19 AUGUST, 2024
BY- Aajtak Bangla
ইলিশ মাছ খেতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। ঠিক তেমনি নোনা ইলিশ বা ইলিশ মাছের শুঁটকি খেতেও পছন্দ করেন অনেকেই।
চমৎকার নোনা স্বাদের ইলিশ ভর্তা খেতে খুবই সুস্বাদু। কেবল খেতেই সুস্বাদু নয় শুঁটকির রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা।
সম্প্রতি গবেষণায় জানা গেছে, নিয়মিত শুঁটকি মাছ খায় এমন ব্যক্তিদের ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর, যক্ষ্মা এই অসুখগুলো সহজে হয় না। এতে আয়রণ, আয়োডিনের মাত্রা বেশি থাকার জন্য দেহে রক্ত বাড়ায়, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে করে শক্তিশালী, শরীরের হরমোনজনিত সমস্যাকে রাখে দূরে। শুঁটকি মাছ দেহে নুনের ঘাটতিও পূরণ করে।
এখন ইলিশ মাছে ভরা মরশুম। বাজারে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। তাই ইলিশ মাছ শুঁটকি তৈরি করার এটাই উপযুক্ত সময়। আপনি চাইলে বাড়িতেই তৈরি করে ফেলতে পারেন। এমনকি নিজের তৈরি এই শুঁটকি এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করে খেতে পারবেন।
প্রথমে ইলিশের আঁশ ছাড়িয়ে মাছের ভেতরের কানকো বা ফুলকো বের করে নিন। পাখনা ছেঁটে শুধু লেজটুকু রাখুন। এবার পুরো মাছটাকে খুব ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ১ ঘণ্টার জন্য জল ঝরতে দিন। কিচেন টিস্যু দিয়ে বাড়তি পজল শুষে নিন। খেয়াল রাখবেন ইলিশ মাছে কোনো জল থাকা চলবে না। চিপে চিপে জল বের করে নিতে পারেন।
একটি পাত্রে হলুদের গুঁড়ো এবং সবটুকু সামুদ্রিক নুন মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করুন। জল ঝরানো হয়ে গেলে মাছের গায়ে খুব ভালোভাবে হলুদ-নুনের মিশ্রণটি মেশান। যে কৌটায় মাছ সংরক্ষণ করবেন সেই কৌটার নীচে নুন দিয়ে একটা প্রলেপ তৈরি করুন। তারপর এক লেয়ার মাছ দিয়ে দিন।
মাছ দেওয়া হয়ে গেলে আবার এক লেয়ার নুন দিয়ে দিন। মনে রাখবেন নুন বেশি পরিমাণে দিতে হবে, না হলে মাছ নষ্ট হয়ে যাবে। এভাবে একদম শেষ লেয়ার মাছ দেওয়ার পরে উপরে নুন দিয়ে দিন।
এবার কৌটার মুখ ভালো করে সিল করে দিন, যাতে বাতাস ঢুকতে না পারে। এই পাত্র ঘরের অন্ধকার ও ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষণ করুন। মাছ ভালো থাকবে অনেক দিন। তবে নুন দেওয়া মাছ এক মাসের পর থেকে খেতে ভালো লাগে।
যখন দেখবেন বেশির ভাগ নুন জল হয়ে গেছে তখন নুনের জল ছেঁকে মাছটিকে তুলে আরো একবার জল ঝরতে দিন ২ ঘণ্টার জন্য। এরপর জল ঝরে গেলে মাছটিকে একটা বেতের ডালায় রেখে দু'দিন খুব কড়া রোদে শুকোতে দিতে হবে।
শুকাতে দেওয়ার প্রক্রিয়াটা একটু জটিল। ঘরের পুরনো মশারি বা নেট দিয়ে পাত্রটিকে ভালোভাবে ঢেকে রশি পাকিয়ে মুখটি বেঁধে দিতে হবে। এবার ৪ থেকে ৫টি কালো মুরগির পালক মাছ শুকনোর স্থানে দড়ি বেঁধে ঝুলিয়ে দিন। এতে করে কাক বা পাখিরা কাছে আসবে না।
২ বা ৩ দিন রোদে দেওয়ার পর একটি পুরনো মাটির পাত্রে নোনা মাছ রেখে মুখটা পরিচ্ছন্ন কাপড় দিয়ে বেঁধে ঘরের যে স্থানে রোদ আসে এমন শুকনো কোনায় রেখে দিতে হবে।
সারা বছর সংরক্ষণ করতে চাইলে ইলিশের শুঁটকি ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। সেক্ষেত্রে বাদামি রঙের কাগজের ঠোঙাতে পেঁচিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে। যদি আপনি ফ্রিজ ছাড়া শুঁটকি মাছ সংরক্ষণ করতে চান, তাহলে মাঝে মাঝে কড়া রোদে দিয়ে তারপরে সংরক্ষণ করবেন।
প্লাস্টিক বা পলিথিনে সংরক্ষিত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই প্লাস্টিক বা পলিথিনে শুঁটকি সংরক্ষণ থেকে বিরত থাকুন।
ইলিশ শুঁটকি রান্না করার আগে হালকা গরম জলে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে বারবার পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিলে ঝুঁকি কমে।