ট্রপতি ও রাষ্ট্রপতির বার্তাও পাঠ করা হবে। রাজ্যসভার বিরোধী দলের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে এই সমাবেশে ভাষণ দেবেন। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাও একটি বক্তৃতা দেবেন এবং অনুষ্ঠান চলাকালীন একটি স্মারক মুদ্রা ও স্ট্যাম্প প্রকাশ করা হবে। দুপুর আড়াইটার দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হবে।
সম্ভাব্য কার্যক্রম সম্পর্কে আসুন জেনে নিই ২৮ মে সংসদে হতে চলা অনুষ্ঠান সম্পর্কে
১. সকাল ৭.৩০ থেকে ৮.৩০ হবে যজ্ঞ ও পুজো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লোকসভা অধ্যক্ষ ওম বিড়লা রাজ্যসভা ডেপুটি চেয়ারম্যান এর সঙ্গে একাধিক মন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন।
২. সকাল ৮.৩০ থেকে ৯ টার মধ্যে লোকসভার ভেতরে বৈদিক রীতি-রেওয়াজ অনুযায়ী ভবনের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে। এর জন্য তামিলনাড়ু থেকে মোট থেকে ২০লজন স্বামী উপস্থিত থাকবেন।
৩. ৯ টা থেকে ৯.৩০-এর মধ্যে প্রার্থনা সভা আয়োজিত করা হয়েছে। এর মধ্যে শংকরাচার্য সহ একাধিক বড় বিদ্বান পন্ডিত এবং সাধু-শান্ত উপস্থিত থাকবেন।
৪. দ্বিতীয় চরণে দুপুর ১২ টা থেকে রাষ্ট্রগান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। এরই এর মধ্যে শর্ট ফিল্মের স্ক্রিনিং করা হবে। এরপরে ডেপুটি চেয়ারম্যান রাজ্যসভা, হরিবংশ, উপরাষ্ট্রপতি এবং রাষ্ট্রপতি বার্তা পাঠ করবেন।
৫. রাজ্যসভাতে বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গের সম্বোধন অনুষ্ঠান রাখা হয়েছে। যদিও খাড়্গে বিরোধী দলনেতার পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তার মঞ্জুর করা হয়নি। এবং এখনও তিনি সেই পদে বহাল রয়েছেন। যদিও কংগ্রেস উদঘাটন কার্যক্রমে উপস্থিত না থাকার কথা ঘোষণা করেছে। এই পরিস্থিতিতে বিপক্ষ নেতা সম্বোধন অনুষ্ঠান হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে।
৬. লোকসভার স্পিকারকও সম্বোধন অনুষ্ঠান রয়েছে। এরপরে মুদ্রা এবং স্টাম্প রিলিজ করা হবে। একদম শেষে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সম্বোধন অনুষ্ঠান রয়েছে। দুপুর ২.৩০-র সময় কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
১২০০ কোটি টাকা দিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন সংসদ ভবন
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১০ ডিসেম্বর ২০২০ সালে সংসদ ভবনে নির্মাণ কার্যের শিলান্যাস করেছিলেন। এই কাজ এর জন্য রাজ্যসভা এবং লোকসভাতে ৫ আগস্ট ২০১৯ এ প্রস্তাবনা হয়েছিল। এর খরচ ৮৬১ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। যদিও পরে নির্মাণে খরচ ১২০০ কোটি টাকা পৌঁছে যায়। রেকর্ড সময়ে এটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি চারতলা। ১২২৪ জন সাংসদদের বসার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে।
লোকসভাতে বসতে পারবেন ৮৮৮ জন সদস্য
সংসদের বর্তমান ভবনের লোকসভাতে ৫৫০ জন, রাজ্যসভায় ২৫০ জন ভারতীয় সদস্যর বসার ব্যবস্থা আছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে নবনির্মিত সংসদ ভবনে ৮৮৮ জন লোকসভা এবং ৩৮৪ জন রাজ্যসভা সাংসদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের জন্য একটা লাউঞ্জ, একটা লাইব্রেরি, একটি সভা কক্ষ, একটি ডাইনিং রুম এবং পর্যাপ্ত পার্কিং ব্যবস্থা করা রাখা হয়েছে।