23 June, 2024
BY- Aajtak Bangla
আমাদের মধ্যে অনেকেই নিয়মিত সর্ষের তেলে রান্না করেন। কিন্তু তারপরও তাঁদের মনে বাসা বেঁধে থাকে একটা প্রশ্ন। আর সেই প্রশ্ন হল, এই তেল খেলে হার্টের ক্ষতি হবে নাকি আদতে মিলবে উপকার?
যে কোনও সাধারণ পদকে অসাধারণে উন্নীত করতে পারে খাঁটি সর্ষের তেল। তাই তো সর্ষে ইলিশ থেকে শুরু করে পটলের কোপ্তা, খাসির মাংস রাঁধার সময় আজও বাঙালি এই তেলের শরণাপন্ন হয়। নইলে যে এসব পদের মান থাকে না।
তবে এহেন বহুল ব্যবহৃত সর্ষের তেল নিয়েও কম বিতর্ক নেই। এই যেমন একদল মানুষ মনে করেন সর্ষের তেল হার্টের জন্য ক্ষতিকর। অপরদল আবার এই যুক্তি মেনে নিতে নারাজ। বরং তাঁদের কাছে এই তেলই হার্টের জন্য সেরার সেরা।
তাই এই দ্বন্দ্বের অবসান করার জন্য ঝটপট জেনে নিন সর্ষের তেল হার্টের জন্য ভালো না খারাপ। সর্ষের তেল হার্টের জন্য উপকারী না ক্ষতিকর?
এই প্রশ্নের উত্তরে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে হার্টের ক্ষতি করে সর্ষের তেল। তবে একাধিক গবেষণা সামনে এসেছে, যাতে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে যে সর্ষের তেল হার্টের তেমন একটা ক্ষতি করে না। তাই সর্ষের তেল যে হার্টের ক্ষতি করে, এই ভাবনা মাথা থেকে বের করে দেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
সর্ষের তেলে রয়েছে মোনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। আর এই উপাদান কিন্তু শরীরে ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল কোলেস্টেরল লেভেল বাড়ায়। যার ফলে হার্ট থাকে সুস্থ-সবল।
তবে এই তেলে কিছুটা পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাটও থাকে। তাই সর্ষের গুণগান শুনে আবার রান্নায় বেশি বেশি এই তেল ব্যবহার করবেন না। বরং পরিমিতি রেখে সর্ষের তেল ব্যবহার করুন। তাতেই উপকার পাবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাঙালি বহুকাল ধরে সর্ষের তেল খেয়েই দিন কাটাচ্ছে। কিন্তু তারপরও আজ থেকে কয়েক দশক আগেও বাঙালির শরীরে এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরল ছিল ৬০-এর মতো। তার ফলে সেই সময় হার্টের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ছিল অনেকটাই কম। তবে আজকে যদি টেস্ট করা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে বেশিরভাগেরই এইচডিএল রয়েছে ৪০-এর আশপাশে।
আর এভাবে ভালো কোলেস্টেরল কমে যাওয়ার নেপথ্য রয়েছে আমাদের অত্যধিক ফাস্টফুড প্রীতি। তাই হার্টের অসুখের জন্য সর্ষের তেলকে দোষ না দিয়ে, বাইরের খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমাতে হবে। তাতেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।
রোজ রোজ সিদ্ধ খাবার খাওয়া কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। তবে ভাজা খাবার খেতে চাইলে ব্যবহার করতে হবে রাইস ব্র্যান অয়েল। তাতে বিপদের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমবে। তবে ভাজা মানে কিন্তু ড্রিপ ফ্রাই নয়। বরং হালকা গরম তেলে অল্প করে তরিতরকারি ভেজে নিন। তারপর তা দিয়ে বানিয়ে ফেলুন সুস্বাদু পদ। তাতেই স্বাস্থ্য এবং স্বাদ– দুইই বজায় থাকবে।
হার্টের অসুখ থেকে বাঁচতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত এক্সারসাইজ করতে হবে। সেক্ষেত্রে নিজের সময় মতো দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম হল মাস্ট। আর যাঁদের ব্যায়ামে অনীহা রয়ছে, তাঁরা নিয়মিত হাঁটুন। এই কাজটা সেরে ফেললেই কমবে কোলেস্টেরল, নিয়ন্ত্রণে থাকবে সুগার এবং প্রেশার। ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমবে বৈকি!