সোমবার ঢাকার উত্তরা অঞ্চলের মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভেঙে পড়ল বাংলাদেশ বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান। সেদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত প্রায় ১৩ জন। ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উত্তরার ১৭ নম্বর সেক্টর ও সংলগ্ন এলাকায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল ও সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী টিম। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বায়ুসেনার মুখপাত্র জানিয়েছেন, একটি এফ-৭ বিজিআই মডেলের বিমান ভেঙে পড়েছে। রুটিন প্রশিক্ষণের জন্য উড়ছিল। কিন্তু দুপুর ১টা ৬ নাগাদ মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের ভিতরে ভেঙে পড়ে। স্কুলে সেই সময় ক্লাস চলছিল।
স্কুলের এক আধিকারিক জানান, 'প্লেনটি সরাসরি স্কুলের মেন গেটের কাছে ভেঙে পড়ে। ক্লাস চলাকালীনই দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহতদের একে একে বের করে আনা হচ্ছে।'
মুখ্য উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের শোকবার্তা
এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, 'রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে বায়ুসেনার এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় আমি গভীরভাবে মর্মাহত। এই দুর্ঘটনায় যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়।'
তিনি আরও বলেন, 'আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতর ও হাসপাতালকে নির্দেশ দিচ্ছি, যেন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হয়। সরকার ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত করবে। পাশাপাশি সবরকম সাহায্যও করা হবে।'
সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, বিমানটি বাংলাদেশ বায়ুসেনার প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে ঠিক কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পাইলট ইজেক্ট করতে পেরেছিলেন কিনা, সে বিষয়েও এখনও কিছু জানানো হয়নি।
ডেইলি স্টারের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন ১৩ জন আহত হওয়ার খবর মিলেছে। দমকলের আটটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
চোখের সামনে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের কাছে গোটা বিষয়টি তুলে করেন প্রত্যক্ষদর্শী সাদমান রুহসিন। তিনি জানান, 'আমাদের অফিস মাইলস্টোন কলেজের খুব কাছেই। হঠাৎ দেখি একটি যুদ্ধবিমান গিয়ে স্কুল বিল্ডিংয়ে ছুটে এসে ধাক্কা মারল। সঙ্গে সঙ্গে দমকল ও সেনাবাহিনীর লোকেরা ছুটে আসেন। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।' কোনওমতে রিকশা করে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়।
উত্তরা এলাকার এই দুর্ঘটনায় স্থানীরা রীতিমতো আতঙ্কিত। বড়সড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা থাকলেও দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনার কারণ খুঁজতে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে বায়ুসেনা।