তাপমাত্রার পারদ বেড়েই চলেছে। রবিবার শহর কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের ৩ ডিগ্রি বেশি। আর শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের ২ ডিগ্রি বেশি। তবে চাদিফাটা রোদ, জ্বালাপোড়া গরমের পর অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টির খবর শোনাচ্ছে হাওয়া অফিস। আজ, দক্ষিণবঙ্গের সাত জেলায় কালবৈশাখীর পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। চলুন চলতি সপ্তাহে কেমন থাকবে বাংলার আবহাওয়া জেনে নেওয়া যাক।
দক্ষিণবঙ্গের সাত জেলায় কালবৈশাখীর পূর্বাভাস
বৈশাখ মাস না পড়তেই কিছু কিছু জেলায় তাপমাত্রা পৌঁছেছে ৪০ ডিগ্রিতে। কবে জুড়োবে দহন জ্বালা? এই প্রশ্নই এখন আমজনতার। এই আবহে আজ দিনভর গোটা রাজ্যেই ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। দক্ষিণবঙ্গের সাত জেলায় কালবৈশাখীর পূর্বাভাসরয়েচে। রবিবার এই জেলাগুলিতে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিও হতে পারে।
ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের উত্তরাংশে একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। এছাড়া বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকছে স্থলভাগের ওপরে। যার ফলে ছয় থেকে দশ এপ্রিলের মধ্যে জেলায় জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এত দিন বাতাসে জলীয় বাষ্পের অভাবে এবং পশ্চিম দিক থেকে আসা শুষ্ক এবং গরম বায়ুর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে না বলে জানিয়েছিল হাওয়া অফিস। কিন্তু ঘূর্ণাবর্তের জেরে এবার সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
দক্ষিণবঙ্গের এই জেলাগুলিতে বৃষ্টি
দক্ষিণবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বীরভূমে কালবৈশাখী হতে পারে এদিন। যার বেগ থাকতে পারে ঘন্টায় ৫০-৬০ কিমি। এছাড়া বাকি জেলাগুলির কোথাও কোথাও ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। যে কারণে কমলা সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। সোমবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঘন্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, হুগলি, হাওড়া, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায়। এছাড়া বাকি জেলাগুলির কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। যে কারণে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হাওয়া অফিস বলছে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকছে। এর প্রভাবেই ঝড়-বৃষ্টি হবে আগামী কয়েক দিন। তবে সাময়িকভাবে হলেও গরম কমবে দক্ষিণবঙ্গে। দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমতে পারে তাপমাত্রা।
উত্তরবঙ্গেও ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা
আজ ও সোমবার উত্তরবঙ্গের সবকটি জেলার কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি এবং ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। মঙ্গলবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের কোনও কোনও জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি এবং ঘন্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এছাড়া ওইদিন উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলায় হাল্কা বৃষ্টির ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। যে কারণে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বুধবার প্রায় সবকটি জেলাতেই কোথাও না কোথাও বজ্রবিদ্যুতের সঙ্গে ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। যে কারণে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ঝড়-বৃষ্টিতর কারণে সাবধানতা
আবহাওয়া দফতরের তরফে বলা হয়েছে এই সময় ঝড়বৃষ্টির ফলে মাঠে থাকা ফসলের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া কাঁচা বাড়িরও ক্ষতি হতে পারে। হাওয়া অফিস সাবধান করে বলেছে, বজ্রপাতের সময় কোনওভাবেই বাইরে বেরনো যাবে না। কোনও গাছ কিংবা বিদ্যুতের খুঁটির তলায় নয়, শক্ত কাঠামোর তলায় আশ্রয় নিতে হবে।
কলকাতার আবহাওয়া
আগামী ২৪ ঘন্টায় কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় গরম ও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তির আবহাওয়া থাকবে। আকাশ আংশিক মেঘলাও থাকবে। বিকেল কিংবা সন্ধের দিকে কোনও কোনও জায়গায় বৃষ্টি কিংবা বজ্রবিদ্যুতের সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে যথাক্রমে ৩৮ ও ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে।