দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলন করতে তিনিও রাস্তায় নেমেছিলেন। বাঁধনের সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শুধুই আন্দোলনের টুকরো টুকরো চিত্র উঠে আসবে। ছাত্রদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পথনাটিকা করেছেন, স্লোগান দিয়েছেন আন্দোলনে। কিন্তু এরপর গোটা বাংলাদেশ জুড়ে সোমবার থেকে যে হত্যালীলা, লুটপাট, শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার যে ঘটনাগুলি ঘটে চলেছে, তা দেখে রীতিমতো স্তব্ধ ও ব্যথিত তিনি। যে বাঁধন একসময় ছাত্র আন্দোলনের পাশে ছিল সেই বাঁধনই এখন হিংসা বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছেন। দেশকে শান্ত হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন অভিনেত্রী।
বাংলাদেশের রাস্তায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। মাথায় দেশের পতাকা বেঁধে ছাত্রদের পায়ের সঙ্গে পা মিলিয়েছিলেন বাঁধন। কিন্তু তারপরই গোটা ছবিটাই হঠাৎ করে বদলে গেল। মুক্তির উল্লাস নিমেষে কান্নায় পরিণত হল। নিজের দেশের সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা দেখে বাঁধন রীতিমতো হতবাক। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে লিখলেন, 'এখনই সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ বন্ধ করার ডাক দিচ্ছি। আমি সবাইকে শান্ত থাকার এবং শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করছি। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার খবর গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।
বাঁধন আরও লেখেন, আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন যদি আমাদের হিন্দু ভাই-বোন এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করা হয়। আমরা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু বর্তমান সহিংসতা নিন্দনীয়। এই বিপ্লব অযৌক্তিক আক্রমণের কারণে কলঙ্কিত হতে দেওয়া যাবে না। আমরা প্রতিবাদকারীদের কাছে অনুরোধ করছি, শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন এবং সেনাবাহিনীকে ছাত্রদের সাথে সরাসরি আলোচনা করতে দিন, যারা আবারও আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে। আসুন, আমরা একসাথে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করি। দয়া করে বাড়ি ফিরে যান এবং সকল ধরণের সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করুন।'
এখন বাঁধনের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে ঢুঁ মারলে মন ভাল হয়ে যাবে। একদিকে যখন ভাইরাল হচ্ছে সংসদ ভবন লুঠ করে নিয়ে যাওয়ার ছবি, সেখানে বাঁধনের সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা মিলছে অনেকেই সংসদ ভবনের জিনিস ফেরত দিয়েছেন। অভিনেত্রীর পেজে রয়েছে ছাত্রদের ঝাঁটা হাতে বাংলাদেশের রাস্তা পরিষ্কার করার ছবি-ভিডিও। লুঠের পরে সংসদভবনও পরিষ্কার করেছেন নিজের হাতে। যেখানে গোটা বাংলাদেশ জ্বলছে, সেখানেই বাঁধন তুলে ধরতে চাইছেন টুকরো টুকরো ইতিবাচক ছবি। সেখানে কখনও দেখা যাচ্ছে মুসলিমদের ভারত সেবাশ্রম পাহারা দেওয়ার ছবি আবার কখনও রয়েছে হিংসা প্রত্যাহার করে, দেশকে শান্ত করার ডাক। বাঁধনও চান এই দেশ শান্ত হোক, আবার আগের মতো হিন্দু-মুসলিম সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে থাকবেন।