16 JULY, 2024
BY- Aajtak Bangla
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, ‘লাগে টাকা, দেবে গৌরী সেন’— জানেন নিশ্চয়ই! কিন্তু কখনও কি ভেবেছেন কে এই গৌরী সেন?
কারও টাকার প্রয়োজন হলে তিনি কেন দিতে যাবেন? কীভাবে এই প্রবাদের সৃষ্টি হল বাংলায়? গৌরী সেন মহিলা না পুরুষ? গৌরী সেন কি কাল্পনিক চরিত্র নাকি সত্যিই আছেন?
এই গৌরী সেন কোনও কাল্পনিক চরিত্র নয়, পুরনো কলকাতায় সত্যিই একজন ছিলেন। তাঁর পুরো নাম গৌরীশঙ্কর সেন (মতান্তরে গৌরীকান্ত সেন)। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, ইনি কোনও মহিলা নন।
weight loss
ইতি শুরু থেকে কলকাতার বাসিন্দাও ছিলেন না। ষোড়শ শতাব্দীর শেষে হুগলি শহরের অন্তর্গত (সে কালে) বালিতে (মতান্তরে বহরমপুরে) অভিজাত সূবর্ণ বণিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন গৌরী সেন। তাঁর জন্মের সালটা সম্ভবত ১৫৮০।
শোনা যায়, পারিবারিক আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার হাত ধরে কাজের সূত্রে কলকাতায় আসেন গৌরীশঙ্কর সেন। কলকাতায় এসে বৈষ্ণব চরণ শেঠ নামে আর এক বিত্তবান ব্যবসায়ীর সঙ্গে অংশীদারিতে ব্যবসা শুরু করেন।
পুরনো কলকাতার আদি বাসিন্দা বড়বাজারের বৈষ্ণব চরণ শেঠ আর গৌরীশঙ্কর সেন যৌথভাবে একটা দস্তা-বোঝাই জীর্ণ জাহাজ নিলামে কেনেন। পরে যাচাই করে দেখা যায়, দস্তা নয়, জাহাজ-বোঝাই রুপো কিনেছেন দস্তার দামে।
ব্যস! রাতারাতি কপাল খুলে যায় গৌরীশঙ্কর সেনের। ভাগিদারির অংশে পাওয়া রুপোর দামও সে যুগে কয়েক কোটি টাকা! বৈষ্ণব চরণ শেঠ এই অপ্রত্যাশিত সৌভাগ্য গৌরীর কপাল জোরে হয়েছে বলে বিশ্বাস করে বাড়তি সমস্ত টাকা তাঁকেই দিয়ে দেন।
গৌরী সেন এই অকল্পনীয় ঐশ্বর্য গরীব-দুঃখী বা যাঁদের অর্থের প্রয়োজন, তাঁদের মধ্যেই বিলিয়ে দেবেন বলে স্থির করেন। শোনা যায়, আনুমানিক ১৫৯৯-১৬০০ সাল থেকেই দান-ধ্যান শুরু করেন গৌরীশঙ্কর সেন।
রাতারাতি কোটিপতি তো অনেকেই হয়েছেন, লাখা লাখ টাকা দান করেও সুনাম কামিয়েছেন কেউ কেউ। কিন্তু গৌরী সেনের মতো আর কে করতে পেরেছে বলুন! সেই আমল থেকেই লোকে বলা শুরু করেছে ‘লাগে টাকা, দেবে গৌরী সেন’