scorecardresearch
 

অপহরণের অভিযোগ ১১ তৃণমূল নেতাকে! মালদায় তুমুল উত্তেজনা

গায়েব তৃণমূলের ১১ পঞ্চায়েত সদস্য। অভিযোগ তাঁদের অপরহরণ করা হয়েছে। অভিযোগের তির খোদ শাসকদলেরই দিকে। আর অভিযোগটি তুলেছে তৃণমূলের অপর গোষ্ঠী। বিডিও অফিস থেকে অনাস্থা অনার আগেই ১১জন সদস্যকে অস্ত্র হাতে অপহরণের অভিযোগ তৃণমূলেরই অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।

Advertisement
বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের
হাইলাইটস
  • অপহরণের অভিযোগ ১১ তৃণমূল নেতাকে
  • মালদায় তুমুল উত্তেজনা
  • গোটা ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ বিজেপির

গায়েব তৃণমূলের ১১ পঞ্চায়েত সদস্য। অভিযোগ তাঁদের অপরহরণ করা হয়েছে। অভিযোগের তির খোদ শাসকদলেরই দিকে। আর অভিযোগটি তুলেছে তৃণমূলের অপর গোষ্ঠী। বিডিও অফিস থেকে অনাস্থা অনার আগেই ১১জন সদস্যকে অস্ত্র হাতে অপহরণের অভিযোগ তৃণমূলেরই অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূল পরিচালিত দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাচোল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুরে। প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে গিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমালের ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। অনাস্থার কাগজপত্র পেশ করার আগেই ব্লক অফিস থেকেই অপহরণ হয় তৃণমূলের ওই ১১ জন পঞ্চায়েত সদস্য বলে অভিযোগ। আর এই অপহরণের ঘটনা পিছনে দলেরই পঞ্চায়েত প্রধান যুক্ত রয়েছে বলে তৃণমূলের আরেক গোষ্ঠীর অভিযোগ। আর তারই জেরে ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আর এতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। গোটা ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ বিজেপির। 

হরিশ্চন্দ্রপুর ২  ব্লক অফিস সংলগ্ন এলাকার দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাইকোর্টের নির্দেশে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসার প্রস্তুতি হিসেবে পঞ্চায়েত সদস্যরা ব্লক অফিসে যান। এদিন সেখানে ১২ জন বিক্ষুব্ধ সদস্যে স্বাক্ষরের ভেরিফিকেশন করার কথা ছিল। অভিযোগ, এমনই সময় হরিশ্চন্দ্রপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জুবেদা বিবির স্বামী তথা এলাকার যুব তৃণমূল নেতা আশরাফুল হকের নেতৃত্বে প্রায় ৫০-৬০ জনের একটি সশস্ত্র দল ব্লক চত্বরে এসে বিক্ষুব্ধ ওই ১২ জন পঞ্চায়েত সদস্যকে অপহরণ করে। এরমধ্যে বিক্ষুব্ধ সদস্য ও আশরাফুল বাহিনীর মধ্যে ব্লক চত্বরেই হাতাহাতি বেধে যায়। গ্রাম পঞ্চায়েতের অনাস্থাকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লক অফিস সংলগ্ন এলাকায়। এরমধ্যে ওই বিক্ষুব্ধ ১২ জন সদস্যের মধ্যে ১১ জনকে অপহরণ করে আশরাফুল বাহিনী বলে অভিযোগ। একজন কোনরকমে পালিয়ে যায়। 
           
 ঘটনার পরপরই বিক্ষুব্ধ মেম্বারদের সঙ্গে আসা তৃণমূল সমর্থকরা ব্লক চত্বর থেকে ফিরে গিয়ে লোহা ব্রিজ এলাকায় অবরোধ চালায়। পুলিশের গাড়ি আটকে চলে বিক্ষোভ, এমনকি এই ঘটনায় পুলিশের সামনে চলে দুই পক্ষের বিরোধ। পুলিশের সঙ্গে ধস্তা-ধস্তি শুরু হয়ে যায় বলে অভিযোগ, পরে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা আইসি সঞ্জয় দাসের নেতৃত্বে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২০টি আসন রয়েছে। তৃণমূল পরিচালিত দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান নজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে দলেরই আরেক সদস্য পিন্টু কুমার যাদব সহ ১২ জন অনাস্থা আনার জন্য ব্লক প্রশাসনকে স্বাক্ষর সমূহ অভিযোগ জানায়। মঙ্গলবার ছিল ওই ১২ জন সদস্যের স্বাক্ষরের ভেরিফিকেশন। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চরম গোলমাল বেঁধে যাওয়ায় চরম উত্তেজনা পরিস্থিতি তৈরি হয়।

Advertisement

এদিকে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান নাজিবুর রহমান গোষ্ঠীর পাল্টা অভিযোগ, প্রধানকেও নাকি অপহরণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে। তবে প্রকাশ্য দিবালোকে তৃণমূলের শাসকদলের যুব নেতার হাতে তৃণমূলেরই  একাধিক পঞ্চায়েত সদস্য অপহরণের ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছে হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূল নেতারা। এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার কথা জানিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ। হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও বিজয় গিরি বলেন," দৌলত নগর পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গে হাই কোর্ট রায় দেয়। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী ভেরিফিকেশনের জন্য আজ সদস্যদের ডাকা হয়। ১২ জন সদস্যদের মধ্যে ১১ জন কে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ব্লক চত্বর থেকে। কে বা কারা তুলেছে সেটা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বোঝা যাবে।"   

জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর দুলাল সরকার  বলেন,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের জন্য অনেক সদস্য প্রধান হতে চাইছে। তাই বিভিন্ন জায়গায় এইরকম অনাস্থা ডাকা হচ্ছে। সব জায়গায় যে সঠিক কারণে অনাস্থা ডাকা হচ্ছে তা নয়। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল বলেন," তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে তৃণমূলের সদস্যরা অনাস্থা এনেছিল। সেই অনাস্থা নিয়ে আজ ব্লকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু যে সদস্যরা অনাস্থা তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তৃণমূলের নিজের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এটা। যদিও মালদা জেলায় এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। মানুষের এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত।

Advertisement