শেষ হয়ে গেল দীর্ঘদিনের লড়াই। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন মোহনবাগানের প্রাক্তন গোলরক্ষক প্রশান্ত ডোরা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৪ বছর। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বহুদিন ধরেই তিনি হিমোফ্যাগোসাইটিক লিম্ফোহিস্টিওসিটোসিস রোগে ভুগছিলেন। টাটা মেডিকেল রিসার্চ সেন্টারে চলছিল তাঁর চিকিৎসা। অবশেষে আজ বেলা দেড়টা নাগাদ তিনি প্রয়াত হন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাত্র আড়াই মাস আগে প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত হন প্রশান্তবাবু। তাঁর দাদা হেমন্ত ডোরা বললেন, "ভাইয়ের রক্তে প্লেটলেট খুব তাড়াতাড়ি কমে যাচ্ছিল। ওর শরীরে O+ গ্রুপের রক্ত প্রয়োজন ছিল। সেইমতো সেই আমরা রক্তের জোগাড়ও করেছিলাম। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারলাম না।" শোনা যাচ্ছে রক্ত জোগাড় করার ব্যাপারে তৃণমূলের মন্ত্রী মদন মিত্র ডোরা পরিবারকে যথেষ্ট সাহায্য করেছিলেন।
আরও জানা গেছে, প্রথম দিকে এই জ্বরের কারণ সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। পরবর্তীকালে জানতে পারা গেল যে তিনি হিমোফ্যাগোসাইটিক লিম্ফোহিস্টিওসিটোসিস রোগে ভুগছেন। ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে। পরিবারে স্ত্রী সৌমি এবং এক ছেলেকে রেখে গেলেন প্রশান্তবাবু।
আরও পড়ুন :
মোহনবাগানের আগে সরাতে হবে ATK-র নাম, দাবিতে ফের রাস্তায় সবুজ-মেরুন সমর্থকেরা
এবার আসা যাক তাঁর ফুটবল কেরিয়ারের কথায়। একটা সময় কলকাতা ফুটবল ময়দানে অত্যন্ত জনপ্রিয় নাম ছিলেন প্রশান্ত ডোরা। বাংলার হয়ে তিনি সন্তোষ ট্রফিতেও তেকাঠির দায়িত্ব সামলেছেন। এছাড়া SAFF কাপ এবং SAFF গেমসেও তিনি যথেষ্ট উজ্জ্বল স্বাক্ষর রাখতে পেরেছিলেন। খেলতে খেলতেই তিনি ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কে চাকরি পান। নিজে খেলা ছেড়ে দিলেও ছোটোদের তিনি ফুটবল শেখাতেন।
We are deeply saddened by the untimely demise of former Mohun Bagan and Indian National team goalkeeper Prasanta Dora. He was part of Mohun Bagan in 2001 and then from 2003 to 05. His heroics under the bar helped #Mariners to win the 2003 IFA Shield
Rest in Peace Prasanta Dora. pic.twitter.com/K4C5sdnuzB— Mohun Bagan (@Mohun_Bagan) January 26, 2021Advertisement
প্রশান্ত ডোরার প্রয়ানে বাংলার ফুটবল জগতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ১৯৯৯ সালে প্রথমবার জাতীয় দলে ডাক পান প্রশান্ত। প্রি-অলিম্পিক কোয়ালিফায়িংয়ে থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিষেক ঘটেছিল তাঁর। এছাড়া মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডান এবং জেসিটি ক্লাবের হয়েও তিনি চুটিয়ে ফুটবল খেলেছেন।
বিগত কয়েকদিন ধরেই তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। প্রথমে তাঁর রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে টাটা মেডিকেল রিসার্চ সেন্টারে তাঁর রোগের আসল কারণ জানতে পারা যায়। ময়দানের লড়াইয়ে বহুবার জিতলেও শেষপর্যন্ত জীবন যুদ্ধে তিনি আর জিততে পারলেন না।