share social media
Please rotate your device

We don't support landscape mode yet. Please go back to portrait mode for the best experience

Chapter 1 Chapter 2
Chapter 3
Chapter 3

লাশের স্তূপে নদীপথ আটকে যায়, মৃত মায়ের দুধ খাওয়ার চেষ্টা করছে এক শিশু

  • By: শাহিদুল হাসান খোকন

একাত্তর বড়ই রক্তাক্ত। বাংলার আনাচকানাচে শুধুই গণহত্যার সাক্ষী বহনকারী এক ইতিহাস। একটি স্বাধীন দেশের জন্মের আগে যে কত রক্ত বয়েছিল, তার হিসেব নেই। এমনই আরেক গণহত্যার নাম ‘চুকনগর গণহত্যা’।

ইতিহাস বলছে, ১৯৭১-এর ২০ মে খুলনার চুকনগরে পাকিস্তানি সেনাদের গণহত্যায় শহিদ হন প্রায় ১০ হাজারের উপর নিরীহ মানুষ, যারা প্রাণে বাঁচতে পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন ভারত সীমান্তে। পাকবাহিনী ও রাজাকারদের নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে বাগেরহাট, খুলনা, বরিশাল, রামপাল, বটিয়াঘাটা, দাকোপ, ফুলতলা সহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার হাজারো মানুষ ভারতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আশ্রয় নিয়েছিল চুকনগর এলাকায়।

একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাতের পর মে মাসে যুদ্ধকাল পেরিয়েছে তিনমাস। দেশীয় দোসর রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানি বাহিনী রাজধানী ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় জেলায় জেলায়। হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুঠের মতো অপরাধ। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বহু মানুষ প্রাণে বাঁচতে ঘরবাড়ি ফেলে আশ্রয় নেওয়া শুরু করে ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলোয়। সীমান্তে পৌঁছতে খুলনার ডুমুরিয়ার 'চুকনগর বাজার' এমনই একটি ট্রানজিট পয়েন্ট, খুলনা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার পশ্চিমে ভারত সীমান্তবর্তী ভদ্রা নদীর তীরবর্তী এই অঞ্চলটি পড়েছে ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নে।
চুকনগরের ওই গণহত্যা থেকে বেঁচে ফেরা একজন ডুমুরিয়ার মাগুরখালি ইউনিয়নের পরমাওয়াখালি গ্রামের দেবাশিস রায়। তিনি জানান,দেশের দক্ষিণাঞ্চলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপর পাকিস্তানি বাহিনীর নির্যাতন ও গণহত্যা চরমে পৌঁছয় এপ্রিল ও মে মাসে। তাঁর কথায় জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষেরা ভারত পৌঁছতে কেন এই পথকে বেছে নিয়েছিলেন। একাত্তরে মে মাসে বরিশাল, ফরিদপুর, বাগেরহাটের রামপাল, মোড়েলগঞ্জ, কচুয়া, শরণখোলা, মোংলা, খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটার বিপুলসংখ্যক হিন্দুধর্মাবলম্বীর ঢল নামে। উদ্দেশ্য, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া।

ভদ্রা নদী দিয়ে নৌকায় আসা ছিল অনেকটাই সহজ এবং নিরাপদ

সেই সীমান্তে পৌঁছুতে ডুমুরিয়া পর্যন্ত ভদ্রা নদী দিয়ে নৌকায় আসা ছিল অনেকটাই সহজ এবং নিরাপদ, কারণ এখানে হানাদারবাহিনীর আনাগোনা ছিল না বললেই চলে বলে জানান দেবাশিস। আর তিন দিক থেকে নদী ঘেরা ডুমুরিয়ার চুকনগর বাজার। ভদ্রা নদী দিয়ে নৌকায় করে আসা মানুষের বিশ্রামের একমাত্র জায়গা এই চুকনগর বাজার। এই বাজারে এসে মানুষজন নৌকা থেকে নেমে রান্নাবান্না করতেন, সামনের বিরামহীন পথে চলতে একটু জিরিয়ে নিয়ে শক্তি সঞ্চয় করতেন।

