BY- Aajtak Bangla
31 JULY, 2023
বাঙালির সঙ্গে চায়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠার ইতিহাস এখনও জানান দেয় দমদম রেল স্টেশনের একটি শতাব্দী প্রাচীন বিজ্ঞাপন। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের একটি চায়ের দোকানেই এই বিজ্ঞাপনটি।
লোকাল ট্রেনে যাঁরা নিয়মিত ভিড় ঠেলে দমদম স্টেশন ছুঁয়ে যাতায়াত করেন, তাঁরা অনেকেই হয়তো দেখেছেন এই বিজ্ঞাপনটি, কিন্তু হয়তো জানেন না এর পেছনের ইতিহাস।
এক শতাব্দী পার করে ব্রিটিশ আমলের একটি চায়ের বিজ্ঞাপন আজও রয়েছে দমদম রেল স্টেশনে! এই বিজ্ঞাপন দেখলেই বোঝা যায় যে, চা আর বাঙালির সম্পর্কটাও গড়ে তোলে ব্রিটিশরাই।
এ দেশে ব্রিটিশদের চায়ের কারবার বাড়়াতেই একশো বছরেরও বেশি আগে চা পানের গুরুত্ব বোঝাতে দমদম রেল স্টেশন সহ বিভিন্ন জায়গায় সে সময় এই বিজ্ঞাপন দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল।
১৮৯২ সালে চায়ের উৎপাদন, ব্যবসা ও তার রপ্তানির জন্য ‘অসম বেঙ্গল রেলওয়ে’র পক্ষ থেকে রেল লাইন পাতার কাজ শুরু হয়।
অবিভক্ত বাংলার কুমিল্লা (বর্তমানে বাংলাদেশের একটি জেলা-মহানগরী) থেকে শুরু করে ওই রেল লাইন পাতা হয়েছিল তিনসুকিয়া, গুয়াহাটির দিকে।
সে সময় চা বাগানে মালিক শ্রেণির অমানসিক অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে একজোটে প্রতিবাদে সামিল হয় কয়েকশো চা বাগান শ্রমিক। লাগাতার আন্দোলনে ব্রিটিশদের চায়ের ব্যবসা প্রায় লাটে ওঠে!
এরপর বন্দুকের জোরে চা বাগানের শ্রমিকদের আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করে ব্রিটিশরা। ১৯২১ সালে, অবিভক্ত বাংলার ফরিদপুরের গোয়ালন্দ স্টিমার ঘাটে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চলে।
শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোয় যেন এই আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢেলে দেয়! আন্দোলনের চোটে যখন চায়ের কারবার প্রায় লাটে উঠতে বসেছে, তখন এই বিজ্ঞাপনটি দেওয়া হয়েছিল।
দমদম স্টেশন হয়ে যাঁদের নিত্যদিনের যাতায়াত, তাঁরা এখনও ২-৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে এগোলেই চোখে পড়বে একটি পুরনো চায়ের দোকানের কাঠের সেলফের উপরেই দেখতে পাবেন এই বিজ্ঞাপনটি।