বাংলাদেশের কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের একটি রেল স্টেশনে দুটি ট্রেনের সংঘর্ষ ঘটেছে। এই সংঘর্ষের কবলে পড়েছে বাংলাদেশের দ্রুতগামী যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোর একটি সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। ট্রেনের বেশ কটি বগি উল্টে অন্তত অর্ধ শতাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন। রোববার সন্ধ্যায় নাঙ্গলকোটের হাসানপুর স্টেশনে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও রেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আহতদের স্থানীয় বেসরকারি ক্লিনিক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।
সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের যাত্রী হিসেবে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের ১২ জন কর্মকর্তা থাকলেও তারা অক্ষত রয়েছেন। এই দুর্ঘটনার কারণে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ঢাকা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও চাঁদপুরের ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি কমিটি করেছে রেলওয়ে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সোনার বাংলা এক্সপ্রেস রোববার বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। পথে কুমিল্লা শহরের আগে নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর রেল স্টেশনে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ, রেলওয়ে কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ‘ভুল’ সিগন্যালের কারণে দ্রুতগতির সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি মেইন লাইন ছেড়ে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে। এ সময় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনটিকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে সেটির উপরে উঠে পড়ে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। কাত পড়ে পড়ে এর পাঁচটি বগি।
দুর্ঘটনায় আহত একজন ট্রেনযাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “ইফতারের পর হঠাৎ দেখি বিকট শব্দে আমাদের ট্রেনটি মালবাহী ট্রেনটিকে ধাক্কা দিয়ে সেটির উপর উঠে পড়ে যাচ্ছে। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ট্রেনের কয়েকটি বগি দুড়মে-মুচড়ে যায়। মনে হয়েছে মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে এসেছি।” সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে কর্মরত রেলওয়ে পুলিশের এএসআাই তানভীর হোসেন বলেন, “ট্রেনটি হাসানপুর রেল স্টেশনে প্রবেশের আগে হঠাৎ দেখি আঁকাবাঁকা হয়ে দুলছে। এমন অবস্থায় হঠাৎ বিকট শব্দে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছে।” কর্মকর্তারা বলছেন,এ সংঘর্ষে সোনার বাংলা ও মালবাহী ট্রেনের মোট সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।