23 OCTOBER,  2024

BY- Aajtak Bangla

রাতে ঘুমের মধ্যে আপনার  বাতকর্মে অতিষ্ঠ সঙ্গী, জানুন  প্রতিকার

বাতকর্ম  বা Fart করে থাকি আমরা প্রত্যেকেই। অনেকের কাছেই  হাসির খোরাক হলেও এটি একটি সাধারণ শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া যার মাধ্যমে পাচনতন্ত্রে উৎপন্ন অতিরিক্ত গ্যাস মলদ্বার থেকে নির্গত হয়।

 আমরা যে খাবার খাই, তার হজম প্রক্রিয়ার সময় পাচন তন্ত্রে গ্যাস উৎপন্ন হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বৃহদন্ত্রে গ্যাস তৈরি হয়ে থাকে। কারণ যে কার্বোহাইড্রেটগুলি ক্ষুদ্রান্ত্র হজম করতে পারে না, তা বিভিন্ন ব্যাক্টিরিয়া মিলে বৃহদন্ত্রে হজম করে থাকে।

কিছু ব্যাক্টিরিয়া কিয়দংশ গ্যাস গ্রহণ করে। বাকি গ্যাস Fart রূপে মলদ্বার হয়ে বা ঢেকুর রূপে মুখ থেকে নির্গত হয়। কোনও ব্যক্তির শরীর থেকে যদি এই গ্যাস নির্গত হতে না-পারে, তা হলে ব্যথা হয় এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে গ্যাস জমে যায়।

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের কারণে সাধারণত গ্যাস হয়। বিনস, লেগামস, ফল, সবজি, গোটা শস্য ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার থাকে। এই খাবারের কারণে শরীরে গ্যাসের পরিমাণ বাড়লেও পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে ও রক্তে শর্করা এবং কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফাইবার অত্যন্ত জরুরি উপাদান।

ঘুমের মধ্যে বাতকর্ম করার সম্ভাবনা থাকে। কারণ এ সময় গ্যাস সৃষ্টি হলে অ্যানাল স্ফিংটার সামান্য স্বস্তি পায় এবং তখন অনিচ্ছাকৃত ভাবে কিছু গ্যাস বেরিয়ে পড়ে।

গড় সংখ্যক ব্যক্তি দিনে ৫ থেকে ১৫ বার বাতকর্ম করে থাকেন। আবার যাঁদের হজমের সমস্যা থাকে, তাঁদের বাতকর্মের সংখ্যা এর চেয়েও বেশি হয়।

ক্রোনস ডিসিস, ল্যাকটোস অসহিষ্ণুতার মতো কিছু কিছু খাবারের প্রতি অসহিষ্ণুতা, সিলিয়ার ডিসিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, বাওয়েল ব্যাক্টিরিয়ায় পরিবর্তন, ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোমের মতো সমস্যা অতিরিক্ত গ্যাস সৃষ্টির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

আবার হরমোনাল চেঞ্জ, গর্ভধারণ বা ঋতুস্রাবের কারণেও মহিলাদের অতিরিক্ত গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে। নিরামিষাসী বা ভেগানদের মধ্যেও অধিক গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্যবস্তু স্বাস্থ্যের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এটি গ্যাস সৃষ্টি করে থাকে।

জীবনযাপন প্রণালীতে সামান্য পরিবর্তন করে ঘুমের মধ্যের বাতকর্মকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন—

 ফাইবার সমৃদ্ধ, চিনির বিকল্প, দুগ্ধজাত, ভাজা বা মেদবহুল খাবার-দাবার কয়েক সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখুন। তার পর ঘুমানোর সময় বাতকর্মের প্রবণতা কমলে ধীরে ধীরে এগুলি নিজের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করুন।

 কার্বোনেটেড পানীয় বন্ধ করে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন।

 ফাইবার সাপ্লিমেন্ট নিয়ে থাকলে নিজের চিকিৎসককে বলে তার পরিমাণ কম করান বা কম গ্যাস উৎপন্ন করতে পারে এমন কোনও ফাইবার সাপ্লিমেন্ট দিতে বলুন।

ঘুমোতে যাওয়ার বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে রাতের শেষ খাবার খান। রাতের শেষ খাবার ও ঘুমের মধ্যে সময়ের ব্যবধান থাকলে শরীর ঘুমের মধ্যে কম পরিমাণ গ্যাস উৎপন্ন করবে।

 ধূমপান বন্ধ করুন। ধূমপানের ফলে শরীরে অধিক পরিমাণে বায়ু প্রবেশ করে, যার ফলে গ্যাস উৎপন্ন হয়।

 এমন কিছু ওষুধ আছে যা বিনস বা সবজির কার্বোহাইড্রেট ভেঙে সহজপাচ্য করে তুলতে পারে, আবার কিছু কিছু এমন ওষুধও আছে যা গ্যাসের বুদবুদ ভেঙে দেয়। এগুলির সাহায্যে পাচনতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে গ্যাস নির্গত হয়ে যায় এবং বাতকর্মের প্রয়োজনীয়তা পড়ে না।