Indo-Bhutan Joint Meeting: ভুটান থেকে নেমে আসা নদীগুলি সারা বছর সরু ফিতের মতো পড়ে থাকলেও বর্ষার সময় সেগুলি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে।গোটা বছরের শুকনো নদী যেগুলিতে ঘটি ডোবে না, সেগুলিই দু-কূল ছাপিয়ে উপচে পড়ে চারিদিকে। ফি বছর ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে হয় উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলার নদী পারের বাসিন্দাদের। অনেক সময় এ রাজ্যের এই অঞ্চলে বৃষ্টি তেমন না হলেও, ভুটান পাহাড়ে বৃষ্টির জল নেমে বন্যার মুখে পড়েন বহু মানুষ। এই সমস্যা মেটাতে উদ্যোগ নিচ্ছে দুই দেশের টেকনিক্যাল কমিটি।
কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ও রিভার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নদী বিশেষজ্ঞরা এবং সেচ দফতরের হাই পাওয়ার টিম ডুয়ার্সে ভুটান সীমান্ত পরিদর্শনে এসেছিলেন। তাঁরা ভুটানের জন্য ডুয়ার্সে বন্যার বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জলপাইগুড়ির সাংসদ ডাঃ জয়ন্ত রায় জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের উচিত ভারত-ভুটানের মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণে ডুয়ার্সের সমস্যাগুলি স্পষ্ট করে আন্তর্জাতিক এই বৈঠকে তুলে ধরা।" তিনি জানিয়েছেন, তাঁর তরফে কোনও সহা.তা চাইলে তিনি সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত।
আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল জানিয়েছেন, "ভুটানের সঙ্গে যৌথ নদী কমিশন গঠনের প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়ার পর বিধানসভায় নদী কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ডুয়ার্সের বন্যা পরিস্থিতির জন্য ভুটানের পাহাড় থেকে নেমে আসা জল ও নুড়ি, বালি বড় সমস্যা। ডুয়ার্সের নদীগুলিতে পুরু আস্তরণ পড়ে নদীগর্ভ ভরাট করে দিচ্ছে। সমস্য়ার বিষয়গুলি বৈঠকে প্রস্তাব আকারে তুলে ধরে কেন্দ্রকে চাপ দিয়ে ডুয়ার্সের বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা যেতে পারে বলে সুমনের দাবি।
নভেম্বরে ভারত-ভুটান জয়েন্ট টেকনিকাল কমিটির বৈঠক
রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যে ডুয়ার্সের (Dooars) বন্যা নিয়ন্ত্রণে ভারত-ভুটান যৌথ নদী কমিশন গঠনে উদ্যোগী হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেদিক থেকে ভুটানে জয়েন্ট টেকনিকাল কমিটির বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের তরফে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার ডুয়ার্স এলাকার ভুটান সীমান্তের বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে খবর। সেচ দফতরের উত্তর-পূর্ব বিভাগের তরফে জানা গিয়েছে, চলতি নভেম্বর মাসেই ইন্দো-ভুটান জয়েন্ট টেকনিকাল কমিটির বৈঠক হবে। তবে তা উত্তরবঙ্গের কোনও জায়গায়, না ভুটানে হবে তা সোমবারের মধ্যে চূড়ান্ত হবে। বৈঠকে উত্তরবঙ্গের ভুটান সীমান্তবর্তী এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়া বিষয়ে আলোচনা হবে।
জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটা, বানারহাট ব্লক ছাড়া আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া, মাদারিহাট, কালচিনি, কুমারগ্রাম ও ফালাকাটার মতো ভুটান সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রতি বছর বর্ষায় ভুটানের নদী, ঝোরা থেকে নেমে আসা জলে বন্যা পরিস্থিতিতে ভোগান্তির মুখে পড়ে। সাধারণ মানুষের কৃষিজমি, ঘরবাড়ি ছাড়াও চা বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এর জেরে ডুয়ার্সের নদীগুলির জলধারণ ক্ষমতা কমতে শুরু করেছে বলে নানা রিপোর্টে সামনে এসেছে।