BY- Aajtak Bangla
15 AUGUST, 2023
তখনও ভারত স্বাধীন হয়নি। বিদেশী জিনিস বর্জন করে স্বদেশী জিনিসপত্রের ব্যবহারে জোর দিয়ে তখন দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে।
সেই সময় স্বাধীনতা সংগ্রামী ননীগোপাল মৈত্র তাঁর ভাই শঙ্করাচার্য মৈত্রের সঙ্গে স্বদেশী কলমের কালি তৈরির উদ্যোগ নেন। ননীগোপাল ছিলেন পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর।
দুই ভাইয়ের উদ্যোগে বিদেশী ঝর্ণা কলমের কালি বর্জন করে স্বদেশী কালি তৈরির লক্ষ্যেই ১৯৩৪ সালে অবিভক্ত বাংলার রাজশাহীতে (বর্তমানে বাংলাদেশে) পথ চলা শুরু হয় সুলেখা’র।
শোনা যায়, বেঙ্গল কেমিক্যালের প্রধান কেমিস্ট সতীশচন্দ্র সামন্তকে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় স্বদেশী কলমের কালি তৈরিতে সাহায্য করতে বলেন।
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের গবেষণাগারে সৃষ্টি কালি তৈরির ফর্মুলা সতীশচন্দ্র তুলে দেন ননীগোপাল মৈত্রর হাতে। তারপর গোটা মিত্র পরিবার ঝাঁপিয়ে পড়েন এই স্বদেশী কলমের কালি তৈরি ও বিক্রির কাজে।
‘সুলেখা’ নামকরণের আগে এই কালিকে লোকে প্রফেসর মিত্রর কালি বলেই চিনত। শোনা যায়, ‘প্রফেসর মিত্রর কালি’র নাম ‘সুলেখা’ রেখেছিলেন সয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
১৯৩৪ সালে রাজশাহীতে ঘরোয়া ভাবে তৈরি হওয়া ‘সুলেখা’ কালির চাহিদা যখন বাড়তে শুরু করে তখন উৎপাদন বাড়াতে ১৯৩৮ সালে উত্তর কলকাতার বৌবাজার এলাকায় একটা কারখানা খোলা হয়।
১৯৪৬ সালে যাদবপুর এলাকায় সুলেখার কারখানা স্থানান্তরিত হয়। ‘সুলেখা’ কালির কারখানার নামেই এই এলাকার নাম ‘সুলেখার মোড়’ বা ‘সুলেখা’ হয়ে যায়।
বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে একটা সময় দেশজুড়ে সুলেখা কালির একচেটিয়া ব্যবসা চলেছে রমরমিয়ে। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদেও সুলেখা কালির কারখানা খোলা হয়।
সুলেখা কালির কথা বাঙালি পড়েছে বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক, শিশু সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের কলমেও। সুলেখা কালির দোয়াত ধরা পড়েছে তাঁর তৈরি সিনেমার কয়েকটি দৃশ্যেও।