COVID-19 সেকেন্ড ওয়েভে কেন ভয়াবহ অবস্থা হল গ্রাম বাংলায়?

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশ্যে একটি ভাষণে বলেন, করোনার ভয়াবহতা এখনও পর্যন্ত গ্রামীণ ভারতে আঘাত হানেনি। তাই গ্রামে যাতে করোনা আশঙ্কাজনক রূপ না নিতে পারে, তার জন্য সচেতন থাকতে হবে সবাইকেই। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, গ্রামেও করোনা আক্রান্ত লাফিয়ে বাড়ছে।

Advertisement
COVID-19 সেকেন্ড ওয়েভে কেন ভয়াবহ অবস্থা হল গ্রাম বাংলায়?ফাইল ছবি
হাইলাইটস
  • গ্রামীণ বাংলা কেন এতটা আক্রান্ত?
  • ভোট, রাজনৈতিক সভার জেরেই এই বৃদ্ধি?
  • শহরাঞ্চলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্রামেও

COVID-19 এর দ্বিতীয় ঢেউ ব্যাপক ভাবে আঘাত হেনেছে গ্রামীণ বাংলাতেও। করোনার (Coronavirus) প্রথম ধাক্কায় শহুরে পশ্চিমবঙ্গ যতটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল, গ্রাম বাংলা ততটা হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়েভের (COVID-19 Second Wave) ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, শহরাঞ্চলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্রামেও করোনা আক্রান্ত।

আরও পড়ুন: Corona: আরও ভয়ানক সেকেন্ড ওয়েভ, এই লক্ষণগুলিতে সতর্ক হোন 

গ্রামীণ বাংলা কেন এতটা আক্রান্ত?

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গ্রাম বাংলার আক্রান্ত হওয়ার জন্য মূলত রাজনৈতিক সভা, নির্বাচনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্যজুড়েই সভা, মিছিল হয়েছে। গ্রামীণ বাংলাতেও একের পর এক সভা করেছে তৃণমূল, বিজেপি সহ সব রাজনৈতিক দলই। 

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশ্যে একটি ভাষণে বলেন, করোনার ভয়াবহতা এখনও পর্যন্ত গ্রামীণ ভারতে আঘাত হানেনি। তাই গ্রামে যাতে করোনা আশঙ্কাজনক রূপ না নিতে পারে, তার জন্য সচেতন থাকতে হবে সবাইকেই। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, গ্রামেও করোনা আক্রান্ত লাফিয়ে বাড়ছে।

আরও পড়ুন: Corona: ভারতে COVID-19 অতিমারির সেকেন্ড ওয়েভ কবে শেষ হচ্ছে? 

রাজ্য স্বাস্থ্য দফরের রেকর্ড বলছে, গত বছর পয়লা অক্টোবরে বীরভূমে যেখানে ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ জন করোনা আক্রান্ত ছিলেন, সেখানে ২০২১ সালে এপ্রিলের শেষে তা ৭০৪ হয়েছে। হুগলিতেও গত বছর পয়লা অক্টোবরে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৪৫ জন। এপ্রিলের শেষে তা ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১ হাজারের কাছাকাছি।

ভোট, রাজনৈতিক সভার জেরেই এই বৃদ্ধি?

এই ব্যাপক হারে করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধির পিছনে রাজনৈতিক সভাকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (IMA)-এর প্রেসিডেন্ট তথা সাংসদ ডাক্তার শান্তনু সেনের বক্তব্য, ভোটের সময় গ্রামে ব্যাপক ভাবে মিটিং মিছিল হয়েছে, বাইরের রাজ্য থেকে বহু মানুষ এসেছেন, তার জেরেই গ্রামে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ।

শান্তনুর কথায়, 'করোনা কিন্তু গ্রাম বাংলার গরিব মানুষের রোগ ছিল না। বড়লোকেরা প্লেনে করে বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছিল। প্রথম ওয়েভে কিন্তু গ্রামীণ বাংলায় করোনা ওতোটা ছিল না। যে মুহূর্তে লকডাউন হওয়ায় পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরতে শুরু করলেন, তখন থেকেই করোনা বাড়তে লাগল গ্রামে। ওই সময় বিজ্ঞানসম্মত ভাবে যদি সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত, তা হলে গ্রামীণ বাংলায় করোনা ছড়াতো না। দীর্ঘ দিন অতিমারি, লকডাউন, কাজ না থাকা ইত্যাদি হওয়ায় বহু মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ দেখা দেয়। পরে যখন আক্রান্তের সংখ্যা কমতে লাগল, তখন বহু মানুষের মধ্যে অসেচতনতা দেখা দিল। যার জেরে দ্বিতীয় ঢেউ এল। এরপর কেন্দ্রের উদাসীনতা,  কুম্ভমেলার আয়োজন, পশ্চিমবঙ্গের মতো জনবহুল রাজ্যে ৮ দফার নির্বাচন, লক্ষ লক্ষ বাইরের রাজ্য থেকে আসা মানুষ, সিআরপিএফ, নেতা ইত্যাদি এসে, কোনও টেস্ট না করিয়ে, মাস্ক না পরে গোটা বাংলাকে করোনা-ময় করে দিল।'

Advertisement

বস্তুত, ভোটের শেষের দিকে গত ২২ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন সব রোডশো বন্ধ করার কথা ঘোষণা করে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক সভায় ৫০০-র বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তুত ততদিনে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।

POST A COMMENT
Advertisement