13 October, 2023

BY- Aajtak Bangla

গণেশের স্ত্রী না মা, 'কলা বৌ'  আসলে কে?

শাস্ত্র মতে ষষ্ঠীর দিন দেবীর আবাহন হলেও, সপ্তমীতের নব পত্রিকা বা কলা বৌ স্নানের মধ্যে দিয়ে দেবীর বোধন হয়।

কলাবৌ স্থাপন করা হয় গণেশের পাশে, কলাবৌ এর এই অবস্থান দেখে সকলের মনেই এই ধারনা  বিরাজ করে কলাবৌ  গণেশের স্ত্রী।  

আদতে তা কিন্তু নয়। কারণ পুরাণ অনুসারে, গণেশের দুই স্ত্রীয়ের নাম রিদ্ধি ও সিদ্ধি।

সমাজতাত্ত্বিকরা বলেন, দেবী দুর্গার পুজো আদতে ‘শাকম্ভরী’ মূর্তিকল্পনার আড়ালে নবপত্রিকার পুজো।

 কৃষিভিত্তিক সমাজ গঠনের একটা পর্বে শস্যদায়িনী পৃথিবীমাতার আরাধনাই কালক্রমে নবপত্রিকার পুজো হিসেবে স্থায়ীত্ব লাভ করেছে।

আর বঙ্গদেশের দুর্গাপুজোয় এই ‘নবপত্রিকা’-ই ‘কলা-বৌ’ হিসেবে পুজিত হয়।

বিভিন্ন পুরাণ থেকে পাওয়া তথ্য ও তত্ত্ব অনুসরণ করে দেবীর ৯টা রূপ স্থির করা হয়েছে এবং সেগুলোর প্রতীক হিসাবে ৯টা বিভিন্ন গাছের ডাল বা অংশ নিয়ে গড়া হয় ‘নবপত্রিকা।

এতে কলাগাছ, কালোকচু, মানকচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক ও ধান ব্যবহার করা হয়। এগুলো শ্বেত-অপরাজিতা লতা ও হলুদ রঙের সুতো দিয়ে বেঁধে তৈরি হয় ‘নবপত্রিকা। এই গাছগুলোকে বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।

কলাগাছ হল ব্রাহ্মণী-র প্রতীক, কালোকচু কালিকা-র প্রতীক, মানকচু চামুণ্ডা-র প্রতীক, হলুদ দুর্গা-র প্রতীক, জয়ন্তী কার্তিকী-র প্রতীক, বেল শিব/শিবানী-র প্রতীক, ডালিম রক্তদন্তিকা-র প্রতীক, অশোক শোকরহিতা-র প্রতীক ও  ধান লক্ষ্মী-র প্রতীক।

মহাসপ্তমীর সকালে অনুষ্ঠিত হয় নবপত্রিকার স্নান পর্ব! বাংলার দুর্গাপুজোয় এই ‘নবপত্রিকা’-র স্নান একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।

মহাসপ্তমীতে ‘নবপত্রিকা’ বা ‘কলা-বৌ’ স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরিয়ে দুর্গার ডান পাশে স্থাপন করা হয়, যার অন্য নাম ‘পুষ্টি’। যেহেতু দুর্গা প্রতিমায় একেবারে ডান পাশে গণেশের প্রতিমা থাকে তাই কলাবৌকে গণেশের বউ বলে ভুল করা হয়।

তিনি কিন্তু মোটেই গণেশের বৌ নন, বরং তাঁর মা ৷ কারণ কলা বৌ বা নবপত্রিকা আসলে মা দুর্গারই বৃক্ষরূপ ৷