বৃহস্পতিবার ওই ঘটনা ঘটার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর নড়েচড়ে বসল ইউনূস প্রশাসন। বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালীন সরকারের তরফে জানানো হল, ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা এখন আগের চেয়ে অনেকটাই ভাল। নতুন করে কোনও শারীরিক জটিলতা দেখা যায়নি। আগামী ২৫ ডিসেম্বর ১৭ বছরের নির্বাসন জীবন কাটিয়ে বাংলাদেশে ফিরছেন খালেদা জিয়ার পুত্র তারিক রহমান।
'প্রথম আলো'র নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ বলেন, 'কিছু দুর্বৃত্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁদের সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। গত রাতে যখন সাংবাদিকেরা পরদিনের কাগজ ও অনলাইন সংস্করণের কাজে ব্যস্ত ছিলেন, ঠিক তখনই এই দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকে ঘিরে সমাজে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল, তা কাজে লাগিয়েই দুর্বৃত্তরা সংবাদপত্রের ওপর আক্রমণ চালায়। হামলার মুখে সাংবাদিকেরা চরম আতঙ্কে পড়েন এবং প্রাণ বাঁচাতে অফিস ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন।' তিনি আরও বলেন, '১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর ২৭ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল। সাজ্জাদ শরীফ একে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত বলে উল্লেখ করেন এবং দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।'
ঢাকায় হিংসার আঁচ এসে পড়ে বাংলাদেশের দুই জনপ্রিয় সংবাদপত্রের অফিসে। চলে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ। ইতিহাস এই দিনটিকে সংবাদমাধ্যমের জন্য 'কালা দিন' হিসেবে চিহ্নিত করবে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে অশান্তি, উত্তেজনা বাড়তে থাকে। রাস্তায় তাণ্ডব চালানো হামলাকারীরা সংবাদপত্রের অফিসে ঢুকে পড়ে।
শনিবার দুপুর ২টোর সময় ঢাকার পার্লামেন্ট হাউজ বা জাতীয় সংসদ ভবনে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসামান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এমনটাই জানিয়েছে মহম্মদ ইউনূসের দফতর। পাশাপাশি হাদিকে কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশেই আজ কবর দেওয়া হবে বলেও জানা গিয়েছে। কবর দেওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত থাকবেন মহম্মদ ইউনূস বলে খবর।
কট্টরপন্থী নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। হাজার হাজার মানুষ শাহবাগে জড়ো হয়ে তাকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ তুলে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে শুরু করে এবং এবং প্ল্যাকার্ড হাতে রাজপথে নেমে পড়ে। প্রকাশ্যে ভারত-বিরোধী ও শেখ হাসিনা-বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। একই সঙ্গে রাজশাহীতে আওয়ামী লিগের কার্যালয়েও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গিয়েছে। রাজধানীর বাইরে অন্যান্য এলাকাতেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রামে ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনারের উপরও হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রতি মুহূর্তের লাইভ আপডেটের জন্য নজর রাখুন bangla.aajtak.in-এ।
এই ভিডিওগুলো বাংলাদেশের। সে দেশের ছাত্র নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পরই ছড়িয়ে পড়ে হিংসা। কে এই ওসমান হাদি? শরিফ ওসমান হাদি বাংলাদেশে ইসলামি সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক। আসন্ন নির্বাচনে ঢাকার নির্দল প্রার্থী ছিলেন। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পিছনেও ছিল তাঁর ভূমিকা। ভারতবিরোধী কথাবার্তা বলতেন। গত ১২ ডিসেম্বর হাদি ফেসবুকে ভারতের সেভেন সিস্টারকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখিয়ে একটি ছবিও শেয়ার করেছিলেন। সেদিনই তাঁকে গুলিবিদ্ধ হন হাদি। তিনি ছিলেন রিকশায়। মোটরবাইকে এসে গুলি করে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীরা। হাদিকে চিকিৎসার জন্য বিমানে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৮ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর। হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাস্তায় নেমে পড়ে উন্মত্ত জনতা। ওঠে ভারতবিরোধী স্লোগান। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের অফিস ভাঙচুর। অগ্নিসংযোগ। কেন এই হিংসা?
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে হিংসা। হামলা চালানো হল প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের অফিসে। পুড়ে খাক অফিস। আস্ত নেই কিছুই। সেই ধ্বংসস্তূপের সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন বাংলাদেশের জনৈক সাংবাদিক।
দক্ষিণ ত্রিপুরার বেলোনিয়ায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখলেন ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর সি তিওয়ারি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন একাধিক শীর্ষ সেনা আধিকারিক।
একটি মৃত্যু। আর তাতেই জ্বলছে গোটা বাংলাদেশ। আক্ষরিক অর্থেই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে যে হিংসা শুরু হয়েছিল, তার পর থেকে শান্তিতে নেই ভারতের তৈরি করা এই প্রতিবেশী দেশটি। এই মুহূর্তে গোটা বাংলাদেশজুড়ে কট্টরপন্থী মুসলিমদের তাণ্ডব চলছে। ইতিমধ্যেই বহু সরকারি অফিস, বাড়িঘর ভাঙচুর, আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার, এই দুই জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের অফিসে আগুন দিয়েছে উন্মত্ত বিক্ষোভকারীরা। ওসমান হাদি নামে তথাকথিত এক ছাত্রনেতার মৃত্যু ঘিরেই যাবতীয় হিংসা। কে এই ওসমান হাদি? কেন তার মৃত্যুতে জ্বলছে বাংলাদেশ? কী পরিস্থিতি এখন?
ডাঙায় ভারত বিরোধী স্লোগান ও বিক্ষোভের আবহ ছিলই। বাদ গেল না জলভাগও। এ বার সমুদ্রপথেও উস্কানির অভিযোগ উঠল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় জলসীমা লাগোয়া এলাকায় গত কয়েকদিনে ক্রমাগতই বেড়েছে বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের নৌকার অনুপ্রবেশ।