26 June, 2023
কন্নড় পরিচালক প্রশান্ত নীলের KGF সিরিজের দুটি ছবি সারা দেশেই বেশ সারা জাগিয়েছিল। তবে এই ছবিতে যে সোনার খনি দেখানো হয়েছে, সেটি বাস্তবে রয়েছে কর্ণাটকের কোলারে।
বেঙ্গালুরুর থেকে প্রায় ১০০ কিমি দূরে অবস্থিত কোলার গোল্ড ফিল্ড (KGF) হল বিশ্বের দ্বিতীয় গভীরতম সোনার খনি, প্রথমটি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের দক্ষিণ-পশ্চিমে পোনেং-এ অবস্থিত।
ব্রিটিশ সরকারের লেফটেন্যান্ট জন ওয়ারেন চোল রাজবংশের কিংবদন্তি কাহিনি শুনে এখানে এসে ১৮০৪ সাল থেকে ১৮৬০ সাল পর্যন্ত গ্রামবাসীদের সাহায্যে এখান থেকে প্রায় ৫৬ কেজি সোনা বের করেছিলেন।
এরপর মাইকেল ফিটজেরাল্ড লেভালি, একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ সেনা ১৮৭১ সালে সোনা নিয়ে কোলারে গবেষণা শুরু করেন। ১৮৭৩-এ মহীশূরের মহারাজার কাছে কোলারে খনন করার লাইসেন্স চান তিনি।
১৮৭৫ সালে লেওয়েলি মহীশূরের মহারাজার কাছ থেকে এই খনির সোনা তোলার লাইসেন্স পান। কিন্তু পর্যাপ্ত পুঁজি না থাকায় এই কাজ লেওয়েলির হাত থেকে ব্রিটিশ কোম্পানি জন টেলর অ্যান্ড সন্সের হাতে চলে যায়।
জন টেলর অ্যান্ড সন্স ১৮৮০ সালে খনির কার্যক্রমের দায়িত্ব নেন। 'স্টেট অফ দ্য আর্ট' মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং ইকুইপমেন্ট বসানো হয়।
১৮৯০ সালে জন টেলর অ্যান্ড সন্স দ্বারা স্থাপিত সরঞ্জামগুলি দিয়ে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সোনা খোঁজা ও তোলার কাজ চলেছিল। ১৯০২ সালে ভারতের ৯৫% সোনা পাওয়া যেত এই KGF থেকেই।
এই খনির দৌলতে ১৯০৫ সালে ভারত সোনা উৎপাদনে বিশ্বে ষষ্ঠ স্থানে পৌঁছে যায়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে ১২০ বছরের সোনার খোঁজ আর খননে কোলারের সোনার খনিতে প্রায় ৬০০০ জনের মৃত্যু হয়।
১৯৫৬ সালে স্বাধীনতার পর ভারত সরকার এই খনির দায়িত্ব নিয়ে খনির বেশিরভাগ অংশের মালিকানা কর্ণাটক সরকারের হাতে তুলে দেয়। প্রচুর লোকসানের পর কোলার গোল্ড ফিল্ড ২০০১ সালে বন্ধ হয়ে যায়।