এই গণহত্যার আরেক প্রতক্ষ্যদর্শী খুলনার বটিয়াঘাটার উত্তর রাঙ্গেমারি গ্রামের বাসিন্দা বলাইয়ের কথায়, 'এই পথের সুবিধার কথা জেনে মে মাসের পর সীমান্ত পথযাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। মে মাসের ১৮ ও ১৯ তারিখে দেশ ছাড়তে জনস্রোত যেন সব সীমা ছাড়িয়ে যায়। দলে দলে মানুষ নৌকায় করে চুকনগরে বাজারে এসে ভিড়ছেন,বিশ্রাম নিচ্ছেন, আবার ছুটছেন সীমান্তে।'

চিকন আলি মোড়লকেই গুলি করে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে পাকিস্তানি সেনা

যুদ্ধের অর্ধশতাব্দীকাল পেছনে ফেলে আসা ৮০ বছরের বৃদ্ধ এরশাদ আলি মোড়ললের সেদিনের গণহত্যার স্মৃতি আজও দগদগে। আটলিয়া ইউনিয়নের মালতিয়া গ্রামের এরশাদ আলি শোনান সেদিনের কথা। ওইদিন তাঁর বাবা কৃষক চিকন আলি মোড়লকেই প্রথম গুলি করে হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছিল পাকিস্তানি সেনারা।

তিনি বলেন, তখন আটলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন গোলাম হোসেন, যিনি যুদ্ধ শুরুর পর নাম লেখান শান্তি বাহিনীতে। সেই গোলাম হোসেন এবং ভদ্রা নদীর খেয়া ঘাটের ইজারাদার শামসুদ্দিন খাঁ নামের এক বিহারী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাতক্ষীরা ক্যাম্পে গিয়ে খবর দেন চুকনগর বাজারে ভারতে যেতে হিন্দুদের ঢল নেমেছে। খবর পেয়ে ক্যাম্প থেকে রওনা হয় সেনাবোঝাই একটি ট্রাক ও জিপ।

চিকন আলিকে মেরে ফেলার পর পাকিস্তানিরা ভাগ হয়ে গণহত্যা চালায়

এরশাদের কথায়, ১৯ মে পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষ গ্যাংরাইল নদীর পাশের উঁচু এলাকা, চুকনগরের পাতখোলা বিল, ভদ্রা নদীর কাঁচাবাজার, মাছবাজার, কাপুড়িয়া পট্টি, গরুহাটা, বাজারের কালী মন্দির, বটতলাসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেয়। 'তখনও মানুষ কেবলই আসছিল নানা প্রান্ত থেকে। কেউ কেউ সঙ্গে আনা পলিথিন বা কাপড় দিয়ে তাঁবু টাঙান, তবে ভয়-আতঙ্কে বেশিরভাগ মানুষই ওই রাতটি কাটিয়েছিলেন নির্ঘুম। বেশিরভাগই চেয়েছিলেন ভোরের আলো ফুটলেই সীমান্তের দিকে রওনা দেবেন,' বলেন এরশাদ।

তিনি জানান, দ্রুত রান্না-খাওয়া সারতে তাদের অনেকেই সকাল সকাল রান্না চাপিয়ে দেন। কারও রান্না হয়ে গেছে, কোনও কোন পরিবার আবার খেতে বসেছে। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সাতক্ষীরা থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি ট্রাক ও একটি জিপ চুকনগর- সাতক্ষীরা সড়ক ধরে মালতিয়া মোড়ের ঝাউতলায় এসে থামে। সে সময় রাস্তারপাশে পাট খেতে কাজ করছিলেন তার বাবা চিকন আলি মোড়ল।

চিকন আলি গাড়ির শব্দে উঠে দাঁড়ানো মাত্র পাকিস্তানি হানাদাররা তাকে দেখে গুলি করতে গেলে তিনি হাতের কাস্তে ছুড়ে মারেন তাদের দিকে, সঙ্গে সঙ্গে ব্রাশফায়ার। একটু দূরে দাঁড়িয়ে এমন ঘটনাটি চোখের সামনে দেখতে হয় এরশাদকে। চিকন আলিকে মেরে ফেলার পর পাকিস্তানিরা ভাগ ভাগ হয়ে গণহত্যা চালায়।

