বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছেন যে কবির সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও স্মৃতিস্তম্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ঢাকা ট্রিবিউন সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে, রবিবার ভাঙচুরের পর বন্ধ থাকা রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি বা রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর শুক্রবার দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
কাছারিবাড়ি হল সিরাজগঞ্জ জেলায় অবস্থিত ঠাকুর পরিবারের পৈতৃক বাসভবন এবং রাজস্ব অফিস। ১৮৪০ সালে রবীন্দ্রনাথের দাদা দ্বারকানাথ ঠাকুর এটি কিনেছিলেন। এই বাড়িতে বসেই কবিগুরু অনেক উল্লেখযোগ্য সাহিত্য রচনা করেছিলেন। এক বিবৃতিতে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রক জানিয়েছে যে কর্তব্যরত একজন কর্মচারী এবং পার্কিং টিকিট নিয়ে একজন দর্শনার্থীর মধ্যে ঝগড়ার সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতির সম্পর্কিত কোনও স্মৃতিস্তম্ভ বা শিল্পকর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এই ঘটনার পর, একদল জনতা কাছারিবাড়ির মিলনায়তনে হামলা ও ভাঙচুর চালায় এবং প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারীকে মারধর করে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসন এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি শুক্রবার থেকে দর্শনার্থীদের জন্য পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, নোবেল বিজয়ীর পৈতৃক বাড়িটি বাংলাদেশ সরকারের অধীনে একটি সুরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। প্রতি বছর, দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী মহান কবির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই স্থানটি পরিদর্শন করেন। এতে বলা হয়েছে, রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, কবির ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী সম্প্রতি ২৫ বৈশাখে শিলাইদহ (কুষ্টিয়া), শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) এবং পতিসর (নওগাঁ) এ যথাযথ শ্রদ্ধা ও জাঁকজমকের মধ্য়ে পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারত এই ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং এই হামলাকে কবির স্মৃতি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দর্শনের প্রতি কলঙ্ক বলে অভিহিত করেছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।