COVID-19 তো একটি ট্রেলার মাত্র। আসল ছবি এখনও বাকি। এমনটাই বলছেন তাবড় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ডেইলি মেল-এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভবিষ্যতে আরও বড়, বিধ্বংসী মহামারীর কবলে পড়তে পারে বিশ্ব।
খোদ ব্রিটেনের ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের প্রধান ডেম কেট বিংহামই এমনটা বলছেন। তাঁর কথায়, এরপরে আরও বড় কোনও মহমারী আসতে পারে। আর তাতে অন্তত ৫ কোটি মানুষের প্রাণহানি হতে পারে। তিনি আরও মনে করিয়ে দেন, 'এটা আমাদের ভাগ্য যে কোভিড ১৯ অতটা বেশি প্রাণঘাতী ছিল না।'
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(WHO) এই সম্ভাব্য পরবর্তী মহামারীর একটি পোশাকি নাম দিয়েছে- 'ডিজিজ এক্স'(Disease X)। স্বাস্থ্য কর্তারা বলছেন, এমনটাও হতে পারে যে ইতিমধ্যেই সেই মহামারী আসতে শুরু করে দিয়েছে।
২০১৯ সালে COVID-19-এ বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭০ লক্ষ মৃত্যু হয়েছে। WHO-এর তথ্য এমনটাই বলছে।
ডেম কেট বিংহাম সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে ডিজিজ এক্স COVID-19 এর চেয়ে সাত গুণেরও বেশি মারাত্মক প্রমাণিত হতে পারে। তিনি আরও বলেছিলেন যে পরবর্তী মহামারীটি বিদ্যমান ভাইরাস থেকে উদ্ভূত হতে পারে।
এর আগে ১৯১৮-১৯-এর ফ্লু মহামারীর সময়ে ৫ কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। তিনি বলেন, 'ইতিমধ্যেই বিদ্যমান বেশ কিছু ভাইরাসে এই একই রকম মৃত্যু হার থাকতে পারে। আরও চিন্তার বিষয় হল, ভাইরাসগুলি প্রতিনিয়ত মিউটেট করছে৷'
ডেইলি মেইলকে তিনি বলেন, 'এই প্রতিটি ভাইরাসই যে মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, এমনটাও নয়ে। তবে মানুষের জন্য় সত্যিই ভয়ানক, এমন ভাইরাসের সংখ্যাও নেহাত কম নয়।'
তিনি বলেন, বিজ্ঞানীরা ২৫টি ভাইরাস ফ্যামিলিকে কড়া পর্যবেক্ষণের মধ্যে রেখেছেন। এর প্রতিটিতে হাজার হাজার আলাদা-আলাদা ভাইরাস রয়েছে। এর যেকোনও একটির কারণেই মারাত্মক মহামারী হতে পারে।
ডেম কেট বলেন, 'COVID-এর সময়ে ভাইরাসে সংক্রমিত হলেও বেশিরভাগ মানুষই ফের সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু ধরুন ডিজিজ এক্স যেটা, সেটা হামের মতোই সংক্রামক হল। সেই সঙ্গে ইবোলার মতো ৬৭% মৃত্যুর হার। হতেই পারে, বিশ্বের কোথাও না কোথাও মিউটেশনের মাধ্যমে এমন ভাইরাস তৈরি হচ্ছে।'
ইতিমধ্যেই ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরা এই অজ্ঞাত 'ডিজিজ এক্স'-এর ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টা শুরু করেছেন। উইল্টশায়ারের পোর্টন ডাউন ল্যাবরেটরি কমপ্লেক্সে পরিচালিত এক গবেষণায় ২০০ জনেরও বেশি বিজ্ঞানী জড়িত।
মূলত পশু থেকে মানুষের মধ্যে ছড়াতে পারে, এমন ভাইরাসের দিকেই বেশই জোর দিচ্ছেন তাঁরা। পরীক্ষা-নিরীক্ষার অধীনে থাকা প্যাথোজেনগুলির মধ্যে বার্ড ফ্লু, মাঙ্কিপক্স এবং হান্টাভাইরাস(ইঁদুর দ্বারা সংক্রামিত হয়) রয়েছে।
ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির (UKHSA) প্রধান অধ্যাপক ডেম জেনি হ্যারিস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জনসংখ্যার পরিবর্তনের মতো কারণে ভবিষ্যতে মহামারী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। এর জন্য চিকিৎসা পরিকাঠামো সবসময়ে প্রস্তুত রাখার বার্তা দেন তিনি।