বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে সেই দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। আর এই রায়ের বিষয়েই কড়া প্রতিক্রিয়া দিল রাষ্ট্রসঙ্ঘ। ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইটস অফিসের (OHCHR) তরফে হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের নিন্দা করা হয়েছে। আবার ও দিকে যারা 'ভিক্টিম' (যারা জুলাই ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রাণ হারায় বলে অভিযোগ), তাদেরও যথাযথ বিচার দেওয়ার দাবি করে এই সংস্থা। আর এমন পরিস্থিতিতে নতুন সমস্যায় পড়ল বাংলাদেশের ইউনূস সরকার। এরপর তারা কী করে, সেটাই দেখতে চাইছে রাজনৈতিক মহল।
Bangladesh Strike: দলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়েছে, এই রায়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী ও স্বাধীনতা-বিরোধী শক্তি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন মুক্তিযুদ্ধ দেখিয়েছিল, সেই দেশকে দুর্বল করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে অভিযোগ তুলেছে আওয়ামী লীগ।
শেখ হাসিনার ফাঁসি কি কোনও ভাবে রোখা সম্ভব? তিনি এই সাজার বিরুদ্ধে অন্য কোথাও আবেদন জানাতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর সাজা রুখতে ভারতের ভূমিকা কী হবে? ঢাকার হাতেই কি শেষ পর্যন্ত হাসিনাকে তুলে দেবে নয়াদিল্লি?
আসলে বাংলাদেশিদের উপর ভরসা করছে না বহু দেশ। এমনই ইমেজ তাঁরা তৈরি করেছেন বিশ্বে। বিশেষ করে ভিসার অপব্যবহার করে একদেশ থেকে অন্য দেশে গিয়ে বসবাসের অভিযোগও উঠেছে বহু বাংলাদেশির বিরুদ্ধে। তাই বিশ্বাস করা যাচ্ছে না।
আদালতের রায়ের সমালোচনা করে হাসিনার সংযোজন, 'বিশ্বের কোনও পেশাদার আইনবিদ বাংলাদেশের এই আদালত ও তার রায়কে সমর্থন করবে না। কারণ, বাংলাদেশের শেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণ ও আওয়ামি লিগকে বাতিল করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে এই আদালতকে।'
হাতে ছিল মাত্র ৪৫ মিনিট। তার মধ্যেই দেশ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল শেখ হাসিনাকে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল তাঁকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণার দিন ফিরে দেখা গতবছর ৫ অগাস্টের সেই দিন।
শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিল ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। ছাত্র আন্দোলন দমন মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ট্রাইবুনাল। মানবতাবিরোধী অপরাধে তাঁকে দোষী সব্যস্ত করা হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের উপর ব্যাপক হারে দমন-পীড়নের নির্দেশ দেওয়ার ঘটনায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সোমবার ট্রাইবুনালের বিচারক বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে হাসিনা তাঁর ঘনিষ্ঠ শাকিলকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেখানে ২২৬ জন বিক্ষোভকারীকে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান বিচারক। পাশাপাশি হাসিনাকে অবিলম্বে 'উস্কানিমূলক ভাষণ' বন্ধ করতে নির্দেশ দেন বিচারক। ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের আইনজীবীর দাবি, হাসিনার বিরুদ্ধে প্রচুর প্রমাণ রয়েছে। তাঁকে সর্বোচ্চ শাস্তিই দেওয়া হোক। এরপরেই আদালত হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করে।
শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিল ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। ছাত্র আন্দোলন দমন মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ট্রাইবুনাল।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়কে কেন্দ্র করে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে উত্তেজনা। ঢাকায় সোমবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের বাসভবনের সামনে মিরপুর সড়কে এক্সকাভেটর দেখা গিয়েছে। বাসভবনের সামনে বুলডোজার ঢোকানোর চেষ্টা করতেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। লাঠিচার্জ করে নিরাপত্তাবাহিনী।
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এক সতর্কবার্তা দিয়েছেন। রবিবার তিনি সংবাদসংস্থা রয়টার্স কে দেওয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকালে বলেছেন, 'তাঁর দলের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা হলে নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের সমর্থকরা বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করবে। যা হিংসার রূপ নিতে পারে।'
আর কিছুক্ষণের মধ্যেই শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাশের অভিযোগে সাজা দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সেই সাজা ঘোষণার আগেই উত্তেজনা বাংলাদেশে। ৩২ নম্বর ধানমন্ডির দিকে এগোচ্ছে বুলডোজার।