এপ্রিল নয়, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই বাংলাদেশে হতে পারে সাধারণ নির্বাচন। BNP-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে বৈঠকের পর এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন পর্যাপ্ত সংস্কার এবং বিচার বিষয়ক অগ্রগতি। সে কথাও জানিয়েছেন ইউনূস। শুক্রবার লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে দু'জনের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতি দেন তাঁরা। আর তাতেই ফেব্রুয়ারি মাসে ভোট করানোর বিষয়টি বাংলাদেশ সংবাদমাধ্যমে জানান ইউনূস।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো সূত্রে খবর, লন্ডনের স্থানীয় সময় অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তারেক রহমান এবং মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক চলে। দেড় ঘণ্টার এই বৈঠকে ছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং BNP-র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টার কাছে রমজানের আগে ভোট করানোর প্রস্তাব দেন তারেক। ইউনূসকে তিনি জানান, এ ইচ্ছা রয়েছে BNP চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ারও। ইউনূস জানিয়েছেন, সব প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হলে রমজান মাসের আগের সপ্তাহে নির্বাচনের আয়োজন করা যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে ওই সময়ের মধ্যে সংস্কার এবং বিচারের পর্যাপ্ত অগ্রগতি আবশ্যক।
এপ্রিলে নির্বাচনে আপত্তি জানিয়েছিল BNP। তাদের যুক্তি, এপ্রিল মাসের আবহাওয়া নির্বাচনের অনুকূলে থাকার সম্ভাবনা কম। সে সময়ে মাত্রাতিরিক্ত গরম থাকে। পাশাপাশি আচমকা নিম্নচাপ এবং ঝড়ের আশঙ্কাও রয়েছে। এছাড়াও ভোটের জন্য যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, তা রমজান মাসের পরপরই। ফলে রোজার মধ্যে নির্বাচনী প্রচার চালাতে সমস্যায় পড়বেন প্রার্থীরা। পাশাপাশি, বাংলাদেশে ওই সময়েই একাধিক স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা থাকে। এই সমস্ত বিষয়গুলি মাথায় রেখে এপ্রিল মাসে ভোট করানো সমস্যাজনক হতে পারে বলেই মনে করেছে খালেদা জিয়ার দল।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সেই পালাবদলের পর তারেকের সঙ্গে ইউনূসের এটাই প্রথম বৈঠক। হাসিনা দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কারের পর সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করাই ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ। কিন্তু তেমনটা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলি চলতি বছরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করে। এই চাপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত ইউনূস ঘোষণা করেন, ২০২৬ সালে ভোট হবে বাংলাদেশে। যদিও তিনি বলেছিলেন এপ্রিল মাসের আগে তা সম্ভব নয়। তাঁর এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে BNP। এই বিরোধিতার আবহে তারেকের সঙ্গে ইউনূসের বৈঠক ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার দলের দাবিগুলি ইউনূস যে একপ্রকার মেনেই নিয়েছেন, তা মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।