BY- Aajtak Bangla
20 SEP, 2024
'জুজুর ভয়', এই জুজু কে? অনেক শিক্ষিত লোকও জানেন না
জুজু’ ছোটদের মনে এক অজানা আতঙ্ক। জুজুর ভয় দেখিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো ইত্যাদি নানা অসম্ভব কাজ বাবা-মা করে এসেছেন। কিন্তু আপনাদের মনে কি কখনও প্রশ্ন এসেছে কি যে এই জুজু কী বা কে?
আসলে জুজুর ভয়ের প্রাচীনত্ব সেই জাতকের গল্পগুলির সময় থেকেই।
বিশ্বন্তর জাতকের গল্পে এক বুড়ো রাগী ব্রাহ্মণের উল্লেখ আছে, যার নাম জুজক। কিন্তু জুজকের নামে ভয় দেখানোর রীতি এল কীভাবে? তা জানতে এই জাতকের গল্পটির অংশবিশেষ তো জানতেই হবে।
রাজা বিশ্বন্তর মহাদানী ছিলেন। নির্বান লাভ করার জন্য তিনি নিজের সমস্ত জিনিস একে একে দান করে দেন। একসময় সব কিছু দান করে দিয়ে রাজা তাঁর স্ত্রী ও শিশু পুত্র-কন্যা-সহ জঙ্গলের আশ্রমে বাস করতে থাকেন।
এদিকে জুজক নামক এক গরিব ব্রাহ্মণের কম বয়সী সুন্দরী স্ত্রী ছিলেন, যে তাঁর সকল কাজ করে দেওয়ার জন্য ব্রাহ্মণকে লোক জোগাড় করে দেওয়ার দাবি জানান।
জুজক বিশ্বন্তরের দান করার কথা জানতে পেরে তাঁর কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়। রাজার কাছে জুজক তাঁর শিশু পুত্র-কন্যাকে দান চান।
রাজা উদাত্ত চিত্তে দান করলেন। কিন্তু রাজকুমার ও রাজকুমারী জুজকের নিষ্ঠুর স্বর ও দান চাইবার কারণ শুনে প্রথমে গিয়ে কুটিরের পিছনে গিয়ে লুকায়। তারপর বনের নিবিড় গুল্মের মধ্যে গিয়ে লুকিয়ে পড়ে।
তবুও তাদের মধ্যে ভয় যায় না, ‘এই বুঝি জুজক এসে ধরল’। তাই কাঁদতে কাঁদতে নানা দিকে ছোটাছুটি করতে করতে শেষে পুকুরে জলে নেমে পদ্মপাতা দিয়ে নিজেদের ঢেকে আড়াল করল।
রাজা তখন পুত্র জালীকুমার ও কন্যা কৃষ্ণাজিনকে পুকুর থেকে খুঁজে নিয়ে আসেন ও তাদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে ব্রাহ্মণের হাতে অর্পণ করেন।
বলাবাহুল্য, পথের মধ্যেও ব্রাহ্মণ বাচ্চাগুলির উপর প্রভূত অত্যাচার করে। আর এই কারণেই ‘জুজুক’ যা অপভ্রংশে ‘জুজু’কে বাচ্চারা ভয় পায়।