বুধবার রাত থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আর তার জেরে নাজেহাল কলকাতা-সহ রাজ্যের মানুষ। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা ভেসে গিয়েছে। কবে জল নামবে, তা জানা নেই তাদের।
কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন মানুষ। টানা বৃষ্টি হওয়ায় জল জমছে। তবে ভাল খবর হল শুক্রবার থেকে বৃষ্টি কমবে। এমনটাই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ফলে মানুষের অসুবিধা কিছুটা কমবে।
হুগলি থেকে ভোলানাথ সাহার রিপোর্ট
দিন কয়েকের বৃষ্টিতে জলের তলায় তারকেশ্বর পৌর সভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড,ক্ষোভ বাসিন্দাদের। অভিযোগ জল নিকাশি ব্যবস্থা পরিকল্পনা মাফিক না করার ফলে গত চল্লিশ বছর ধরে প্রতি বছর বৃষ্টি হলেই এই জল যন্ত্রনায় ভোগেন এলাকার বাসিন্দারা।প্রতিটি বাড়ির শোবার ঘর রান্না ঘর জলমঙ্গ ,কোথায় বাড়ির মধ্যে হাঁটুর উপর জল তো কোথাও কোমর অবধি জল।বিশেষ করে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের রাম কৃষ্ণ পল্লী ,সারদা পল্লী, পালিকল এলকা একে বারেই জলের তলায়। বাসিন্দাদের ক্ষোভ এখনো পযন্ত পৌর সভার পক্ষ থাকে কোনো সহযোগিতা পাননি এলাকার বাসিন্দারা।দুরাবস্থার মধ্যে যে দিন কাটাচ্ছেন তা ছবি দেখলেই পরিষ্কার। কোন মতে জলের মধ্যেই দুপুরের খাবারের জন্য কোন রকমে রান্না করছেন গৃহিণীরা।
বনগাঁ থেকে দীপক দেবনাথ
বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে বনগাঁয় মৃত্যু মা ও ছেলের। মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া।
উত্তর ২৪ পরগনা বনগাঁ পুর এলাকার বাসিন্দা ঋষভ অধিকারী শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে ভুলবশত বাড়ির জামাকাপড় টানানোর জিআই তারে হাত দিয়ে ফেলেন।
সেখান থেকে ওই যুবক বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়। তাঁকে দেখে মা মিতা অধিকারী ছুটে গিয়ে তার থেকে ছাড়াতে যায় মা-ও ছেলের সঙ্গে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয় । গুরুতর আহত অবস্থায় মা ও ছেলেকে বনগাঁ মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা মৃত বলে ঘোষণা করে।
পরিবারের পক্ষ থেকে বাবা তপন অধিকারী জানিয়েছেন কোন কারণে বিদ্যুতের তারের ফল্ট এর কারণে বাড়ির বিভিন্ন অংশের বডি হয়ে যায়। ছেলে জি আই হাত দিতেই বিদ্যুৎপিষ্ট হয় তাকে ছাড়াতে গিয়ে স্ত্রী মিতা অধিকারী ও বিদ্যুৎপিষ্ট হয়। ঘটনার জেরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মুর্শিদাবাদ থেকে গোপাল ঠাকুর
মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকার জামুয়ার গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষপুকুর গ্রামে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। সারা রাত প্রবল বৃষ্টির ফলে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন এক ব্যক্তি।
বাঁকুড়া থেকে অনিল গিরি
ভারী বৃষ্টির জেরে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল বাঁকুড়ার এক ব্যক্তির। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া জেলার সিমলাপাল থানার পাথর ডোবা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সিমলাপাল থানা এলাকায় দফায় দফায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর ফলে মাটির বাড়ি এবং মাটির পাঁচিল গুলি দুর্বল হয়ে পড়ে।
এদিন সকালে নিজের বাড়ির মাটির পাঁচিল দেখতে বাড়ি থেকে বের হন পাথর ডোবা গ্রামের ওয়াহাব খান নামে এক বছর ৬০-এর ব্যক্তি। আর পাঁচিল দেখতে গিয়েই বিপত্তি। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে ওয়াহাব পাঁচিল দেখতে বেরোলেই আচমকা মাটির পাঁচিলটি ভেঙে পড়ে তার উপর এবং পাঁচিল চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। দুর্যোগের মাঝে এই অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
জল যন্ত্রণায় বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লক। দেব খালের জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন মঙ্গলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে। শাষপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকা পরিদর্শন করলেন ইন্দাস বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক নির্মল কুমার ধাঁড়া। জল ঢুকেছে বসতবাড়িতে। ঘরবাড়ি ছেড়ে গ্রামবাসীরা রাস্তায় গ্রামের পর গ্রাম যেন নদীতে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে, দেব খালের জলে বন্ধ হয়েছে আকুই স্কুল মোড় থেকে ত্রিশালন যাবার রাস্তা যাতায়াত।
ঝাড়গ্রাম থেকে দেবেন তেওয়ারি
দু'দিনের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ঝাড়গ্রামের জনজীবন। একাধিক জায়গায় জল জমে সমস্যায় সাধারন মানুষ। ডুলুং নদীর জল বারায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ঝাড়গ্রাম জাম্বনী ব্লক। জল বাড়তে শুরু করেছে সুবর্ণরেখা, কংসাবতী নদীতে।
ঝাড়খন্ডেও যদি একই ভাবে বৃষ্টি চলে তাহলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে। টানা বৃষ্টিতে পুরসভার বেশ কিছু ওয়ার্ডে জল জমা হয়েছে। শহরের নিকাশি ব্যবস্থা পুরোপুরি ঠিক না থাকায় জল জমছে বলে অভিযোগ। বৃষ্টি না কমলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
দুর্গাপুর থেকে অনিল গিরি
টানা বৃষ্টিতে টুমনি নদীর জলের তোড়ে ভেসে গেল শিবপুরের ভাষাপুল। ঝুঁকি এড়াতে বন্ধ করে দেওয়া হলো শিবপুর মুচিপাড়া সহ আরও বেশ কয়েকটি রুটের বাস চলাচল। এর ফলে শর্ট রুটে মুচিপাড়া শিবপুর হয়ে বীরভূম যাওয়ার সব রকম যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। যার জেরে চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছে সাধারণ মানুষ।