গত সপ্তাহেই গেরুয়া ঝাণ্ডা হাতে নিয়েছেন উত্তরবঙ্গের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। মন্ত্রীত্ব পদ ছেড়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের সঙ্গী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এখনও দলত্যাগ না করলেও তাকে নিয়ে জোড় চর্চা চলছে। দলের বিরুদ্ধে ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য করেছেন একদা মন্ত্রী থাকা মদন মিত্র। যা নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এখানেই থেমে নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজে হাতে তিলে তিলে গড়ে তোলা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই প্রকাশ্যে চলে আসছে দলের অন্দরে বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রীদের মধ্যে তৈরি হওয়া অসন্তোষ। নিজের দলেই ব্রাত্য হয়ে থাকার ক্ষোভ শোনা গিয়েছে একাধিক নেতার গলায়। এবার সেই দলে যোগ হলেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পড়িয়াল।
দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পড়িয়ালের আরেক পরিচয় তিনি তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি। সেই শ্রমিক নেতাই এবার দলীয় নেতৃত্বের প্রতি সুর চড়িয়ে অভিযোগ করেছেন, স্বাধীনভাবে কাজ না করতে পারার। দলীয় নেতৃত্বের একাংশের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বিশ্বনাথ বাবু বলেন, “আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি না। যদি শ্রমিক সংগঠনে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতাম, তাহলে শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে শ্রমিক স্বার্থ সম্পর্কিত যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে দিতে পারতাম।” আইএনটিটিইউসির শ্রমিক নেতা আরও সুর চড়িয়ে জানান, "যখনই ভালো কোনো কাজ করতে যাচ্ছি ঠিক তখনই পেছন থেকে টেনে ধরা হচ্ছে , এইভাবে চলতে থাকলে দল সম্পর্কে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে।"
দলের নেতৃত্বের একাংশই দুর্গাপুরের সমস্ত কারখানায় শ্রমিক সমস্যাগুলিকে ইচ্ছে করে জিইয়ে রেখে দিচ্ছে বলে আরও অভিযোগ করেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক। দলে থেকেই এই নেতারা তৃণমূলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দিচ্ছে বলে ক্ষোভ উগরেছেন এই শ্রমিক নেতা। ইতিমধ্যে উচ্চ নেতৃত্বকে সব রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। সামনেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। এই আবহে তৃণমূল নেতৃত্ব শিল্পাঞ্চের জন্য কী সিদ্ধান্ত নেয় সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন দলীয় কর্মীরা। এরাজ্যে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে বিহারগত তত্ত্ব খাড়া করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। অন্যদিকে সেই বহিরাগত প্রসঙ্গেই এবার ক্ষোভ উগরাতে দেখা গেছে বিশ্বনাথ পড়িয়ালকে। শিল্পাঞ্চলে স্থানীয়দের বদলে বহিরাগতরা কাজ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তৃণমূল বিধায়কের এই বেসুরো গাওয়া নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এমনিতেই বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মী দলবদল করতে চলেছেন বলে দাবি করে চলেছে গেরুয়া শিবির। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পড়িয়ালও কি সেই দলে রয়েছেন, তা নিয়ে জোড় চর্চা চলছে এখন শিল্পাঞ্চলে।