এরশাদ বলছেন, 'পাতখোলা বাজারে ঢুকে নিরীহ মানুষদের লাইনে দাঁড়িয়ে ব্রাশফায়ার শুরু করে পাকিস্তানি সেনারা। আরেক দল পাতখোলা বিল থেকে চাঁদনি, ফুটবল মাঠ, চুকনগর স্কুল, মালতিয়া, রায়পাড়া, দাসপাড়া, তাঁতিপাড়া, ভদ্রা ও ঘ্যাংরাইল নদীর পাড়ে জমা হওয়া মানুষের উপর গুলি চালাতে শুরু করে।'

সকালে ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত চলে গণহত্যা

শহিদের এই সন্তান জানান, ভদ্রা নদীর পানির রং পাল্টে যায় সেদিন। লাল টকটকে রক্তে ভেসে যায় পুরো নদী, কোথাও কোথাও লাশের কারণে নদীপথও আটকে যায়। এরশাদ বলেন, 'সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া হানাদারদের ওই গণহত্যা গুলি ফুরিয়ে আসার কারণে থামে দুপুর ৩টায়। যারা সাঁতরে নদীর ওপাড়ে পৌঁছাতে পেরেছিলেন, তারাই কেবল বাঁচতে পেরেছিলেন।'

৪ ঘণ্টারও কম সময়ে ১০ হাজার মানুষ খুন

এরশাদ আলি জানান, চার ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে সেদিন ১০ হাজারের মত নিরীহ মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলে পাকিস্তানি সেনরা। মা-বাবাকে হারিয়ে অজস্র শিশু হয় নাম-পরিচয়হীন। বিকালে বাবা চিকন আলি লাশ খোঁজার বিবরণ দিতে গিয়ে এরশাদ আলি শোনান আরেক গল্প।

বিকাল ৪ টের দিকে বর্তমান চুকনগর কলেজের সামনে পাতখোলা বিলে তখন গুলিবিদ্ধ অসংখ্য লাশের স্তূপ। হঠাৎ চোখ আটকে যায় এক ফুটফুটে শিশুর দিকে, কন্যা শিশু, গায়ে রক্তমাখা। গুলিতে মারা যাওয়া মায়ের দুধপানের চেষ্টা করছিল শিশুটি। বাবার মৃত্যু শোককে পাশে রেখে এরশাদ আলি কোলে তুলে নেন মেয়েটিকে, নিয়ে আসেন বাড়িতে। নাম রাখেন 'সুন্দরী'।

সুন্দরীর মায়ের চুলের সিঁথিতে সিঁদুর আর হাতে শাঁখা দেখেছিলেন এরশাদ। তাই এলাকার এক হিন্দু পরিবার তাঁর দায়িত্ব নেন। সুন্দরী বেড়ে ওঠেন স্বাধীন দেশে। ১৯৮৪ সালে তাঁর বিয়ে হয় একই এলাকার বাটুল সরকারের সঙ্গে। ১৯৯০ সালে স্বামীকে হারান এই নারী, আছেন ছেলেদের সঙ্গে। ডুমুরিয়া উপজেলার কাঁঠালতলা নদীরপাড়ে সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া আবাসন প্রকল্পের একটি টিনশেড ঘরে বসবাস করেন সুন্দরী। ডুমুরিয়া উপজেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরিও করছেন।

অজস্র লাশের জেরে নদী পথ আটকে গেছিল

গণহত্যার অন্যতম সাক্ষী চুকনগর বধ্যভূমি দেখভালকারী ফজলুর রহমান মোড়ল বলেন, 'এই গণহত্যায় পর নদীর পানিতে অজস্র লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। যে কারণে শহিদদের প্রকৃতসংখ্যা উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে বরিশাল, ফরিদপুর, বাগেরহাট সদর, বাগেরহাটের রামপাল, মোড়েলগঞ্জ, কচুয়া, শরণখোলা, মোংলা, খুলনার দাকোপসহ নানা জায়গা থেকে যারা এসেছিলেন তাদের স্বজনদের খোঁজ পাওয়া যায়নি।'

চুকনগর কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় মানুষের হাড়গোড় পাওয়া যায়

