ফ্যাক্ট চেক: মেঘালয়ে স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকটি মুসলিম নয় বরং হিন্দু 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওর অভিযুক্ত যুবকটি মুসলিম নন বরং একজন হিন্দু এবং তার নাম হিমান গগৈ।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: মেঘালয়ে স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকটি মুসলিম নয় বরং হিন্দু 

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি অস্বস্তিকর ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে একটি সংকীর্ণ পথে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় মুখে মাস্ক পরা এক যুবক একজন স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করতে এবং ওই ছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও বা ছবি তুলতে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে এই ঘটনায় ছাত্রীটি অস্বস্তিতে পড়ে এবং তারপর সে নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায়।

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এতে যে যুবককে ওই স্কুলছাত্রীর অপত্তিকর ভিডিও বা ছবি তুলতে দেখা যাচ্ছে সে একজন মুসলিম এবং তাকে আসাম পুলিশ গ্রেফতার করেছে। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “এই জিহাদির মানসিকতা কত জঘন্য দেখুন। এর নাম (সাহিল শেখ) একটা হিন্দু মেয়ে স্কুল থেকে ফেরার পথে এই জানোয়ার সাহিল শেখ ওই মেয়েটার একটি খারাপ ছবি তোলে। পরবর্তীতে তাকে ট্যাগ করা হয় এবং আসাম পুলিশ তাকে এরেস্ট করেছে আজ।” (সব বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওর অভিযুক্ত যুবকটি মুসলিম নন বরং একজন হিন্দু এবং তার নাম হিমান গগৈ।

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল দাবি ও ভিডিওটির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২৫ সালের ২৯ মে Northeast Live-এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে এই একই ভিডিও-সহ একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মেঘালয়ের শিলংয়ের লুমডিয়েংজরি থানার উমসোহসুন এলাকায় এক স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় আসামের জোরহাট থেকে হিমান গগৈ নামক ২৪ বছর বয়সী যুবককে গ্রেফতার করেছে পূর্ব খাসি পাহাড় পুলিশ।

এরপর উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই সব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ২৩ মে এই ঘটনা নিয়ে লুমডিয়েংজরি থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়। এরপর গত ২৬ মে পুরো ঘটনার তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) ইভান বি ডিয়েংদোর নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়। গত ২৮ মে অভিযুক্ত হিমানের সন্ধানে মহিলা সাব-ইন্সপেক্টর লাভিনিয়া কংওয়াংয়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল আসামের জোরহাটে যায়। 

Advertisement

সেখানে জোরহাট পুলিশের সহায়তায় তারা বামকুকুরাচুয়া নামক একটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত হিমানকে তার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। অন্যদিকে শিলং টাইমসের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই মামলায় অভিযুক্ত হিমান গগৈ গত ১৯ মে পুলিশ বাজারের ড্রিমল্যান্ডে অন্য এক স্কুল ছাত্রীর সঙ্গে এই একই রকম আচরণ করেছিল। সেই ঘটনার পরও সদর থানায় তার বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। 

যদিও অভিযুক্ত হিমান গগৈয়ের নাম থেকে অনুমান করা যায় যে সে একজন হিন্দু। তবে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে এরপর আমরা শিলংয়ের ডিআইজি ডেভিস এনআর মারাকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আজতককে নিশ্চিত করেছেন যে এই মামলার অভিযুক্ত হিমান গগৈকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং সে একজন হিন্দু। অন্যদিকে 'নর্থ ইস্ট লাইভ'-এর সাংবাদিক মোইরাংথেম নাগানবারেল, যিনি উত্তর-পূর্ব ভারত সম্পর্কিত সংবাদ কভার করেন, তিনিও আমাদের এই একই তথ্য জানিয়েছেন।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, মেঘালয়ে এক স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির ভিডিওটি মিথ্যে সাম্প্রদায়িক রং লাগিয়ে শেয়ার করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook users

দাবি

মেঘালয়ে এক স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগে এক মুসলিম যুবককে গ্রেফতার করেছে আসাম পুলিশ।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিওর অভিযুক্ত যুবকটি মুসলিম নন বরং একজন হিন্দু এবং তার নাম হিমান গগৈ।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement