লংইয়ারবাইন এমন একটি শহর, যেখানে 'মৃত্যু নিষিদ্ধ'। হেঁয়ালি নয়, এমনই একটি শহর আছে নরওয়ের স্বালবার্ড দ্বীপপুঞ্জে। অদ্ভুত পরিবেশ, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং বিচিত্র কিছু নিয়মের জন্য এই শহর বিশ্বজুড়ে পরিচিত। এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, এখানে মৃত্যুর পর কোনও অন্তিম সংস্কার করা হয় না, এমনকি এখানে কোনও কবরস্থানও নেই। কিন্তু কেন এমন অদ্ভুত নিয়ম?
লংইয়ারবাইনে মানুষের বসবাসের প্রধান কারণ হলো, এটি একটি গবেষণাকেন্দ্র এবং খনি শহর। এখানকার অধিকাংশ বাসিন্দাই বিদেশি। মূলত গবেষণার কাজে বা খনির কাজে, পেশার তাগিদে এখানে আসেন। তবে এখানকার পরিবেশ এতটাই দুর্গম যে, সাধারণত মানুষ এখানে স্থায়ীভাবে বাস করতে আসে না। বেশিরভাগ মানুষই আসে কাজের জন্য এবং কিছুদিন থেকে চলে যায়। তাই, শহরের অধিকাংশ বাসিন্দাই 'পরিযায়ী'। তাছাড়া এখানে সেভাবে হাসপাতাল, চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় এই শহরে কোনও শিশু জন্মও নেয় না।
এখানে মৃতদেহ নিয়ে যে বিশেষ আইন রয়েছে, তা সত্যিই চমকে দেওয়ার মতো। সাড়ে ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে লংইয়ারবাইনে কারও কবর দেওয়া হয়নি। এর প্রধান কারণ হল, এখানে মৃতদেহের পচন প্রক্রিয়া থেমে যায়। শহরের তাপমাত্রা এতটাই কম যে, মৃতদেহগুলো জমে গিয়ে সংরক্ষিত হয়ে যায়। আর সেই কারণেই এখানে মৃতদেহ কবর দেওয়ার নিয়ম নেই।
লংইয়ারবাইনে একটি ‘থান্ডারিং’ এবং ‘ফ্রিজিং’ পরিবেশ রয়েছে, যার কারণে মৃতদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মাটির নীচে জমে গিয়ে দীর্ঘকাল অবিকৃত অবস্থায় থাকে। এখানে মানুষের মৃত্যু হলে, মৃতদেহ সাধারণত নরওয়ের মূল ভূখণ্ডে পাঠানো হয়। সেখানে সংস্কারের ব্যবস্থা করা হয়।
এছাড়াও, স্বালবার্ড দ্বীপপুঞ্জের অন্যান্য শহরের তুলনায় লংইয়ারবাইনে জনসংখ্যা খুবই কম। শহরে মোট জনসংখ্যা প্রায় ২,১০০, এবং সেখানে বসবাসকারী অধিকাংশ মানুষই জন্মগ্রহণ করেননি। এটা এমন একটি জায়গা, যেখানে বসবাস করা এক ধরনের চ্যালেঞ্জ, এবং এখানকার জীবনযাত্রা অত্যন্ত কঠিন।
লংইয়ারবাইনের এই অদ্ভুত নিয়ম সম্পর্কে জানতেন? এটা জানতে পেরে আপনার কেমন লাগল? জানান কমেন্টে।