চুকনগর গণহত্যা ১৯৭১ স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সভাপতি এ বি এম শফিকুল ইসলাম বলেন, সেদিন চুকনগরের প্রায় চারমাইল এলাকাজুড়ে এই হত্যাযজ্ঞ চলে। এ গণহত্যার পর এলাকাবাসী কিছু লাশ গ্যাংরাইল ও ভদ্রা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। এলাকার লোকজন ২ মাস পর্যন্ত ওই নদীর মাছ খায়নি। দুর্গন্ধ এড়াতে কিছু লাশ মাটিচাপা দেওয়া হয়। চুকনগর কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় মানুষের হাড়গোড় পাওয়া যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত ‘১৯৭১ চুকনগরে গণহত্যা’ বই-এ বলা হয়েছে, '৭১-এর ২০ মে বাংলাদেশের জন্মের জন্য এখানে বৃহত্তম গণহত্যা সংঘটিত হয়। সেদিন ১০ হাজার নারী, পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করা হয়। একদিনে আর কোনও দেশে এত বড় গণহত্যা হয়নি।'

খুলনার ‘মুক্তিযুদ্ধ আর্কাইভ জাদুঘর’র ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য শেখ বাহারুল আলম বলেন, এই অঞ্চলে জামায়াতের এ কে এম ইউসুফের নেতৃত্বে রাজাকারবাহিনী গড়ে তোলা হয় যুদ্ধ শুরুর ১৫ দিন আগে এই বাহিনী খুলনার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সাধারণ মানুষের ওপর পাকিস্তানিবাহিনীর দোসর হয়ে অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। বাহারুল বলেন, "চুকনগরে ১৯৭১ সালের সবচেয়ে বড় ও নৃশংস গণহত্যায় শহিদদের প্রকৃত সংখ্যা এখনও জানা না গেলেও ১০ থেকে ১২ হাজার নিরপরাধ, নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যা করা হয়।"

'মৃত মায়ের দুধ খাওয়ার চেষ্টা করছিল সুন্দরী'

চুকনগরে একাত্তরে সংঘাঠিত গণহত্যার জীবিত ফেরা এক শিশু সুন্দরী বালা। সেই ভয়াল ও বীভৎস গণহত্যাস্থলে মৃত মায়ের বুকের দুধ পান করার চেষ্টা করছিল মাস ছয়েকের শিশু সুন্দরী বালা। সেই শিশুটি নানা বিঘ্ন, বাধা পেরিয়ে জীবনের ৫১ বছর পার করেছেন।

সুন্দরী বালার কথায়, ১৯৭১ সালের ২০ মে মাসে আমি আমার মরা মায়ের বুকের উপরে দুধ খাচ্ছিলাম। এরশাদ দাদা আমাকে কুড়িয়ে এনে এক হিন্দু পরিবারের কাছে দেয়। পরে তারা আমায় লালন-পালন করে, বিয়ে দেয় বাটুল সরকারের সঙ্গে। আমার দুই ছেলে সুমন সরকার ও ডেভিড সরকার।

এরশাদ আলির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, সেদিন এরশাদদাদা আমাকে কুড়িয়ে না আনলে আমি হয়তো বাঁচতামই না। তিনি শুধু আমাকে কুড়িয়েই আনেননি, মায়ের কপালে সিঁদুরের চিহ্ন ও হাতের শাঁখা দেখে হিন্দুঘরের সন্তান বুঝে হিন্দু পরিবারে বড় করিয়েছেন। আমি এখন শিল্পকলা একাডেমিতে একটি চাকরি করছি। লেখাপড়া না জানা মানুষকে তারা যে মূল্যায়ন করেছেন, সেজন্য আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। সুন্দরী জানান, এই সরকারের আমলে ১১ শতক জমি তাকে দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হয়েছে জমির দলিলও।

‘চুকনগর বধ্যভূমিতে গেলে আজও বুকটা হাহাকার করে ওঠে। খুঁজে ফিরি মা-বাবাকে। কিন্তু আমি তো জানি না আমার পৈত্রিক বাড়ি কোথায়। শুধু জানি, বাঁচার আশায় আমার পরিবার এখানে এসেছিল' বলেন সুন্দরী বালা।

উল্লেখ্য, পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম যেসব গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, চুকনগরের গণহত্যা সেসবের একটি। ১৯৭১ সালের ২০ মে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে খুলনার ডুমুরিয়ার ছোট্ট শহর চুকনগরে পাকিস্তানি বর্বর সেনারা নির্মম এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। অতর্কিত হামলা চালিয়ে মুক্তিকামী ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে তারা। স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাসে চুকনগরের গণহত্যা এক ভয়াবহ কালো অধ্যায়।