10 MAY, 2024

BY- Aajtak Bangla

বাংলার কোন জেলার কোন মিষ্টি বিখ্যাত? রইল তালিকা

বাঙালির শেষপাতে মিষ্টি এক চিরকালীন ঐতিহ্য। বাংলার মিষ্টির বিশ্বজোড়া নাম। শুধু রসগোল্লা নয়। বাংলার খাজানায় রয়েছে রংবাহারি মিষ্টির সম্ভার।

বাংলার এক এক জায়গার এক এক মিষ্টি বিখ্যাত। আর সেগুলি বিশ্বজয় করেছে। চলুন জেনে নিই বাংলার কোন জায়গায় কোন মিষ্টি বিখ্যাত। 

কলকাতার রসগোল্লা: মিষ্টি বললেই যার কথা প্রথম মনে পড়ে তা হল রসগোল্লা। রসগোল্লা হল মিষ্টির রাজা। ১৮৮৬ সালে বাগবাজারের নবীন চন্দ্র দাস প্রথম নরম তুলতুলে সাদা রসগোল্লা তৈরি করেন।

বর্ধমানের সীতাভোগ ও মিহিদানা: বর্ধমানের সীতাভোগ বাংলার এক সুপ্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন। এটা অনেকটা বাসমতী চালের ভাতের মত দেখতে হয়।

শক্তিগড়ের ল‍্যাংচা: ল্যাংচা এক রকমের রসের মিষ্টি। এর রং হয় কালচে বাদামী। পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের ল্যাংচা বিখ্যাত। এর প্রধান উপকরণ ময়দা, ছানা, খোয়া, চিনি।

জয়নগরের মোয়া: জয়নগরের মোয়া হল কনকচূড় ধানের খই, খেজুর গুড় ও গাওয়া ঘিয়ের তৈরী একটি অতি জনপ্রিয় মিষ্টি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জয়নগর শহর এই মিষ্টির জন্য খুব বিখ্যাত।

কৃষ্ণনগরের সরপুরিয়া ও সরভাজা: সরভাজা কৃষ্ণনগরের একটি বিখ্যাত মিষ্টি। দুধের সর ও ঘি দিয়ে তৈরি এই মিষ্টির সুনাম রয়েছে। কৃষ্ণনগরের সরপুরিয়াও বিখ্যাত ও জনপ্রিয় এক মিষ্টি।

নবদ্বীপের লালদই: নবদ্বীপের দই বাংলার আরেকটি সবচেয়ে বিখ্যাত মিষ্টি, যার উৎপত্তি নদিয়া জেলার নবদ্বীপ।

মালদার রসকদম: রসকদম বাংলার এক বিখ্যাত মিষ্টি। রসকদমের ভেতরে থাকে ছোট একটি রসগোল্লা আর তার উপর থাকে ক্ষীরের পুরু স্তর। তারও উপরে থাকে চিনি মাখানো পোস্ত দানা।

সিউড়ির মোরব্বা: বীরভূমের মোরব্বা হলো খুব ঘন চিনির রসে ডোবানো একপ্রকার মিষ্টি। যা সাধারণত কোনও সবজিকে বিশেষভাবে জারিত করে প্রস্তুত হয়। যেমন পেঁপের মোরব্বা, কুমড়োর মোরব্বা, পটলের মোরব্বা ইত্যাদি।

বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ: ম্যাচা বা মেচা বাঁকুড়া জেলার এক জনপ্রিয় মিষ্টি। একে অনেক সময় ম্যাচা সন্দেশও বলা হয়। বেলিয়াতোড়ের ম্যাচা অত্যন্ত প্রসিদ্ধ এবং সব চেয়ে উৎকৃষ্ট বলে গণ্য করা হয়। মুগডাল ও চিনি দিয়ে ম্যাচা তৈরি করা হয়।

জনাইয়ের মনোহরা: মনোহরা এক অতি জনপ্রিয় মিষ্টি। হুগলি জেলার জনাইয়ের ও মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙার মনোহরা অতি প্রসিদ্ধ।

কাঁথির কাজু বরফি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির কজু বরফি বাংলায় বেশ জনপ্রিয়। ভারতের নানা জায়গায় এই মিষ্টি পাওয়া গেলেও কাঁথির কাজু বরফির স্বাদই আলাদা।

ক্ষীরপাইয়ের বাবরসা: বাবরসা হল পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাই এলাকার একটি মিষ্টি। ময়দা, দুধ, ঘি দিয়ে তৈরি হয় বাবরসা।

গঙ্গারামপুরের ক্ষীরদ‌ই: দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের ক্ষীড়দই তার অতুলনীয় স্বাদের জন্যে বিখ্যাত।

রামপুরহাটের রসমালা‌ই: রসমালাই বাংলার অতি বিখ্যাত মিষ্টান্ন। ছোট ছোট আকারের রসগোল্লাকে চিনির রসে ভিজিয়ে তাতে জ্বাল-দেওয়া ঘন মিষ্টি দুধ ঢেলে রসমালাই বানানো হয়।

রানাঘাটের পান্তুয়া: পান্তুয়া এক রকমের ছানা দিয়ে তৈরি একটি মিষ্টি। ছানা, দুধ, ঘি ও চিনি দ্বারাই প্রধানত এটি তৈরি হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গে কাটোয়া, কালনা ও রানাঘাটের পান্তুয়া বিখ্যাত।

বেলাকোবার চমচম: বেলাকোবার চমচম এক অতি জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। জলপাইগুড়ির বেলাকোবায় এই চমচম প্রথম তৈরি হয়। চমচমের প্রধান উপাদান ছানা, ময়দা, চিনির রস ও খোয়া ক্ষীর।

চন্দনগরের জলভরা সন্দেশ: জলভরা সন্দেশ তালশাঁস আকৃতির কড়াপাকের এক বিশেষ সন্দেশ। হুগলি জেলার চন্দনগরের সূর্যকুমার মোদক এই মিষ্টির আবিষ্কর্তা।

কাটোয়ার ছানার জিলিপি: পূর্ব বর্ধমান জেলার অগ্রদ্বীপের ছানার তৈরি জিলিপি অন্যতম, যা সকলে ছানার জিলিপি নামে চেনেন।

মাদারিহাটের কমলাভোগ: রসগোল্লার থেকে আকারে সামান্য বড় কমলাভোগ নামের কারণ এই মিষ্টিতে কমলালেবু ব্যবহার করা হয়। আসল কমলালেবুর গন্ধের কমলাভোগ মিষ্টির স্বাদ পেতে হলে আসতেই হবে মাদারিহাটে।