২৬ জুন অনুষ্ঠিত হবে জিটিএ বা গোর্খা টেরিটোরিয়াল (GTA Vote) অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের বৈঠক। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসকের অফিসে মঙ্গলবারের সর্বদলীয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। জানা গিয়েছে, ২৭ মে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে, ২৬ জুন ভোটগ্রহণ আর ২৯ জুন হবে গণনা। আর জিটিএ নির্বাচনের দিন ঘোষণা হতেই ফের বেঁকে বসলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সুপ্রিমো বিমল গুরুং। নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরদিন থেকেই অনশনে বসে পড়লেন গুরুং।
জিটিএ নির্বাচন করানোর জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় গতকালই দার্জিলিং চৌরাস্তার মোড়ে অনশনে বসার হুমকি দিয়েছিলেন গুরুং। সেইমত এদিন বেলা ১১টা নাগাদ সিংমারির দলীয় কার্যালয়েই অনশনে বসেন গুরুং। এদিন অংশ মঞ্চে দেখা যায় বিমল গুরুংয়ের স্ত্রী তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন। তারপর তাঁকে চুম্বন দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। রোশন গিরিকেও দেখা যায় গুরুংকে উত্তরীয় পরিয়ে দিতে। তারপর গুরুং-এর পাশেই বসে থাকেন তিনিও। দলীয় কর্মীরা বিমল গুরুংয়ের নামে জয়ধ্বনি দিতে থাকেন। তবে দলীয় কার্যালয়ের বাইরে তবে সেই অর্থে ভিড় দেখা যায়নি। মূলত দলীয় কর্মীরাই রয়েছেন তাঁর সঙ্গে।
প্রসঙ্গত জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতায় আগেই অনশনে বসেছেন দলীয় কর্মীরা । তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি। এবার তাঁদের নেতৃত্ব দিতে বুধবার অনশনে বসলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং। জিটিএ নির্বাচন নিয়ে প্রথম থেকেই বিরোধিতা করে এসেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা । পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে এখনও তাঁরা অনড় । কারণ, বিমল গুরঙের মতে এটাই পাহাড়ের স্থায়ী সমাধান । তাঁদের অন্যান্য দাবিও ছিল । গুরুং আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, তাঁদের দাবি না মানলে, পাহাড়ের রাজনৈতিক সমাধান না করে জিটিএ নির্বাচন করলে, তাঁরা অনশনে বসবেন ।
এদিন অনশনমঞ্চে বসে গুরুং বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারকে যে দস্তাবেজ দিয়েছিলাম, সে নিয়ে রাজ্য সরকার কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। কাজেই জিটিএ নির্বাচন আমরা মানছি না। আমাদের দল জিটিএ নির্বাচনে অংশ নেবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘৩৯৬ মৌজার যে প্রস্তাব আমরা দিয়েছিলাম তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। কেন্দ্রীয় সরকার একাধিকবার রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলেছে। হয়নি। এখন আমরা ভরসা রাখছি রাজ্যের উপর। কেন্দ্রের উপর আর কোনও আস্থা নেই।’’ সাম্প্রতিত অতীতে দেখা গেছে পাহাড়ে ফিরে এসে বিমল গুরুং জোট বাঁধেন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই। তখন গুরুং বলেছিলেন, ‘পাহাড়ের স্বার্থে রাজ্য সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে মেনে নেব।’ তবে তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে দীর্ঘদিন পরে পাহাড়ে গুরুং-এর এখানে আর আগের জনপ্রিয়তা নেই। গত পুর নির্বাচনেই এনিয়ে অ্যাসিড টেস্ট হয়ে গিয়েছে পাহাড়ে। সেখানে দেখা গিয়েছে হামরো পার্টি উঠে এসেছে ক্ষমতায়। আর তলানিতে চলে গিয়েছে বিমলের মোর্চা। এদিকে পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচনের দিন ঘোষণা পর এবার আবার অগ্নিপরীক্ষার সামনে দাঁড়াতে হবে গুরুংকে। তবে কি হেরে যাওয়ার আশঙ্কাতেই এবার জিটিএ নির্বাচনে আপত্তি জানাচ্ছেন গুরুং? এই প্রশ্ন ইতিমধ্যে উঠতে শুরু করে দিয়েছে।