24 SEPTEMBER, 2024
BY- Aajtak Bangla
বয়স বাড়লেও সবাই সবসময় তরুণ থাকতে চায়, কিন্তু আজকের লাইফস্টাইলে তা অর্জন করা একটু কঠিন হয়ে পড়েছে। মানুষ অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করছে।
আপনি একটি কথা নিশ্চয়ই শুনেছেন যে আমরা যা খাই তা আমাদের ত্বকেও প্রতিফলিত হয়। এর মানে হল যে আমাদের খাদ্যাভ্যাস আমাদের ত্বককেও প্রভাবিত করে এবং শুধু তাই নয়, আমরা যা করি তা আমাদের ত্বককে প্রভাবিত করে।
প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতিতে শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বিখ্যাত সাধক প্রেমানন্দ মহারাজ বলেছেন কীভাবে আমরা সবসময় তরুণ থাকতে পারি। তাঁর মতে, শরীর ও মনের ভারসাম্য রক্ষাই জীবনের দীর্ঘায়ু ও যৌবনের রহস্য।
প্রেমানন্দ মহারাজের মতে, যোগব্যায়াম এবং প্রাণায়াম আমাদের শরীরকে ভিতর থেকে শক্তিশালী করে। যোগব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের স্নায়ু, পেশী ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুচারুভাবে কাজ করে। সেই সঙ্গে প্রাণায়ামের অভ্যাস ফুসফুস ও হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে, যা শারীরিক শক্তি ও মানসিক শান্তি বজায় রাখে।
আপনি যদি নিয়মিত যোগব্যায়াম এবং প্রাণায়াম করেন তবে আপনার শরীরে নতুন শক্তির সঞ্চার ঘটে, যা আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য তরুণ রাখে।
সঠিক খাদ্য শারীরিক স্বাস্থ্যের ভিত্তি। প্রেমানন্দ মহারাজ বলেন, আয়ুর্বেদের নীতি অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করতে হবে। তাজা ফল, শাকসবজি এবং সাধারণ খাবার শরীরে পুষ্টি যোগায়।
আপনার এমন ডায়েটে মনোযোগ দেওয়া উচিত যা শরীরকে বিশুদ্ধ রাখে এবং অতিরিক্ত ভাজা বা রাসায়নিক খাবার এড়িয়ে চলুন। সহজ, সাত্ত্বিক ও পুষ্টিকর খাবার আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল ও মন শান্ত রাখে।
মহারাজ বিশ্বাস করেন যে মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। মন খারাপ হলে তার প্রভাব ত্বক ও শরীরে দৃশ্যমান হয়। তিনি মানসিক শান্তির জন্য ধ্যান ও আত্ম-চিন্তনকে প্রয়োজনীয় বলে বর্ণনা করেছেন।
নিয়মিত মেডিটেশন স্ট্রেস কমায় এবং শরীরের কোষগুলিকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে, এতে কম বয়সী দেখতে লাগে।
প্রেমানন্দ মহারাজ বলেছেন যে জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব থাকাও সর্বদা তরুণ থাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। আমরা যখন ধৈর্য এবং শান্তির সঙ্গে প্রতিটি পরিস্থিতি পরিচালনা করি, তখন জীবনে আসা চ্যালেঞ্জগুলিও সহজ হয়ে যায়।
ইতিবাচক মনোভাব আমাদের শরীর ও মনের উপর চাপ কমায়, যা আমাদের ভেতর থেকে সুস্থ ও উদ্যমী করে তোলে।
মহারাজজি সর্বদা একটি প্রাকৃতিক লাইফস্টাইল গ্রহণের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে শুধুমাত্র প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারি।
সতেজ পরিবেশে সময় কাটানো, সূর্যের আলো গ্রহণ এবং প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরকে পুষ্টি দেওয়া দীর্ঘ সময়ের জন্য তরুণ রাখতে সাহায্য করে।
প্রেমানন্দ মহারাজ বলেছেন যে একটি স্বাস্থ্যকর রুটিন অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম ও জেগে ওঠার জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকতে হবে। তিনি বলেন, গভীর রাতে জেগে থাকা এবং অস্বাস্থ্যকর রুটিন শরীরকে দুর্বল করে এবং অকাল বার্ধক্যের কারণ হয়।
প্রেমানন্দ মহারাজের মতে, শরীর, মন এবং আত্মার ভারসাম্য বজায় রাখার মধ্যেই চিরতরে তরুণ থাকার রহস্য নিহিত। যোগব্যায়াম, প্রাণায়াম, সাত্ত্বিক খাদ্যাভ্যাস, মানসিক শান্তি, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের মাধ্যমে আমরা দীর্ঘকাল সুস্থ ও তরুণ থাকতে পারি।
মহারাজজির বার্তা হল যে আমরা যদি আমাদের রুটিনে কিছু পরিবর্তন করে এই আদর্শগুলি অনুসরণ করি, তবে আমরা কেবল শারীরিকভাবে নয়, মানসিক এবং আধ্যাত্মিকভাবেও জীবনে তরুণ থাকতে পারি।