3 May, 2024
BY- Aajtak Bangla
ল্যাংচা বলতেই যে জায়গার কথা মনে পড়ে তা হল পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়। শক্তিগড় মানেই ল্যাংচা, আর ল্যাংচা মানেই শক্তিগড়।
কিন্তু কখনও কি আপনার মনে প্রশ্ন আসে বাঙালির অন্যতম সেরা মিষ্টির নাম ল্যাংচা হল কেন? এই মিষ্টি কীভাবে তৈরি হল?
ল্যাংচা হল কালো বা বাদামী রঙের একটি রসের মিষ্টি। ময়দা, খোয়া, চিনি, ক্ষীর দিয়ে বানানো হয় এই মিষ্টি।
ল্যাংচার উৎপত্তি ও নামকরণ নিয়ে মতভেদ আছে। বিশিষ্ট সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যালের রূপমঞ্জরী উপন্যাসে ল্যাংচার উৎপত্তির ইতিহাস খোঁজার করার চেষ্টা করেছেন।
কৃষ্ণনগরের রাজা তিলকচাঁদের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বর্ধমানের রাজপুত্রের। বিয়ের কিছুদিন পর রাজকুমারী অন্তঃসত্ত্বা হলে কৃষ্ণনগরের রাজা কন্যাকে নিয়ে আসেন নিজের বাড়িতে।
এদিকে বাপের বাড়িতে কিছুদিন থাকার পরই মুখের রুচি হারিয়ে ফেলেন রাজকন্যা। মেয়ের এই অবস্থা দেখে রাজা পড়লেন মহা দুশ্চিন্তায়।
একদিন রাজকন্যা নিজেই জানালেন যে তিনি বর্ধমানে শ্বশুরবাড়ির কাছে এক ময়রার হাতে তৈরি কালো রঙের ভাজা মিষ্টি রসে ডুবিয়ে খেয়েছিলেন। সেই মিষ্টি খেলেই নাকি রুচি ফিরবে।
কিন্তু তাঁর কন্যা সেই ময়রার নাম বলতে পারে না। শুধু বলেছিলেন,ময়রাটির একটি পা ছিল খোঁড়া। রাজা ময়রাকে খুঁজে আনতে বর্ধমানে লোক পাঠান।
কৃষ্ণনগরের রাজবাড়িতে সেই ময়রা এসে রাজকন্যাকে সেই মিষ্টি বানিয়ে খাওয়ালেন। রুচি ফিরল রাজকন্যার। মিষ্টির স্বাদে মজে গেলেন রাজাও।
এদিকে, যে ময়রা মিষ্টি বানিয়েছিলেন তিনি ছিলে খোঁডৃ়া, তিনি লেংচে হাঁটতেন। বলা হয় সেই কারণে ময়রার লেংচে চলা থেকে মিষ্টির নাম হয় ল্যাংচা।
কৃষ্ণনগর থেকে বর্ধমানের ফিরে শক্তিগড়ের ল্যাংচা দোকান শুরু করেন ওই ময়রা। সেখান থেকেই আজ শক্তিগড় হয়ে উঠেছে ল্যাংচার আঁতুড়ঘর।
এদিকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে ল্যাংচার জিআই ট্যাগ পাওয়ার জন্য রাজ্য সরকার চেষ্টা করছে। এর আগে বর্ধমানের সীতাভোগ ও মিহিদানা জিআই ট্যাগ পেয়েছে।
একটি জিআই ট্যাগ একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক অবস্থান বা উৎস (যেমন, একটি শহর, অঞ্চল বা দেশ) এর সঙ্গে সম্পর্কিত নির্দিষ্ট পণ্যগুলিতে ব্যবহৃত একটি চিহ্ন।